নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য শুনে মাথা নেড়ে হাসলেন নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। এ সময় কাঠগড়ায় তার পেছনে ছিলেন র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা তারেক, রানা ও আরিফ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে সাক্ষ্য দেন বিউটি।
বাদীর কাঠগড়া থেকে আসামিদের কাঠগড়ার দূরত্ব মাত্র ১৫ ফুট। এত অল্প দূরত্ব থাকলেও বিউটি একবারের জন্যও আসামিদের দিকে তাকাননি।
কিন্তু নূর হোসেন খুব মনোযোগ দিয়ে বিউটির দিকে তাকিয়ে সাক্ষ্য শুনেন। মাঝে মাঝে মাথা নেড়ে হেসে উঠেন। আবার যখন শুনতে পাননি তখন উচ্চ স্বরে বলে উঠেন, আমরা শুনতে পাই না। একটু উচ্চ স্বরে বললে ভালো হয়।
বিউটির সাক্ষ্য শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বিউটিকে জেরা করার জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করে ১০ মার্চ জেরার জন্য সময় নির্ধারন করেন। অন্যদিকে অপর বাদী বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে ৭ মার্চ।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, প্রকাশ্য আদালতে সাংবাদিকদের উপস্থিতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষগ্রহণের শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।
সাক্ষ্য দেয়া শেষে সেলিনা ইসলাম বিউটি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এজাহারে আমি যা যা লিখেছি তার বর্ণনা দিয়েছি। আমি সাত খুনের খুনিদের ফাঁসি চাই।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন।
৩০ এপ্রিল বিকালে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জন এবং ১ মে সকালে অপরজনের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের শ্বশুর ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাব তাদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন।
পরে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও নিহত চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় পাল পৃথক মামলা করেন।
সাত খুনের ঘটনার পর ত্রাণমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা তারেক সাঈদ ও তার অধীনস্থদের বিরুদ্ধে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
পরে আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের বছরের ১৬ মে রাতে তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেন এবং ১৭ মে এম এম রানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।