কমেছে পাসের হার, তবুও দেশ সেরা রাজশাহী

গত বছরের চেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার কমেছে। কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও। তা সত্ত্বেও পাসের হারের দিক দিয়ে এবছর দেশ সেরা হয়েছে রাজশাহী বোর্ড। এবারে রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিলো ৯৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এবার এ বোর্ডে দুই হাজার ২হাজার ৫৮৮টি স্কুলের এক লাখ ২৮ হাজার ৩০৩জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার ৫২০জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে পাশ করেছে এক লাখ ২১হাজার ১০৮ জন শিক্ষার্থী। এবার ৯৬৯টি স্কুল শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করার গৌরব অর্জন করেছে। গতবার এ সংখ্যা ছিলো ১ হাজার ৫৫টি।
এবারো পাসের হারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। তাদের পাসের হার ৯৫ দশমিক ০৯ শতাংশ। আর ছেলেদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এবারো এগিয়ে ছেলেরা। এবার  মোট ১৫ হাজার ৮৭৩ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরমধ্যে ৮ হাজার ৬১২জন ছাত্র এবং ৭ হাজার ২৬১ জন ছাত্রী। গতবার ১৫ হাজার ৮৭৩ জনের মধ্যে ১০ হাজার ৮২৫জন ছাত্র ও ৮ হাজার ৯৯০জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পায়।
রাজশাহী বোর্ডের সেরা ২০-এ বগুড়ার ৭ ও রাজশাহীর ৫ স্কুল
এবারের ফলাফলে বোর্ডের সেরা ২০টি স্কুলের মধ্যে রয়েছে বগুড়ারই রয়েছে সাতটি।  ওই তালিকায় শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহীর রয়েছে ৫টি স্কুল। এর মধ্যে একটি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে।
এসএসসি ফলাফলের দিক থেকে গত বারেরমত রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সেরাদেরা সেরা হয়েছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল। এ স্কুল থেকে  ৩৪২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ন হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২০। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯৩ দশমিক ১৯।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বগুড়ার আরেক খ্যাত নামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বগুড়া জিলা স্কুল। গতবারের তৃতীয়স্থানে থাকা এ স্কুল থেকে এবার ২৪২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১৯জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯১ দশমিক ০৭।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে গতবারের অষ্টম স্থানে থাকা রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ। এ স্কুল থেকে ৫৬জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯১ দশমিক ০০।
গতবারের সপ্তম স্থানে থাকা রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে এবার হয়েছে চতুর্থ। এ বছর এ স্কুলটি থেকে ২৫৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২২জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯০ দশমিক ৬৯।
তিন ধাপ নিচে নেমে গতবারের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বগুড়ার আরেক স্কুল বগুড়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবার রয়েছে পঞ্চম অবস্থানে। এ স্কুল থেকে ২৫৮জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২১জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯০ দশমিক ৬১।
বোর্ড সেরাদের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে পাবনা ক্যাডেট কলেজ। গত বছরের নবম স্থানে থাকা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে এবার ৪৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। পাসের হার শতভাগ। এমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮ জনই। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯০ দশমিক ০০।
গত বারের ১২ তম স্থানে থাকা রাজশাহী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবার রয়েছে সপ্তম স্থানে। এ স্কুল থেকে ১৫০জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ন হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩২ জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৯ দশমিক ৩৪।
বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবার বোর্ডের সেরাদের তালিকায় রয়েছে অষ্টম অবস্থানে। গত বছরের ষষ্ঠ স্থানে থাকা এ স্কুল থেকে এবার ২৭৭জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২৫জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৮ দশমিক ৮৫।
বোর্ডের সেরাদের তালিকায় দশম অবস্থানে রয়েছে বগুড়ার এসওএস হারম্যান গ্রামিনার কলেজ। গত বছর ১৪ তম স্থানে থাকা এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৪৬জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৮ দশমিক ৩০।
রাজশাহী সরকারী ল্যাবরেটরি হাইস্কুল বোর্ডের সেরাদের তালিকায় রয়েছে ১১তম। গত বছরের পঞ্চম  স্থানে থাকা  এবারে স্কুলটি থেকে ১২৪জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। পাসের হার শতভাগ। এমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৮ জন। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৮ দশমিক ০৫।
পাবনা জিলা স্কুল এবার রয়েছে ১২ তম স্থানে। গতবার একাদশ স্থানে থাকা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২৫২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯৫জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৭ দশমিক ৮২।
চতুর্থ স্থানে রয়েছে নওগাঁ সরকারী কেডি উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুল থেকে ২০৭জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯৬জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯২ দশমিক ২৫।
বোর্ডের সেরাদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে উঠে  এসেছে রাজশাহী সরকারী ল্যাবরেটরি হাইস্কুল। এবারে স্কুলটি থেকে মোট ১০৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। পাসের হার শতভাগ। এমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৭ জন। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯১ দশমিক ৭১।
বোর্ডের সেরাদের তালিকায় ১৩তম স্থানে রয়েছে নওগাঁ সরকারী কেডি হাইস্কুল। এখান থেকে ২২৭জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮৪জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৭ দশমিক ৬৯।
বগুড়ার পলি¬ উন্নয়ন একাডেমী ল্যাবরেটরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ বোর্ডের সেরাদের তালিকায় রয়েছে ১৫তম অবস্থানে। এখান থেকে ১৩৫জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৩জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৫ দশমিক ৮১।
১৫ তম অবস্থানে রয়েছে বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয় পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত বছরের দশম স্থানে থাকা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৯৮জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬২জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৫ দশমিক ৩৫।
১৬ তম অবস্থানে থাকা পাবনার সরকারী গার্লস হাইস্কুল থেকে ২৫৬ জন এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। উত্তীর্ণ হয়েছে ২৫৪জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৩জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৪ দশমিক ৬৮।
বোর্ড সেরাদের মধ্যে ১৭ তম স্থানে রয়েছে সিরাজগঞ্জের মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল। এবারে স্কুলটি থেকে মোট ২০০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। উত্তীর্ণ হয়েছে ১৯৮। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৫ জনই। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৩ দশমিক ৫৬।
১৮ তম স্থানে থাকা পাবনার আলহেরা একাডেমী থেকে ১১৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৬জন। এ স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৩ দশমিক ৩৩।
বোর্ড সেরাদের মধ্যে ১৯তম স্থানে রয়েছে জয়পুরহাটের আরবি সরকারী হাইস্কুল। এবারে স্কুলটি থেকে ২২৯জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এরমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২২৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৬ জনই। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৩ দশমিক ২১।
২০তম স্থানে রয়েছে নাটোরের কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল। এবারে স্কুলটি থেকে মোট ৯৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। পাসের হার শতভাগ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭১ জনই। এ স্কুলটির প্রাপ্ত পয়েন্ট ৮৩ দশমিক ১৮।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর