ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বপ্নের অলওয়েদার সড়ক ফসলে মোড়ানো লাল কার্পেট,রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞ্যতা প্রকাশ এলাকাবাসী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০০:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মে ২০২১
  • ১৮২ বার

আকিব হৃদয়ঃ হাওরবাসীর স্বপ্নের অলওয়েদার সড়কের দুই পাশে রোদে শুকাতে দেয়া লাল মরিচ আর হলুদ ভুট্টা যেন ফসলের কার্পেটে মোড়া জমিন।

কালো পিচঢালা সড়কের সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে লাল-হলুদের ভিন্ন এই গালিচা! দুই পাশে ফসলের সবুজ মাঠের বুক চিরে চলা উঁচু পথের দুই ধারে মরিচ আর ভুট্টার বাহারি রঙ মন কাড়ে পর্যটকদের।

গত বছরের ৮ অক্টোবর ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অলওয়েদার সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিঠামইন উপজেলার জিরো পয়েন্ট থেকে ইটনা ও অষ্টগ্রামের দিকে ছুটে গেছে অলওয়েদার সড়ক। দুই পাশের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার।

হাওরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া অলওয়েদার সড়কের দুই পাশে চোখে পড়বে রক্তলাল রঙের সমাহার। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন লাল গালিচায় ঢেকে দেয়া হয়েছে অলওয়েদার সড়কের দুই পাশ। কোথাও কোথাও ধান মাড়াই-ঝাড়াই ও শুকানোর কাজও চলছে। বাড়ির পাশে মনোরম পরিবেশে জমির ফসল শুকাতে পেরে খুশি স্থানীয়রা। তবে সবকিছু মাড়িয়ে রক্তআভায় উদ্ভাসিত হয়ে পড়েছে মরিচ শুকানোর দৃশ্য।

উঁচু আর প্রশস্ত এ পাকা সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আছে। ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। তাই চলতি বোরো মৌসুমে জমির ধান পরিবহনের পাশাপাশি সড়কের দুই পাশে রোদে শুকানো হচ্ছে মরিচ ও ভুট্টা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন অংশে এবং লোকালয়ের কাছাকাছি গ্রামের কৃষকরা রাস্তায় ধান মাড়াই করছেন। কৃষাণিরা ধান ঝাড়াই কিংবা শুকাচ্ছেন।

অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তল ইউনিয়নের কৃষাণি জুলেখা বানু ভারী বাতাস সামলে রাস্তার পাশে শুকাতে দেয়া মরিচ নেড়ে দিচ্ছেলেন।

তিনি বলেন, বৈশাখের এ সময়টাতে ঝড় বৃষ্টি আর উচু জমি না থায়কায় ফসল শুকাতে আমাদের ভোগান্তির শিকার হতে হত। এখন নতুন এই উঁচু রাস্তা হওয়ায় কোনো চিন্তা করতে হয় না। এছাড়াও তিনি স্থানীয় এমপি কিশোরগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিকের প্রতি কৃতজ্ঞ্যতা ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন করেন।

একই এলাকার মুর্শিদ উদ্দীন বলেন, এখন আর বাড়ির পাশে খোলায় মরিচ-ভুট্টা শুকানো লাগে না। সড়কের দুই পাশে সকালে রোদে দিয়ে বিকেলেই ভালো করে শুকানোর পর বস্তায় ভরে মরিচ বাড়িতে নিতে পারি। এ সড়কটি হয়ে আমাদের জন্য খুব উপকার হয়েছে। তিনি এ সড়কটি নির্মাণ করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ্যতা প্রকাশ করেন।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা এবং সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। আর মরিচ ও ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম বলেন, ভারী যানবাহন চলাচল না করায় বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে তারা ফসল শুকিয়ে সহজেই বাড়িতে নিতে পারে। তাছাড়া বোরো মৌসুমে ফসল বাড়িতে আসার পর শুকানো নিয়ে কৃষকদের নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। অলওয়েদার সড়কটি নির্মাণ হওয়ার পর তাদের এ ঝামেলা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে এখন তারা রাস্তার দুপাশেই রোদে তাদের ফসল শোকাতে পারে। তাই নতুন সড়কটি তাদের জন্য আশির্বাদ বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বপ্নের অলওয়েদার সড়ক ফসলে মোড়ানো লাল কার্পেট,রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞ্যতা প্রকাশ এলাকাবাসী

আপডেট টাইম : ০৪:০০:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মে ২০২১

আকিব হৃদয়ঃ হাওরবাসীর স্বপ্নের অলওয়েদার সড়কের দুই পাশে রোদে শুকাতে দেয়া লাল মরিচ আর হলুদ ভুট্টা যেন ফসলের কার্পেটে মোড়া জমিন।

কালো পিচঢালা সড়কের সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে লাল-হলুদের ভিন্ন এই গালিচা! দুই পাশে ফসলের সবুজ মাঠের বুক চিরে চলা উঁচু পথের দুই ধারে মরিচ আর ভুট্টার বাহারি রঙ মন কাড়ে পর্যটকদের।

গত বছরের ৮ অক্টোবর ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অলওয়েদার সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিঠামইন উপজেলার জিরো পয়েন্ট থেকে ইটনা ও অষ্টগ্রামের দিকে ছুটে গেছে অলওয়েদার সড়ক। দুই পাশের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার।

হাওরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া অলওয়েদার সড়কের দুই পাশে চোখে পড়বে রক্তলাল রঙের সমাহার। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন লাল গালিচায় ঢেকে দেয়া হয়েছে অলওয়েদার সড়কের দুই পাশ। কোথাও কোথাও ধান মাড়াই-ঝাড়াই ও শুকানোর কাজও চলছে। বাড়ির পাশে মনোরম পরিবেশে জমির ফসল শুকাতে পেরে খুশি স্থানীয়রা। তবে সবকিছু মাড়িয়ে রক্তআভায় উদ্ভাসিত হয়ে পড়েছে মরিচ শুকানোর দৃশ্য।

উঁচু আর প্রশস্ত এ পাকা সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আছে। ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। তাই চলতি বোরো মৌসুমে জমির ধান পরিবহনের পাশাপাশি সড়কের দুই পাশে রোদে শুকানো হচ্ছে মরিচ ও ভুট্টা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন অংশে এবং লোকালয়ের কাছাকাছি গ্রামের কৃষকরা রাস্তায় ধান মাড়াই করছেন। কৃষাণিরা ধান ঝাড়াই কিংবা শুকাচ্ছেন।

অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তল ইউনিয়নের কৃষাণি জুলেখা বানু ভারী বাতাস সামলে রাস্তার পাশে শুকাতে দেয়া মরিচ নেড়ে দিচ্ছেলেন।

তিনি বলেন, বৈশাখের এ সময়টাতে ঝড় বৃষ্টি আর উচু জমি না থায়কায় ফসল শুকাতে আমাদের ভোগান্তির শিকার হতে হত। এখন নতুন এই উঁচু রাস্তা হওয়ায় কোনো চিন্তা করতে হয় না। এছাড়াও তিনি স্থানীয় এমপি কিশোরগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিকের প্রতি কৃতজ্ঞ্যতা ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন করেন।

একই এলাকার মুর্শিদ উদ্দীন বলেন, এখন আর বাড়ির পাশে খোলায় মরিচ-ভুট্টা শুকানো লাগে না। সড়কের দুই পাশে সকালে রোদে দিয়ে বিকেলেই ভালো করে শুকানোর পর বস্তায় ভরে মরিচ বাড়িতে নিতে পারি। এ সড়কটি হয়ে আমাদের জন্য খুব উপকার হয়েছে। তিনি এ সড়কটি নির্মাণ করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ্যতা প্রকাশ করেন।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা এবং সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। আর মরিচ ও ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম বলেন, ভারী যানবাহন চলাচল না করায় বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে তারা ফসল শুকিয়ে সহজেই বাড়িতে নিতে পারে। তাছাড়া বোরো মৌসুমে ফসল বাড়িতে আসার পর শুকানো নিয়ে কৃষকদের নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। অলওয়েদার সড়কটি নির্মাণ হওয়ার পর তাদের এ ঝামেলা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে এখন তারা রাস্তার দুপাশেই রোদে তাদের ফসল শোকাতে পারে। তাই নতুন সড়কটি তাদের জন্য আশির্বাদ বলে জানান এই কর্মকর্তা।