যৌক্তিক কারণ ছাড়া ব্যাংক কর্মকর্তাদের ছাঁটাই বন্ধ ও ব্যাংকিং সময়সূচির পরে কর্মীদের ব্যাংকে থাকা বাধ্যতামূলক না করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে নারী কর্মীদের সন্ধ্যা ৬টার পর না রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে তা পাঠানো হয়েছে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংক কোন ধরনের কারণ ছাড়াই কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করছে। অনেক সময় কোন কর্মকর্তা অন্য ব্যাংকে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পদত্যাগপত্র দিলে তা গ্রহণ না করে কোন একটি কারণ দেখিয়ে তাকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। এর ফলে চাকরি-পরবর্তী সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কর্মকর্তারা। এতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া ব্যাংকের সময়সূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অফিস করার কথা থাকলেও বাড়তি কাজের জন্য তাদের অনেক বেশি সময় ধরে ব্যাংকে রাখা হয়। অনেক সময় নারী কর্মকর্তাদের রেখে নানা হয়রানির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অভিযোগ এসেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ব্যাংকিং সময়সূচির পরে কার্যদিবস শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ করে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাংকে অবস্থানের জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। তা ছাড়া, তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চাকরিতে ইস্তফা, অযৌক্তিক বরখাস্ত বা অপসারণ এবং পরবর্তী আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তিতে হয়রানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে, যা সুষ্ঠু মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অন্তরায়। এখন এ মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ব্যাংকিং সময়সূচির পরে অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টার পরে কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ করে নারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের ব্যাংকে অবস্থানের জন্য বাধ্য করা যাবে না। বিশেষ প্রয়োজনে যদি কোন নারী কর্মীকে ব্যাংকিং সময়সূচির পরেও ব্যাংকে অবস্থান করতে হয় তবে তাদের উপযুক্ত নিরাপত্তা ও পারিশ্রমিক দিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে ইচ্ছামাফিক ঢালাওভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। নিয়োগের সময় পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রার্থী যাচাই-বাছাই করতে হবে। নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের চাকরিতে ইস্তফা, চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণ এবং পরবর্তী আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমিক আইন, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ ও সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।