বাচ্চা ছাএীরা নিজেরাই নৌকা চালিয়ে স্কুলে এলো

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। কিন্তু স্কুল আঙিনা ও শ্রেণিকক্ষে বন্যার পানি। তাই স্কুলের পাশে এক বাড়িতে ক্লাসের আয়োজন করা হয়। দেড় বছর পর উৎসাহ-উদ্দীপনায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নেয়। এদিকে ক্ষুদে তিন ছাত্রীকে নৌকা চালিয়ে স্কুলে যেতে দেখা যায়।

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনেআরা আক্তার জানান, তিন সপ্তাহ আগে স্কুলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে স্কুলের জমিদাতা নজির হোসেনের বাড়িতে ক্লাস নেয়া হয়েছে। ঘরের মেঝে ও উঠানে চট পেতে ক্লাস নেওয়া হয়। রোববার প্রথম দিনে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস ছিল। দীর্ঘদিন পরে ক্লাসে অংশ নিতে পেরে শিক্ষার্থীরা খুব খুশি।

বাসাইলের সৈয়দামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রীকে নৌকা চালিয়ে স্কুলে যেতে দেখা যায়। ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা আক্তার জানায়, দীর্ঘদিন স্কুলে যাওয়া হয় না। আজ স্কুল খুলেছে। এদিকে বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে। তাই নৌকা নিয়েই তারা স্কুলে গেছে। অনেক দিন পর স্কুলে গিয়ে খুব ভালো লাগছে বলে জানায় হাবিবা আক্তার।

শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফুল বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশ করে। ঢোকার আগে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মাপা হয়।

টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়, শাহীন ক্যাডেট স্কুল, প্রি-ক্যাডেট স্কুল, সৃষ্টি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করে এ চিত্র দেখা যায়।

বিন্দুবাসিনী সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিম জানান, দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীরা খুবই আনন্দিত। উৎসাহ নিয়ে ক্লাসে অংশ নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে ক্লাস নেয়া হবে।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের দুই হাজার ৪২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সশরীরে ক্লাস নেওয়া হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, সারা দেশের সঙ্গে টাঙ্গাইলের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন পর স্কুলে ক্লাস করার সুযোগ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর