ঢাকা ১১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএডিসির ধানের বীজ ক্রয় করে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৭:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১
  • ১৫৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ধানের বীজ ক্রয় করে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ডিক্রিবন্দ ও মাজালিয়া গ্রামের কৃষকের ৩ একর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে উপজেলা কৃষিদপ্তর বিষয়টি ব্লাস্ট রোগ বলে ধারণা করছে।

জানা যায়, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের মাজালিয়া বাজারের ডিলার আফজাল হোসেনের মালিকানাধীন মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ (সনদ নং ৮৯৬) থেকে স্থানীয় কৃষকরা চলতি মওসুমে বোরো-৮১ জাতের ধানের বীজ কিনে জমিতে রোপন করেন। পরে বীজ থেকে ধানের শীষ বের হলে সেগুলো মরা শুরু হয়। শীষগুলো পাকার আগেই মরে যাওয়ায় ডিক্রিবন্ধ গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে কৃষক আজাহার আলী ও তাঁর ভাই আব্দুর রাজ্জাকের প্রায় ১ একর জমির ধান সম্পুর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া একই গ্রামের কৃষক পপুলার মিয়ার প্রায় ৬০ শতক ও সুরুজ্জামান খানের ৭৫ শতক এবং মাজালিয়া গ্রামের আব্দুল করিমের ১০ শতক জমির সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক পপুলার মিয়া জানান, তিনি ৬০ শতক জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন। ধান পাকার আগেই সব শীষ মরে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আব্দুল করিম বলেন, দরিদ্র ভ্যানচালক আমি। জমি বলতে মাত্র ১০ শতক। অনেক কষ্টে সেখানে ধান চাষ করে এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

কৃষক আজাহার আলী জানান, মাজালিয়া বাজারের ডিলার আফজাল হোসেনের দোকান থেকে বোরো-৮১ জাতের ১০ কেজি ওজনের প্রতি ব্যাগ বীজ ৭০০ টাকা করে কিনেছেন। ধানের চারা ঠিকমতো গজালেও শীষ গজানোর পর সেগুলোর মড়ক শুরু হয়। এখন সবগুলো শীষ মরে নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা কয়েকবার খেত পরিদর্শন করলেও কোনো সমাধান আসেনি বলে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজের মালিক ডিলার আফজাল হোসেন জানান, ধান নষ্ট হয়ে গেলেও আমার দোষ নেই। আমি বিএডিসি থেকে বীজ এনে বিক্রি করেছি, বিষয়টি বিএডিসির দেখার দায়িত্ব।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন পলাশ জানান, এটি ব্লাস্ট রোগজনিত কারণে হতে পারে। রোগটি বীজ থেকে হতে পারে বা বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত খেত দেখে এসেছে, ধানের শীষগুলো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি রক্ষা না হয় তবে কিছু করার নেই, তবে কোনো অনুদান এলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পেতে পারেন বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিএডিসির ধানের বীজ ক্রয় করে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

আপডেট টাইম : ১২:০৭:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ধানের বীজ ক্রয় করে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ডিক্রিবন্দ ও মাজালিয়া গ্রামের কৃষকের ৩ একর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে উপজেলা কৃষিদপ্তর বিষয়টি ব্লাস্ট রোগ বলে ধারণা করছে।

জানা যায়, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের মাজালিয়া বাজারের ডিলার আফজাল হোসেনের মালিকানাধীন মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ (সনদ নং ৮৯৬) থেকে স্থানীয় কৃষকরা চলতি মওসুমে বোরো-৮১ জাতের ধানের বীজ কিনে জমিতে রোপন করেন। পরে বীজ থেকে ধানের শীষ বের হলে সেগুলো মরা শুরু হয়। শীষগুলো পাকার আগেই মরে যাওয়ায় ডিক্রিবন্ধ গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে কৃষক আজাহার আলী ও তাঁর ভাই আব্দুর রাজ্জাকের প্রায় ১ একর জমির ধান সম্পুর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া একই গ্রামের কৃষক পপুলার মিয়ার প্রায় ৬০ শতক ও সুরুজ্জামান খানের ৭৫ শতক এবং মাজালিয়া গ্রামের আব্দুল করিমের ১০ শতক জমির সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক পপুলার মিয়া জানান, তিনি ৬০ শতক জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন। ধান পাকার আগেই সব শীষ মরে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আব্দুল করিম বলেন, দরিদ্র ভ্যানচালক আমি। জমি বলতে মাত্র ১০ শতক। অনেক কষ্টে সেখানে ধান চাষ করে এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

কৃষক আজাহার আলী জানান, মাজালিয়া বাজারের ডিলার আফজাল হোসেনের দোকান থেকে বোরো-৮১ জাতের ১০ কেজি ওজনের প্রতি ব্যাগ বীজ ৭০০ টাকা করে কিনেছেন। ধানের চারা ঠিকমতো গজালেও শীষ গজানোর পর সেগুলোর মড়ক শুরু হয়। এখন সবগুলো শীষ মরে নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা কয়েকবার খেত পরিদর্শন করলেও কোনো সমাধান আসেনি বলে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজের মালিক ডিলার আফজাল হোসেন জানান, ধান নষ্ট হয়ে গেলেও আমার দোষ নেই। আমি বিএডিসি থেকে বীজ এনে বিক্রি করেছি, বিষয়টি বিএডিসির দেখার দায়িত্ব।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন পলাশ জানান, এটি ব্লাস্ট রোগজনিত কারণে হতে পারে। রোগটি বীজ থেকে হতে পারে বা বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত খেত দেখে এসেছে, ধানের শীষগুলো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি রক্ষা না হয় তবে কিছু করার নেই, তবে কোনো অনুদান এলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পেতে পারেন বলে তিনি জানান।