ঢাকা ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ বাংলাদেশ দলের ৫ খেলোয়াড়কে নিয়ে ভারতের গবেষণা শুরু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৯:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০১৫
  • ৪৩৫ বার
আর মাত্র কয়েক দিন পর বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর এটিই ভরতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর। যে সফরের আগে তাদের স্মৃতির মানুষপটে জ্বল জ্বল করবে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে বিতর্কিতভাবে জয়ী হওয়া। ওই ম্যাচটিতে টাইগাররা যে লড়াকু মনোভাব প্রদর্শন করেছে তা যে কোন দলের জন্যই হুমকি স্বরূপ।

শুধু বিশ্বকাপ নয়, এরপর ভাল ও ইতিবাচক খেলার ধারাবাহিকতা রেখে টাইগাররা নিজ মাঠে সফরকারী পাকিস্তানিদের যেভাবে নাকাল করেছে তা অবাক দৃষ্টিতে অবলোকন করেছে সারা বিশ্বের ক্রিকেট অনুরাগীরা। ওডিআই সিরিজে সফরকারী পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে হোয়াইট ওয়াশ করার পর একমাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচেও তাদের পরাজিত করেছে। এরপর প্রথম টেস্টে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ার পরও স্বগতিক বাংলাদেশ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটি ড্র করেছে, সেটিও জায়গা করে নিবে ক্রিকেটের ইতিহাসে। যদিও সিরিজের শেষ টেস্টটি দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

তবে ওই সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটকে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদেরকে আর আন্ডারডগ ভাবার কোন সুযোগ কুলিন দেশগুলোর নেই। এমনই এক পরিস্থিতিতে খর্ব শক্তির দলের পরিবর্তে পূর্নশক্তির ভারতীয় দল আসছে বাংলাদেশ সফরে। কারণ তারা জানে, সামান্যতম ভুলের কারণে অনেক বড় মাশুল দিতে হতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটের পাওয়ার হাউসকে। ফলে তারা কোনভাবেই হাল্কাভাবে নিতে পারছে না প্রতিবেশী রাস্ট্রকে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই টাইগাররা নিজেদের জাত চিনিয়ে দিয়েছিল ভারতীয়দের। যে কারণে শুধু পুর্ন শক্তির দল গঠন করেই নির্ভার থাকতে পারছে না ভারতীয়রা। রিতিমত গবেষণা শুরু করেছে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। কোথায় টাইগারদের শক্তি বেশী, দূর্বল কোথায়, এবং সর্বোপরি কোন পথে এগুলে সহজে ঘায়েল করা যাবে বাংলাদেশকে, সবকিছুই এখন তাদের গবেষণার টেবিলে ওঠে এসেছে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশ দলের পাঁচজন খেলোয়াড়কে চিহ্নিত করেছে খুবই বিপজ্জনক হিসেবে। ভারতীয়দের দৃষ্টিতে বিপজ্জনক টাইগার দলের এই ৫ সদস্য সর্ম্পকে নিচে আলোচনা করা হলো:

১. তামিম ইকবাল: মেধাবি এই তরুন ব্যাটসম্যান সম্পর্কে বাংলাদেশী সমর্থকদের চেয়েও বেশী জানা আছে ভারতীয় সমর্থকদের। যার অসাধারণ ভুমিকার কারণে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০১২ এশিয়া কাপে ভারডুবি ঘটেছিল ভারতীয়দের। বর্তমান সময়ে ব্যাটিংকে দারুনভাবে উপভোগ করছের টাইগার দলের এই বাঁহাতি ওপেনার। সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের ওডিআই ম্যাচে পরপর সেঞ্চুরি হাকানোর পাশাপাশি তামিম টেস্ট ক্রিকেটেও ডাবল সেঞ্চুরি হাকিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন ইতিহাস।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন দারুনভাবে প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের হয়ে তিনি তিন ফর্মেটের ক্রিকেটেই এখন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ক্রিকেটার। ফলে আসন্ন বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় বোলারদেরকে যে তামিমকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। অন্যথায় ভারতীয় বোলারদের অকার্যকর বানিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে এতটুকু কার্পন্য করবেননা তিনি।

২. মুশফিকুর রহিম: সব ফর্মেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় কাটিয়ে দেয়া এই উইকেট রক্ষক বড় একটি স্কোর গড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষ দলকে চাপে ফেলে দেয়ার ক্ষেত্রে খুবই সিদ্ধহস্ত। অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং আগ্রাসি মেজাজের এই ব্যাটসম্যান যে কোন সময় একটি ম্যাচকে প্রতিপক্ষের নাগালের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে সফলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রেখেছেন এই ব্যাটসম্যান। ওই সিরিজে বিধ্বংসি ব্যাট চালিয়ে রান সংগ্রহের গড়কে তিনি পৌছে দিয়েছেন ১১০ রানে।

ভারতীয়দের বিপক্ষে তার রেকর্ডও দুর্দান্ত। যে কারণে সতীর্থরা তাকে ‘রান মেশিন’ হিসেবে ডাকতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ওডিআই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তৃজা।

৩. মাহমুদুল্লা রিয়াদ: অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের সফলতার মুল স্থপতি হচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ক্যারিয়ারের অর্ধেক সময় ধরে ৭নম্বর পজিশনে ব্যাট চালিয়ে আসছেন এই অল রাউন্ডার। যে কারণে এখন ব্যাটিংয়ের জায়গা খুঁজে পেয়েছেন আরো উপরের দিকে। বিশ্বকাপে তার করা পরপর দুটি সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে পৌছে দিয়েছে নকআউট পর্বে। সাহসি টেকনিক এবং নিখুঁত শট নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি এখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিন ফর্মেটের ক্রিকেটের অবিসংবাদিত সদস্য হিসেবে। অত্যন্ত ঠান্ডা এবং শান্ত থেকে শক্ত হাতে মাঠ কাপাতে বেশ পারদর্শী এই অল রাউন্ডার।

ব্যাট ও বলে সমান পারদর্শীতার কারণে মাহমুদুল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতায় অনন্য ভুমিকা রাখতে পারদর্শী। স্বাভাবিক ভাবে তিনি যে ভারতীয় নজরকে এড়িয়ে যেতে পারবেনা সেটি বলাই বাহুল্য।

৪. মোমিনুল হক : বলতে গেলে ক্যারিয়ারের এখনো উষালগ্নে রয়েছেন মোমিনুল হক। জাতীয় দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন মাত্র ১৩টি টেস্টে। টাইগার দলের এই নতুন প্রতিভা এরই মধ্যে নিজের নামটি বসিয়ে নিয়েছেন ক্রিকেটিং রেকর্ড বইয়ে স্থান পাওয়া কিংবদন্তীদের কাতারে। পরপর ১১টি টেস্টে ৫০এর অধিক রান সংগ্রহের মাধ্যমে তিনি স্যাার ভিভিয়ান রিচার্ডের সহাবস্থানে পৌছে গেছেন। শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৬১.৮৫ ব্যাটিং গড় নিয়ে তিনি এখন অবস্থান করছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে। ওই রেকর্ডের শীর্ষে রয়েছেন ক্রিকেট গ্রেট ডন ব্রাডম্যান। খর্ব দৈহিক গড়নের হলেও পেস ও স্পিন বলের মোকাবেলায় সমান পারদর্শী এই ব্যাটসম্যানের উইকেটটির পতন ঘটানো যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য খুবই কঠিন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে যেসব ব্যাটসম্যান এ পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে নিখুঁত টেকনিকের দিক থেকে তাকেই সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশেষ করে লংগার ভার্সনের ক্রিকেটে লড়ার পরিকল্পনায় তাকেও আমলে নিতে হবে সফরকারীদের।

৫. রুবেল হোসেন: ধারবাহিকভাবে ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার বা এর অধিক গতিতে বল করে যাবার ক্ষমতা সম্পন্ন টাইগার দলের পেসার রুবেল হোসেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সফলতার আরেক রুপকার। তার ডান হাতের গতি সম্পন্ন ইয়র্কার বিপাকে ফেলে দিয়েছিল ভারত ও ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের।

টাইগার দলের এই আগ্রাসী বোলার যে কোন সময় হুমকীর মুখে ফেলে দিতে পারে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের, তথা এর মুল স্তম্ভ বিরাট কুহলিকে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই দুই ক্রিকেটারের পারস্পরিক আগ্রাসী চেহারা সবার নজরে পড়েছে। যা প্রমান করে আসন্ন সিরিজেও রুবেল-বিরাট দ্বৈরত উপভোগ করতে পারবে দুই দেশের অগণিত ক্রিকেট সমর্থকরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ বাংলাদেশ দলের ৫ খেলোয়াড়কে নিয়ে ভারতের গবেষণা শুরু

আপডেট টাইম : ০৬:২৯:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০১৫
আর মাত্র কয়েক দিন পর বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর এটিই ভরতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর। যে সফরের আগে তাদের স্মৃতির মানুষপটে জ্বল জ্বল করবে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে বিতর্কিতভাবে জয়ী হওয়া। ওই ম্যাচটিতে টাইগাররা যে লড়াকু মনোভাব প্রদর্শন করেছে তা যে কোন দলের জন্যই হুমকি স্বরূপ।

শুধু বিশ্বকাপ নয়, এরপর ভাল ও ইতিবাচক খেলার ধারাবাহিকতা রেখে টাইগাররা নিজ মাঠে সফরকারী পাকিস্তানিদের যেভাবে নাকাল করেছে তা অবাক দৃষ্টিতে অবলোকন করেছে সারা বিশ্বের ক্রিকেট অনুরাগীরা। ওডিআই সিরিজে সফরকারী পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে হোয়াইট ওয়াশ করার পর একমাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচেও তাদের পরাজিত করেছে। এরপর প্রথম টেস্টে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ার পরও স্বগতিক বাংলাদেশ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটি ড্র করেছে, সেটিও জায়গা করে নিবে ক্রিকেটের ইতিহাসে। যদিও সিরিজের শেষ টেস্টটি দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

তবে ওই সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটকে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদেরকে আর আন্ডারডগ ভাবার কোন সুযোগ কুলিন দেশগুলোর নেই। এমনই এক পরিস্থিতিতে খর্ব শক্তির দলের পরিবর্তে পূর্নশক্তির ভারতীয় দল আসছে বাংলাদেশ সফরে। কারণ তারা জানে, সামান্যতম ভুলের কারণে অনেক বড় মাশুল দিতে হতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটের পাওয়ার হাউসকে। ফলে তারা কোনভাবেই হাল্কাভাবে নিতে পারছে না প্রতিবেশী রাস্ট্রকে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই টাইগাররা নিজেদের জাত চিনিয়ে দিয়েছিল ভারতীয়দের। যে কারণে শুধু পুর্ন শক্তির দল গঠন করেই নির্ভার থাকতে পারছে না ভারতীয়রা। রিতিমত গবেষণা শুরু করেছে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। কোথায় টাইগারদের শক্তি বেশী, দূর্বল কোথায়, এবং সর্বোপরি কোন পথে এগুলে সহজে ঘায়েল করা যাবে বাংলাদেশকে, সবকিছুই এখন তাদের গবেষণার টেবিলে ওঠে এসেছে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশ দলের পাঁচজন খেলোয়াড়কে চিহ্নিত করেছে খুবই বিপজ্জনক হিসেবে। ভারতীয়দের দৃষ্টিতে বিপজ্জনক টাইগার দলের এই ৫ সদস্য সর্ম্পকে নিচে আলোচনা করা হলো:

১. তামিম ইকবাল: মেধাবি এই তরুন ব্যাটসম্যান সম্পর্কে বাংলাদেশী সমর্থকদের চেয়েও বেশী জানা আছে ভারতীয় সমর্থকদের। যার অসাধারণ ভুমিকার কারণে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০১২ এশিয়া কাপে ভারডুবি ঘটেছিল ভারতীয়দের। বর্তমান সময়ে ব্যাটিংকে দারুনভাবে উপভোগ করছের টাইগার দলের এই বাঁহাতি ওপেনার। সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের ওডিআই ম্যাচে পরপর সেঞ্চুরি হাকানোর পাশাপাশি তামিম টেস্ট ক্রিকেটেও ডাবল সেঞ্চুরি হাকিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন ইতিহাস।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন দারুনভাবে প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের হয়ে তিনি তিন ফর্মেটের ক্রিকেটেই এখন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ক্রিকেটার। ফলে আসন্ন বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় বোলারদেরকে যে তামিমকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। অন্যথায় ভারতীয় বোলারদের অকার্যকর বানিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে এতটুকু কার্পন্য করবেননা তিনি।

২. মুশফিকুর রহিম: সব ফর্মেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় কাটিয়ে দেয়া এই উইকেট রক্ষক বড় একটি স্কোর গড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষ দলকে চাপে ফেলে দেয়ার ক্ষেত্রে খুবই সিদ্ধহস্ত। অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং আগ্রাসি মেজাজের এই ব্যাটসম্যান যে কোন সময় একটি ম্যাচকে প্রতিপক্ষের নাগালের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে সফলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রেখেছেন এই ব্যাটসম্যান। ওই সিরিজে বিধ্বংসি ব্যাট চালিয়ে রান সংগ্রহের গড়কে তিনি পৌছে দিয়েছেন ১১০ রানে।

ভারতীয়দের বিপক্ষে তার রেকর্ডও দুর্দান্ত। যে কারণে সতীর্থরা তাকে ‘রান মেশিন’ হিসেবে ডাকতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ওডিআই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তৃজা।

৩. মাহমুদুল্লা রিয়াদ: অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের সফলতার মুল স্থপতি হচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ক্যারিয়ারের অর্ধেক সময় ধরে ৭নম্বর পজিশনে ব্যাট চালিয়ে আসছেন এই অল রাউন্ডার। যে কারণে এখন ব্যাটিংয়ের জায়গা খুঁজে পেয়েছেন আরো উপরের দিকে। বিশ্বকাপে তার করা পরপর দুটি সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে পৌছে দিয়েছে নকআউট পর্বে। সাহসি টেকনিক এবং নিখুঁত শট নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি এখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিন ফর্মেটের ক্রিকেটের অবিসংবাদিত সদস্য হিসেবে। অত্যন্ত ঠান্ডা এবং শান্ত থেকে শক্ত হাতে মাঠ কাপাতে বেশ পারদর্শী এই অল রাউন্ডার।

ব্যাট ও বলে সমান পারদর্শীতার কারণে মাহমুদুল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতায় অনন্য ভুমিকা রাখতে পারদর্শী। স্বাভাবিক ভাবে তিনি যে ভারতীয় নজরকে এড়িয়ে যেতে পারবেনা সেটি বলাই বাহুল্য।

৪. মোমিনুল হক : বলতে গেলে ক্যারিয়ারের এখনো উষালগ্নে রয়েছেন মোমিনুল হক। জাতীয় দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন মাত্র ১৩টি টেস্টে। টাইগার দলের এই নতুন প্রতিভা এরই মধ্যে নিজের নামটি বসিয়ে নিয়েছেন ক্রিকেটিং রেকর্ড বইয়ে স্থান পাওয়া কিংবদন্তীদের কাতারে। পরপর ১১টি টেস্টে ৫০এর অধিক রান সংগ্রহের মাধ্যমে তিনি স্যাার ভিভিয়ান রিচার্ডের সহাবস্থানে পৌছে গেছেন। শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৬১.৮৫ ব্যাটিং গড় নিয়ে তিনি এখন অবস্থান করছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে। ওই রেকর্ডের শীর্ষে রয়েছেন ক্রিকেট গ্রেট ডন ব্রাডম্যান। খর্ব দৈহিক গড়নের হলেও পেস ও স্পিন বলের মোকাবেলায় সমান পারদর্শী এই ব্যাটসম্যানের উইকেটটির পতন ঘটানো যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য খুবই কঠিন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে যেসব ব্যাটসম্যান এ পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে নিখুঁত টেকনিকের দিক থেকে তাকেই সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশেষ করে লংগার ভার্সনের ক্রিকেটে লড়ার পরিকল্পনায় তাকেও আমলে নিতে হবে সফরকারীদের।

৫. রুবেল হোসেন: ধারবাহিকভাবে ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার বা এর অধিক গতিতে বল করে যাবার ক্ষমতা সম্পন্ন টাইগার দলের পেসার রুবেল হোসেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সফলতার আরেক রুপকার। তার ডান হাতের গতি সম্পন্ন ইয়র্কার বিপাকে ফেলে দিয়েছিল ভারত ও ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের।

টাইগার দলের এই আগ্রাসী বোলার যে কোন সময় হুমকীর মুখে ফেলে দিতে পারে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের, তথা এর মুল স্তম্ভ বিরাট কুহলিকে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই দুই ক্রিকেটারের পারস্পরিক আগ্রাসী চেহারা সবার নজরে পড়েছে। যা প্রমান করে আসন্ন সিরিজেও রুবেল-বিরাট দ্বৈরত উপভোগ করতে পারবে দুই দেশের অগণিত ক্রিকেট সমর্থকরা।