ঢাকা ০৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জের হাওর দেশের অন্যতম মৎস্য ভান্ডার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুন ২০২১
  • ১৫০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত কিশোরগঞ্জ হাওর নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ডোবা ও জলাশয় থেকে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। গত ৩০-৪০ বছরের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক সময় হাওরের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে যায়। তখন ধান পচে পানি দূষিত হয়ে পড়লে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় হাওরের মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যায়। মড়ক ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, এবার প্রাকৃতিক দৈনতায় বা বর্ষা না আসার দরুন মাছের ডিম ছাড়তে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস, সরপুটি মাছ ছাড়ার অনুমতি আছে। ১৯টি বিল নার্সারী হচ্ছে যেখানে এক থেকে দেড় মাস মাছের পোনা লালন পালন করে বিলে ছাড়া হবে। জেলেদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
হাওরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা ও তীরবর্তী মানুষের দাবি, হাওরে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য অভয়াশ্রমের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তাতে হাওর তীরের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষের মাছের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে হাওরের মাছ। তবে তার আগে হাওর খেকো অসাধুচক্রের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রকৃত জেলেদের মধ্যে জলমহাল ইজারা দিতে হবে।

 

মৎস্য সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতীকী নাম ব্যবহার করে এক শ্রেণির অসাধু লোক জলমহাল ইজারা নিয়ে আড়ালে জলমহালের সুবিধা ভোগ করে। অর্থ প্রদান করে জলমহালের মালিক বনে যায়। এতে প্রকৃত জেলেরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হন। বৈশাখ মাস থেকে আষাঢ় মাস এই তিন মাস প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারলে অনেকাংশে মাছের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে। মৎস্য আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, এটি জোরদার করতে হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য আইন বাস্তবায়ন করছি। অভায়াশ্রম স্থাপন করা জরুরি। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। জলমহাল প্রকৃত জেলেরা অর্থাৎ নিবন্ধিত জেলেরা পাচ্ছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত করি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, জেলা প্রশাসনের আলাদাভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। হাওর জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড রয়েছে। এ কাজটা তারা করছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় হাওরের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সঠিক পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সমিতি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকৃত জেলেরা জলমহাল ইজারা পাচ্ছে কি না জিজ্ঞেস করলে জেলা প্রশাসক জানান, শতভাগ প্রকৃত জেলেরাই জলমহাল ইজারা পাচ্ছে। জলমহাল নিয়ে সরকার যে নীতিমালা করেছে সেখানে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জের হাওর দেশের অন্যতম মৎস্য ভান্ডার

আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত কিশোরগঞ্জ হাওর নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ডোবা ও জলাশয় থেকে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। গত ৩০-৪০ বছরের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক সময় হাওরের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে যায়। তখন ধান পচে পানি দূষিত হয়ে পড়লে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় হাওরের মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যায়। মড়ক ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, এবার প্রাকৃতিক দৈনতায় বা বর্ষা না আসার দরুন মাছের ডিম ছাড়তে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস, সরপুটি মাছ ছাড়ার অনুমতি আছে। ১৯টি বিল নার্সারী হচ্ছে যেখানে এক থেকে দেড় মাস মাছের পোনা লালন পালন করে বিলে ছাড়া হবে। জেলেদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
হাওরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা ও তীরবর্তী মানুষের দাবি, হাওরে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য অভয়াশ্রমের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তাতে হাওর তীরের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষের মাছের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে হাওরের মাছ। তবে তার আগে হাওর খেকো অসাধুচক্রের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রকৃত জেলেদের মধ্যে জলমহাল ইজারা দিতে হবে।

 

মৎস্য সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতীকী নাম ব্যবহার করে এক শ্রেণির অসাধু লোক জলমহাল ইজারা নিয়ে আড়ালে জলমহালের সুবিধা ভোগ করে। অর্থ প্রদান করে জলমহালের মালিক বনে যায়। এতে প্রকৃত জেলেরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হন। বৈশাখ মাস থেকে আষাঢ় মাস এই তিন মাস প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারলে অনেকাংশে মাছের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে। মৎস্য আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, এটি জোরদার করতে হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য আইন বাস্তবায়ন করছি। অভায়াশ্রম স্থাপন করা জরুরি। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। জলমহাল প্রকৃত জেলেরা অর্থাৎ নিবন্ধিত জেলেরা পাচ্ছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত করি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, জেলা প্রশাসনের আলাদাভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। হাওর জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড রয়েছে। এ কাজটা তারা করছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় হাওরের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সঠিক পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সমিতি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকৃত জেলেরা জলমহাল ইজারা পাচ্ছে কি না জিজ্ঞেস করলে জেলা প্রশাসক জানান, শতভাগ প্রকৃত জেলেরাই জলমহাল ইজারা পাচ্ছে। জলমহাল নিয়ে সরকার যে নীতিমালা করেছে সেখানে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।