ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওর অঞ্চলে শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ: কৃষিমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১
  • ৩৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ ও সারা দেশের শতকরা ৬৪ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ মাসের মধ্যেই বাকি ধান কাটা শেষ হবে।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। এখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত না এলে বোরো ধান উৎপাদনে আর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশা করা যায়। গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ১০ লাখ টন উৎপাদন বেশি হবে।

বোরো ধান দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বছরে মোট উৎপাদিত চালের ৫৫ ভাগের বেশি আসে এ বোরো থেকে। বছরে যে পরিমাণ (২ কোটি টনের মতো) বোরো উৎপাদন হয়, তার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য ৭৫ হাজার কোটি টাকা।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

তিনি বলেন, হাওরভুক্ত ৭টি জেলায় এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। যা দেশের মোট আবাদের প্রায় ২০ শতাংশ। আর শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে।

তিনি বলেন, গত বছর একই তারিখে সারা দেশের মাত্র ৩৩ ভাগ ধান কাটা সম্ভব হয়েছিল। ধান কাটার মেশিন ও শ্রমিকের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, এবছর শুধু হাওরভুক্ত ৭ জেলাতেই বহিরাগত শ্রমিক আনা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার জন। এছাড়া, এবছর ধান কাটতে ২৬২০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৭৮৯টি রিপার মাঠে চলমান আছে। এতে একদিকে শ্রমিক সংকট থাকলেও দ্রুত ধান কাটা যাচ্ছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচ কমার ফলে কৃষক লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অঞ্চলভেদে ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে ধান কাটাসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদেরকে দেয়া হচ্ছে। এটি সারা বিশ্বে একটি বিরল ঘটনা’।

মন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর ১ লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এছাড়া, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে।

এবছর গড় ফলনের পরিমাণও বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গত বছর দেশে বোরো ধানের গড় ফলন ছিল প্রতি হেক্টরে ৩ দশমিক ৯৭ মেট্রিক টন, এবছর গড় ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে উৎপাদন বেড়েছে এবছর শূন্য দশমিক ২০ মে.টন। তবে সারা দেশের শতভাগ ধান কাটা হয়ে গেলে গড় ফলনের পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবেও বলে জানান তিনি।

হিটশকে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো চাষিদের জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ১০৫ জন কৃষককে জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে নগদ সহায়তা প্রদান শুরু হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

চলতি আউশ মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধিতেও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবছর ১৩ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন চাল।

এছাড়া মন্ত্রী জানান, আগামী ৩ বছরের মধ্যে পেঁয়াজ ও পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ অব্যাহত আছে।

এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওর অঞ্চলে শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৬:২৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ ও সারা দেশের শতকরা ৬৪ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ মাসের মধ্যেই বাকি ধান কাটা শেষ হবে।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। এখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত না এলে বোরো ধান উৎপাদনে আর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশা করা যায়। গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ১০ লাখ টন উৎপাদন বেশি হবে।

বোরো ধান দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বছরে মোট উৎপাদিত চালের ৫৫ ভাগের বেশি আসে এ বোরো থেকে। বছরে যে পরিমাণ (২ কোটি টনের মতো) বোরো উৎপাদন হয়, তার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য ৭৫ হাজার কোটি টাকা।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

তিনি বলেন, হাওরভুক্ত ৭টি জেলায় এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। যা দেশের মোট আবাদের প্রায় ২০ শতাংশ। আর শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে।

তিনি বলেন, গত বছর একই তারিখে সারা দেশের মাত্র ৩৩ ভাগ ধান কাটা সম্ভব হয়েছিল। ধান কাটার মেশিন ও শ্রমিকের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, এবছর শুধু হাওরভুক্ত ৭ জেলাতেই বহিরাগত শ্রমিক আনা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার জন। এছাড়া, এবছর ধান কাটতে ২৬২০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৭৮৯টি রিপার মাঠে চলমান আছে। এতে একদিকে শ্রমিক সংকট থাকলেও দ্রুত ধান কাটা যাচ্ছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচ কমার ফলে কৃষক লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অঞ্চলভেদে ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে ধান কাটাসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদেরকে দেয়া হচ্ছে। এটি সারা বিশ্বে একটি বিরল ঘটনা’।

মন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর ১ লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এছাড়া, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে।

এবছর গড় ফলনের পরিমাণও বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গত বছর দেশে বোরো ধানের গড় ফলন ছিল প্রতি হেক্টরে ৩ দশমিক ৯৭ মেট্রিক টন, এবছর গড় ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে উৎপাদন বেড়েছে এবছর শূন্য দশমিক ২০ মে.টন। তবে সারা দেশের শতভাগ ধান কাটা হয়ে গেলে গড় ফলনের পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবেও বলে জানান তিনি।

হিটশকে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো চাষিদের জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ১০৫ জন কৃষককে জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে নগদ সহায়তা প্রদান শুরু হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

চলতি আউশ মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধিতেও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবছর ১৩ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন চাল।

এছাড়া মন্ত্রী জানান, আগামী ৩ বছরের মধ্যে পেঁয়াজ ও পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ অব্যাহত আছে।

এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।