কাজের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশি নারীদেরকে সিরিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
দেশ থেকে গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার কথা বলে এসব নারীকে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আইএসের কাছে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছে পাচারকারী চক্রের হোতারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসে বাংলাদেশের অন্তত ৮০ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। এদের অধিকাংশই আরব দেশগুলোতে গৃহকর্মী ও নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীকে জর্ডান ও লেবাননের মতো দেশগুলোতে পাঠানোর কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর এসব নারী কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে কোনো পরিষ্কার তথ্য নেই।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, গত বছর যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়ায় পাচার হওয়া নারীদের কাছ থেকে ৪৫টি অভিযোগ পেয়েছেন। এসব নারী নির্যাতন, পিটুনি এবং ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
র্যাব-৩ এর কমান্ডার খন্দকার গোলাম সরোয়ার বলেন, শাহিনুর নামের একজন নারী সিরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছেন। ওই নারী তার মায়ের সাহায্যে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। শাহিনুরকে দুবাইয়ে পাঠানোর কথা থাকলেও তাকে সহ আরো পাঁচ নারীকে দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সিরিয়ায় তাকে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করা হয়। সেখানে কিছু সময় গৃহকর্মী ও কিছু সময় যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাকে। সিরিয়ায় এ রকম আরো অনেক নারী যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন বলে তিনি জানান।
সারোয়ার জানান, ৩৪ বছর বয়সী ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং চলাফেরা করতে পারছিলেন না। পরে সিরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি কর্মকর্তারা ওই নারীকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনেন। পরে সেখানে তার কিডনি জটিলতার চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত সপ্তাহে সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীদের ধরতে দেশে ব্যাপক অভিযান চালায় র্যাব। তবে সিরিয়ায় নারী পাচারকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।