৭ বিঘা জমিতে আবদুল মতিনের স্বপ্ন

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সৈয়দ আবদুল মতিন শেষ বয়সে কৃষিকাজ করবেন তার আত্মীয়-স্বজন কোনোদিন কল্পনাও করেননি। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর অধিকাংশ মানুষের জীবন কাটে ঘরে বসে। কিন্তু খুলনার অবসরপ্রাপ্ত উপ-কৃষি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে ভিন্ন উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে।

খুলনা-মংলা বন্দর মহাসড়ক দিয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার এগোলে ভরসাপুর বাজার। সেখান থেকে মংলার দিকে কিছুদূর এগোলেই চোখে পড়বে রাস্তার বাম পাশে ফিউচার অর্গানিক ফার্মের সাইনবোর্ড। ৭ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত ফার্মে ৩ জাতের ধান, ১৪ রকমের সবজি, ৬ জাতের ফল এবং ৪ জাতের শাকের চাষ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ চাষের ব্যবস্থাও রয়েছে।

আবদুল মতিন রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করেন না কোনো গাছেই। পোকামাকড় দমন করেন মেহগনির বীজ থেকে তৈরি তেল দিয়ে। সার হিসেবেও ব্যবহার করেন মেহগনি বীজের গুঁড়া। তিনি মেহগনির পাতার নির্যাস থেকে তৈরি করেছেন একধরনের পানীয়। খুলনা শহরে বাস করলেও তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে ফার্মে আসেন। বৃদ্ধ বয়সেও এ কাজে তার কোনো ক্লান্তি নেই।

আবদুল মতিনের দুই ছেলেমেয়ে। তারাও বাবার এই অক্লান্ত প্রয়াসে বিস্মিত। ইচ্ছে করলে সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা চাকরির মেয়াদ আরো দু’বছর বাড়াতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। অবসরের এককালীন টাকা দিয়ে ৩ বিঘা জমি কিনে ফার্মের কাজ শুরু করেন ২০০৪ সালে। পরে বাবার ইচ্ছেপূরণে আরো ৪ বিঘা জমি কিনতে সহযোগিতা করেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেয়ে।

আবদুল মতিন জানান, ফার্মে হারিয়ে যাওয়া দেশি ফলের চাষ করবেন তিনি। পুকুরে থাকবে দেশি মাছ। তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য ফার্মটিকে কাজে লাগাতে চান তিনি।

আবদুল মতিনের মেহগনির ফল থেকে তৈরি তেল রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি ভেষজ পানীয় এবং জৈব সারের স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০১৩ সালে। তার তৈরি জৈব বালাইনাশকের মেধাস্বত্বের প্রাথমিক স্বীকৃতিও তিনি পেয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর