দড়ি লাফে জোড়া বিশ্ব রেকর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেলের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দড়ি লাফে জোড়া বিশ্ব রেকর্ড করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেল ইসলাম। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছে তার। এতে প্রশংসায় ভাসছেন রাসেল। এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন তাকে দেখতে আসছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের সিরজাপাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে ১৮ বছর বয়সী রাসেল ইসলাম। তিনি শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, স্কুলজীবন থেকেই রাসেলের ইচ্ছা ছিল এক সময় দড়ি লাফে বিশ্ব রেকর্ড করার। সেই চিন্তা থেকেই ২০১৭ সাল থেকে তিনি শুরু করেন দড়ি লাফের চর্চা। বাসার আশপাশে বিভিন্ন সড়কের ধারে যখন যেখানে সময় পেয়েছেন সেখানেই প্রতিনিয়ত দড়ি লাফের চর্চা করে গেছেন।

অবশেষে নিজেকে এই খেলায় পরিপূর্ণ মনে হলে, ২০১৯ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করেন রাসেল। দড়ি লাফের ওপর দুটি বিষয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করেন। একটি ৩০ সেকেন্ডের, অন্যটি ১ মিনিটের। দুটিতেই নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

এক পায়ে ৩০ সেকেন্ড দড়ি লাফে আগের বিশ্ব রেকর্ড ছিল ১৪৪ বার লাফানোর। সেটি ভেঙে রাসেল করেছেন ১৪৫ বার লাফানোর রেকর্ড।। আর ১ মিনিটে এক পায়ে ২৫৬ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও, তা ভেঙে দিয়ে রাসেল পেরেছেন ২৫৮ বার। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদপত্র হাতে পেয়েছেন রাসেল।

jagonews24

রাসেলের বাবা বজলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলে একটি দড়ি নিয়ে লাফাত। তাকে বলতাম, এসব করে কী হবে বাবা? সে আমাকে বলত, আব্বা আমি একদিন এই খেলা দিয়েই তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করব। আজ সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সত্যি তার এই উপহার আমরা কখনও ভুলব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবা হয়ে আমি আমার সন্তানকে তেমন কোনো কিছু দিতে পারিনি। তবে সে আমাদের দিয়েছে। আজ সকলের মুখে আমার ছেলের নাম। আমি শুধু আমার ছেলেকে সাহস দিয়েছিলাম। এই সাহস নিয়েই এগিয়ে গেছে আমার ছেলে।’

দড়ি লাফে বিশ্ব রেকর্ড করা রাসেল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দড়ি লাফ আমার ছোটবেলার স্বপ্ন। ইন্টারনেটে দড়ি লাফের ওপর ভিডিও দেখতাম, বিশ্ব রেকর্ডে নজরে রাখতাম। সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি প্রতিনিয়ত চর্চা করে যাই। পড়াশোনার পাশাপাশি যখন যেখানে সময় পেতাম সেখানেই চর্চা করতাম।’

রাসেল আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন চর্চার পরে যখন দেখলাম, সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করতে পারব, তখন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জিং আবেদন করি। এরপর সেখান থেকে আমাকে তিন মাস পরে কিছু গাইডলাইনসহ একটি রিপ্লাই দেওয়া হয়। সেখানে তারা তাদের নিয়ম মতো কিছু ভিডিও চায় আমার কাছে। সেই সঙ্গে কীভাবে সেগুলো করতে হবে তারও বিস্তারিত দেওয়া হয়।’

‘এরপর আমি কিছুদিন আরও মনোযোগ দিয়ে সেই কাজগুলো করে তাদের পঠিয়ে দেই। অবশেষে আমি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করি। যার জন্য আমাকে দুটি সনদপত্র দেওয়া হয়। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার মেধাকে গুরুত্ব দিয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর