হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিতর্কের মুখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি দেশটিতে ঢুকতে দেয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে কানাডার কোনো সরকারি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেনি। দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের একটি ফ্লাইটে টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান মুরাদ হাসান। বিমানবন্দরে কানাডা ইমিগ্রেশন ও বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তারা মুরাদের কাছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চান। ওই সময় তাকে জানানো হয়, অনেক কানাডিয়ান তার দেশটিতে প্রবেশ ও অবস্থান করতে দেওয়া নিয়ে সরকারের কাছে জোর আপত্তি জানিয়েছেন। একপর্যায়ে মুরাদকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেয় কানাডার ইমিগ্রেশন ও বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির কর্মকর্তারা।
দেশ ছাড়ার সময় মুরাদ হাসানের পরনে ছিল কালো রঙের ব্লেজার, টি–শার্ট, মাথায় কালো ক্যাপ, মুখে কালো মাস্ক ও জিনস প্যান্ট। তবে তার কোনো সফরসঙ্গী ছিল না।
ফেসবুকে লাইভ অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়েকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য করেন মুরাদ হাসান।
এরপরই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়। সেখানে মাহির সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন তিনি। এমনকি মাহিকে ধর্ষণ এবং উঠিয়ে আনার হুমকি দেন। তখন ফোনে চিত্রনায়ক ইমনকে প্রতিমন্ত্রী বলছিলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে যান।
সেই অডিও ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মুরাদ হাসান। পরে তাকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ৭ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। ওইদিন রাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
একই দিন সন্ধ্যায় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে জেলা আওয়ামী লীগ। ওই সুপারিশ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে পাঠানো হয়।
এসব ঘটনার পর ক্ষমা চান মুরাদ হাসান। তিনি ফেসবুকে লিখেন, ‘আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দেবেন।’