হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা আক্রান্ত গর্ভবতীদের প্রায় অর্ধেকের বিরূপ মাতৃত্বজনিত প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে, প্রিটার্ম ডেলিভারি অর্থাৎ ৩৭ সপ্তাহের আগে সন্তান প্রসব হয়েছে ৭৮.৭৯ শতাংশের, মায়ের গর্ভে সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ১৫.১৫ শতাংশ, অন্যত্র গর্ভধারণ হয়েছে ৪.০৪ শতাংশের।
গর্ভবতী নারী এবং নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর কোভিড-১৯-এর প্রতিক্রিয়া শীর্ষক জাতীয় জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মহাখালী নিপসম অডিটোরিয়ামে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ। এই বিষয়বস্তু নিয়ে এটিই বাংলাদেশে সম্পাদিত প্রথম জাতীয় জরিপ।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, কোভিড পজিটিভ গর্ভবতী ৫৪ শতাংশের স্বাভাবিক প্রসব হলেও ৪৬ শতাংশের মাতৃত্বজনিত প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
কোভিড ১৯ নেগেটিভ গর্ভবতীদের তুলনায় কোভিড ১৯ পজিটিভ গর্ভবতীদের প্রসবকালীন ঝুঁকি দ্বিগুণেরও বেশি। করোনা পজিটিভ গর্ভবতীদের ৮৩ শতাংশের সিজার করতে হয়েছে। নন-কোভিড গর্ভবতীদের তুলনায় তাদের ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি ঝুঁকি ছিলো। নন কোভিড গর্ভবতীদের সিজার করতে হয়েছে ৬৮ শতাংশের।
সাধারণ গর্ভবতীদের তুলনায় কোভিড পজিটিভ গর্ভবতীদের প্রসবজনিত জটিলতা ১.৫ গুন বেশি দেখা গেছে। কোভিড আক্রান্ত শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ গর্ভবতীর মৃত্যু হয়। কোভিড পজিটিভ গর্ভবতীদের মধ্য ৯১.২ শতাংশের লক্ষণ ছিলো। বাকি ৮.৪ শতাংশের কোনো লক্ষণ ছিলো না।
আক্রান্তদের মধ্যে ৭৭.৬ শতাংশের জ্বরের লক্ষণ ছিলো, ৪৩.৯ শতাংশের কাশি, ৩৯.৮ শতাংশের শ্বাস কষ্ট, ৩৭.২ শতাংশ কোনো স্বাদ পেতো না এবং ৩২.৭ শতাংশ গন্ধ পেতো না, ২৬.৫ শতাংশের মাথা ব্যথার লক্ষণ ছিলো।
৮৯০ জনের ওপর এই জরিপ পরিচালিত হয়। এর মধ্যে কোভিড নেগেটিভ ছিলো ৬৭৫ জন, পজিটিভ ২১৫ জন।
২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এ জরিপ চালানো হয়। ঢাকার চারটি সরকারি হাসপাতাল ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া গর্ভবতীদের অতীত রেকর্ড এবং ফোনে কথা বলে পাওয়া তথ্যে মূল্যায়ন করে। জরিপে অংশ নেওয়াদের গড় বয়স ২৬.৩ বছর। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশের বয়স ২৪ থেকে ৩৫ এর মধ্যে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি ও প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রওশন আরা। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লাইন ডাইরেক্টর ডা. মুনশী মো. ছাদুল্লাহ।