ঢাকা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রং বিলাস’ দেখাচ্ছে রঙিন স্বপ্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৭৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরিপুষ্ট হওয়ার পর দেখতে লাল রঙের লম্বা আকৃতির আখ নজর কাড়ে সবার। নাম ‘রং বিলাস’

সীতাকুণ্ডে দুই বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে এই আখ। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

আখ শব্দের উৎপত্তি ‘ইক্ষু’ থেকে। আখ হলো বাঁশ ও ঘাসের জাতভাই। এটি পোয়াসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর রস চিনি ও গুড় তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় ‘কুশ্যাল’।

উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের পাশে নিজের ২৮ শতক জমিতে আখ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষি মো. মনসুর (৫৫)। তিনি  বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আখ চাষ করছি। প্রতিবার চাষে খরচ হয় লাখখানেক টাকা। বিক্রি করা যায় প্রায় ৩ লাখ টাকার আখ।

এছাড়া পৌর সদরের ফকিরহাট, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা ইউনিয়নেও এবছর আখ চাষ হয়েছে। এসব এলাকার জমিতে ‘রং বিলাস’ রঙিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চাষিদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

মুরাদপুর ইউনিয়নের চাষি মো. সুলতান আহমেদ ১৬ শতক জমিতে, আবুল কালাম ১৭ শতক জমিতে এবং মো. জসিম উদ্দিন ৩০ শতক জমিতে ‘রং বিলাস’ চাষ করেছেন। তারা জানান, আশ্বিন মাসে চাষ করার পর মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। এখন আখ পরিপুষ্ট হচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক পর আখ বিক্রি করা যাবে।

জানা গেছে, দুই-তিন বছর ধরে আখের দাম ভালো পাওয়ায় এবার আখচাষির সংখ্যাও বেড়েছে। আগে পোকার কারণে লোকসান হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আখ চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা। পাইকারিতে ১০০ আখ দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

পাইকারদের হাত ধরে আখ চলে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ছোট কুমিরা, বড় কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড ও ভাটিয়ারী বাজারে এক জোড়া মাঝারি আখ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও বড় আখের জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। এই আখ বেশ সুমিষ্ট।

সীতাকুণ্ড কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, মুরাদপুর ইউনিয়নে চাষিরা আগে বিভিন্ন জাতের আখ চাষ করতেন। গত বছর থেকে ‘রং বিলাস’ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এ বছর অনেক চাষি এই আখ চাষ করেছেন। ফকিরহাট ইকোপার্ক ও মুরাদপুরে ৩০-৩৫ জন চাষি ‘রং বিলাস’ আখ চাষ করেছেন।

স্থানীয় ঢালীপাড়া গ্রামের চাষি মো. আলাউদ্দিন ইকোপার্ক এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে ৬৬ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। জমিতে সেচের পানি দিতে গিয়ে খরচ বেড়েছে তার। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ গভীর নলকূপ বসালে কষ্টটা কমতো। এবার জমি থেকে আড়াই লাখ টাকার বেশি আখ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে কৃষকেরা আখ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আখ চাষ ক্রমে বাড়ছে। দক্ষতা, পরিচর্যা, সঠিকভাবে সার ও কীটনাশক প্রয়োগে আখের ফলন ভালো হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রং বিলাস’ দেখাচ্ছে রঙিন স্বপ্ন

আপডেট টাইম : ০৩:১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরিপুষ্ট হওয়ার পর দেখতে লাল রঙের লম্বা আকৃতির আখ নজর কাড়ে সবার। নাম ‘রং বিলাস’

সীতাকুণ্ডে দুই বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে এই আখ। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

আখ শব্দের উৎপত্তি ‘ইক্ষু’ থেকে। আখ হলো বাঁশ ও ঘাসের জাতভাই। এটি পোয়াসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর রস চিনি ও গুড় তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় ‘কুশ্যাল’।

উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের পাশে নিজের ২৮ শতক জমিতে আখ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষি মো. মনসুর (৫৫)। তিনি  বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আখ চাষ করছি। প্রতিবার চাষে খরচ হয় লাখখানেক টাকা। বিক্রি করা যায় প্রায় ৩ লাখ টাকার আখ।

এছাড়া পৌর সদরের ফকিরহাট, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা ইউনিয়নেও এবছর আখ চাষ হয়েছে। এসব এলাকার জমিতে ‘রং বিলাস’ রঙিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চাষিদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

মুরাদপুর ইউনিয়নের চাষি মো. সুলতান আহমেদ ১৬ শতক জমিতে, আবুল কালাম ১৭ শতক জমিতে এবং মো. জসিম উদ্দিন ৩০ শতক জমিতে ‘রং বিলাস’ চাষ করেছেন। তারা জানান, আশ্বিন মাসে চাষ করার পর মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। এখন আখ পরিপুষ্ট হচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক পর আখ বিক্রি করা যাবে।

জানা গেছে, দুই-তিন বছর ধরে আখের দাম ভালো পাওয়ায় এবার আখচাষির সংখ্যাও বেড়েছে। আগে পোকার কারণে লোকসান হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আখ চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা। পাইকারিতে ১০০ আখ দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

পাইকারদের হাত ধরে আখ চলে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ছোট কুমিরা, বড় কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড ও ভাটিয়ারী বাজারে এক জোড়া মাঝারি আখ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও বড় আখের জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। এই আখ বেশ সুমিষ্ট।

সীতাকুণ্ড কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, মুরাদপুর ইউনিয়নে চাষিরা আগে বিভিন্ন জাতের আখ চাষ করতেন। গত বছর থেকে ‘রং বিলাস’ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এ বছর অনেক চাষি এই আখ চাষ করেছেন। ফকিরহাট ইকোপার্ক ও মুরাদপুরে ৩০-৩৫ জন চাষি ‘রং বিলাস’ আখ চাষ করেছেন।

স্থানীয় ঢালীপাড়া গ্রামের চাষি মো. আলাউদ্দিন ইকোপার্ক এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে ৬৬ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। জমিতে সেচের পানি দিতে গিয়ে খরচ বেড়েছে তার। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ গভীর নলকূপ বসালে কষ্টটা কমতো। এবার জমি থেকে আড়াই লাখ টাকার বেশি আখ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে কৃষকেরা আখ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আখ চাষ ক্রমে বাড়ছে। দক্ষতা, পরিচর্যা, সঠিকভাবে সার ও কীটনাশক প্রয়োগে আখের ফলন ভালো হয়।