হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাতক্ষীরায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে হাত-পা হারানো শিশু রাকিবুজ্জামানের চিকিৎসায় দুই কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা প্রয়োজন বলে প্রতিবেদন দিয়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।
হাইকোর্টের নির্দেশে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার কার্যালয়ে গতকাল বুধবার জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু রাকিবের এখন বয়স সাত বছর ছয় মাস। ২০২১ সাল থেকে ২০৮৩ সাল পর্যন্ত তার সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা। ২৫ বছর বয়সে তাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানি অথবা ভিয়েতনাম নিতে হবে। এর মধ্যে চিকিৎসা ও ভরণপোষণ খরচ এবং জার্মানি অথবা ভিয়েতনাম নেওয়ার খরচও অন্তর্ভুক্ত।
এতে আরও বলা হয়, ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২০ এভাবে ৫০, ৫৫, ৬৫ এবং ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং চলতি ২০২১, ২০২৩, ২০২৫, ২০২৭, ২০২৯ সাল থেকে ২০৬৮, ২০৭৩, ২০৭৮ এবং ২০৮৩ সাল পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। সব মিলিয়ে এই সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে।
গত ৮ নভেম্বর শিশু রাকিবুজ্জামানের চিকিৎসায় কত খরচ হবে তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। তার কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে এবং কত টাকা খরচ হতে পারে তার একটি সম্ভাব্য খরচের তথ্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটকে জানাতে বলা হয়েছিল। তারই আলোকে এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
পাশাপাশি অঙ্গ হারানো শিশু রাকিবুজ্জামানের গ্রামের বাড়ির ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন করা বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ দেওয়ার জন্য সেখানকার অফিসের প্রতি নির্দেশ দেন আদালত। বিষয়টি বিশেষ বার্তায় বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের জানাতে বলা হয়েছিল।
গত মার্চে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নকশা পরিবর্তন ও বিধিবহির্ভূতভাবে আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতল বাসবভনের ওপর দিয়ে ক্যাপ ও কাভারবিহীন বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করে। এই লাইনে সংযোগ না দিতে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর আবেদনও করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। পরে গত ৯ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর সাত বছরের শিশুপুত্র রাকিবুজ্জামান ওই বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয় এবং এতে তার শরীর ঝলসে হাড়-মাংস খসে পড়ে।
রাকিবুজ্জামানকে তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ মে রাকিবুজ্জামানের ডান হাত ও ডান পায় হাঁটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২৫ মে আব্দুর আব্দুর রাজ্জাক ঢালী সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ক্ষতিপূরণসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিবাদীরা ক্ষতিপূরণ দেননি এবং অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেননি। তাই গত ৭ নভেম্বর আব্দুর রাজ্জাক ঢালী শত কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন।