ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপাচার্যের শেষ দিনের নিয়োগ অবৈধ: বলছে মন্ত্রণালয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মে ২০২১
  • ১৮৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যসাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শেষ কর্মদিবসে নিয়োগ দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপাচার্য বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে বিষয়টি তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, এই অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতার সুযোগ নেই। এজন্য এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ইতোপূর্বে ইউজিসি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর ১০ ডিসেম্বর পত্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল।

আদেশে আরও বলা হয়, উপাচার্য বৃহস্পতিবার তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধি বহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ প্রদান করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা অনভিপ্রেত। বিদায়ী উপাচার্য অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বিধায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের কমিটি গঠন করা হলো।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম নিয়ে ছাত্রলীগসহ শিক্ষকদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই রাবি ভিসি এম আব্দুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে কয়েকজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। গত ৫ মে অস্থায়ী ভিত্তিতে (এডহক) ভিসি বিশাল জনবল নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে।

এ দিন দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে যায়। তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যায়।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বেলা দুইটা পর্যন্ত চাকরিপ্রত্যাশীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের’ মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেছেন, উপাচার্য শেষ দিনে নিয়োগ নিয়ে একটা রক্তাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বিদায় নিচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

উপাচার্যের শেষ দিনের নিয়োগ অবৈধ: বলছে মন্ত্রণালয়

আপডেট টাইম : ১০:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মে ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যসাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শেষ কর্মদিবসে নিয়োগ দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপাচার্য বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে বিষয়টি তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, এই অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতার সুযোগ নেই। এজন্য এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ইতোপূর্বে ইউজিসি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর ১০ ডিসেম্বর পত্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল।

আদেশে আরও বলা হয়, উপাচার্য বৃহস্পতিবার তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধি বহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ প্রদান করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা অনভিপ্রেত। বিদায়ী উপাচার্য অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বিধায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের কমিটি গঠন করা হলো।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম নিয়ে ছাত্রলীগসহ শিক্ষকদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই রাবি ভিসি এম আব্দুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে কয়েকজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। গত ৫ মে অস্থায়ী ভিত্তিতে (এডহক) ভিসি বিশাল জনবল নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে।

এ দিন দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে যায়। তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যায়।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বেলা দুইটা পর্যন্ত চাকরিপ্রত্যাশীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের’ মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেছেন, উপাচার্য শেষ দিনে নিয়োগ নিয়ে একটা রক্তাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বিদায় নিচ্ছেন।