প্রস্তুত লড়াইয়ের মঞ্চ কলকাতার ইডেন গার্ডেন। স্বপ্নপূরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা থেকে মাত্র এক হাত দূরে উভয় দলই। ৩ এপ্রিল ফাইনালে মুখোমুখি হবে সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রবিরাতের এই ম্যাচে ফেভারিট তকমা ছুড়ে দেয়া নিঃসন্দেহে কঠিন। টুর্নামেন্টের প্রান্তসীমায় এসে দু’দলেরই সাফল্য-ব্যর্থতার চিত্র প্রায় একই সুতোয় গাঁথা। ফাইনালের রথযাত্রায় উভয় দলই হেরেছে একটি ম্যাচে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য পচা শামুকে পা কেটেছে। আইসিসির সহযোগি সদস্য দেশ আফগানিস্তানের কাছে হোঁচট খেয়েছে সুপার টেনের ম্যাচে। অবশ্য আফগান রূপকথায় বড় কোনো ক্ষতি হয়নি ক্যারিবীয়দের। অপ্রত্যাশিত ওই হারে যা একটু আত্মবিশ্বাসে চির ধরিছেল। সেটা আবার ভারতকে হারিয়ে পুষিয়ে নিয়েছে দ্বীপ কুঞ্জের দেশটি।
ইংল্যান্ড অবশ্য পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। সুপার টেনে ক্রিস গেইলের দানবীয় ইনিংসের কাছে অসহায় আত্নসমর্পণ করেছিল ইংলিশরা। ওই ম্যাচের পর অবশ্যই গেইল আর নিজের ব্যাট হাসাতে পারেননি। কে জানে ফাইনালেই না আবার রুদ্রমূর্তি ধারন করেন ক্যারিবীয় ড্যাশিং ওপেনার!
ইংল্যান্ডের যত দুশ্চিন্তা এই গেইলকে নিয়েই। কিন্তু এটাও মনে রাখা দরকার ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘গেইলে’র অভাব নেই। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষের ম্যাচটাই তো এর জ্বলন্ত প্রমাণ। ৫ রানে গেইল আউট হলেও ক্যারিবীয়দের ফাইনালে যাওয়া আটকাতে পারেননি ভারতীয়রা। লেন্ডল সিমন্স, আন্দ্রে রাসেল, জনসন চার্লস সেদিন হয়ে উঠেছিলেন ভয়ঙ্কর।
বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বাগতিক ভারতের স্বপ্ন চূর্ণ করেছে তাদেরই মাটিতে। ক্যারিবীয়রা শ্মশানের নিস্তব্ধতা এনে দিয়েছিল মুম্বাইসহ গোটা ভারতে। তাই ইংলিশদের রণপরিকল্পনায় শুধু গেইলকে রাখলে চলবে না, সিমন্স-রাসেল-চার্লস সঙ্গে স্যামুয়েলস, সামি, ব্রাভো, রামদিনকে নিয়েও ভাবতে হবে ইংলিশদের। কেননা গেইল না পারলেও তাঁর অভাব পুষিয়ে দিতে যে কোনো সময়ই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলতে পারেন অন্যরা।
নির্দিষ্টভাবে ইংল্যান্ডের উপর গেইল আতঙ্ক ভর করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের তেমন কোনো ভয় নেই। তবে ভাবনার বিষয় আছে জো রুট, অ্যালেক্স হেল্স, জস বাটালার, বেন স্টোক্স, ইয়ন মরগান, মঈন আলীদের নিয়ে। যাঁরা কিনা দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেয়া ২৩০ রানের চ্যালেঞ্জ টপকে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন। শেষ চারে ইংলিশরা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ডের মতো হট ফেভারিট দলের স্বপ্নকে। যে কারণে দলীয় শক্তির বিচারে ক্যারিবীয়দের চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই ইংল্যান্ড।
তাই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা শিরোপা দ্বৈরথটা হবে ‘বাঘে-সিংহে’র। ছেড়ে কথা বলবে না কেউ। অতিথি দল হওয়ায় উপ-মহাদেশের ভেন্যু হিসেবে বাড়তি সুবিধা পাবে না কোনো দলই। অচীন দর্শকের উপস্থিতিতেই লড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড। শেষ অবধি কে হাসবে এই মহারণে? কি হবে ইডেন গার্ডেনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ফাইনালে? উত্তরটা তোলা থাকল ভবিষ্যতের জন্য।