গরম বাতাসে নষ্ট শত শত হেক্টর জমির ধান কৃষকের স্বপ্ন ধূলিসাৎ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত ৪ এপ্রিল মৌসুমের প্রথম ঝোড়ো বাতাসের সাথে গরম হাওয়ায়  ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির ধান। এই গরম হাওয়াকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন ‘হিট শক’। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ধানের ফলন নিয়ে যখন আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা। হঠাৎ করেই কয়েক মিনিটের গরম হাওয়া কেড়ে নিল তাদের স্বপ্ন। বেশির ভাগ জমির ধান গরম হাওয়ায় চিটা হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তারা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এসব জমির ধান ৮০ ভাগ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। কটিয়াদীতে গরম বাতাসে আম,লিচু ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি | bijoybangladeshসম্প্রতি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সবুজ ধান, এ দোলা লেগেছিল কৃষকের মনেও। ধান গাছের মাঝে কেবলই বের হয়েছিল ধানের শীষ। ধানের ফলন নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন কৃষকরা। দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানের সমারোহ দেখে বোঝার উপায় নেই কী অবস্থা ধানের। হঠাৎ করেই গরম ঝোড়ো হাওয়ায় পুড়ে গেছে ধানের শীষ। এতে জমির ধানের শীষে দেখা দিয়েছে চিটা। গত ৪ এপ্রিলের গরম ঝড়ো বাতাসের পর মাঠে তেমন কিছু দেখা না গেলেও কয়েকদিন পর জমিতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। জমির বেশির ভাগ ধান কালো হয়ে গেছে, চিটা হয়ে যাচ্ছে। তাই লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।১০ মিনিটের গরম বাতাসে সর্বনাশ, সব ধানে চিটা গ্রামের কালাম হোসেন জানান, দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেছিলাম। আগাছা পরিষ্কার, সেচ দেয়া, সার, কীটনাশক খরচ, বীজসহ সবকিছু মিলিয়ে বিঘাপ্রতি এই ধান রোপণে খরচ হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার টাকা। কিন্তু গরম বাতাসে জমির ধান যেভাবে চিটা হয়ে গেছে, তাতে অর্ধেক খরচ উঠবে কি-না সন্দেহ।কালবৈশাখীর গরম বাতাসে কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে ছাই | 1021288 | কালের কণ্ঠ |  kalerkanthoএকই গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ, রবিউল ইসলাম রবি কমবেশি সবাই ৩ থেকে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। তাদের কণ্ঠেও একই হতাশার সুর। ধান লাগাতে যে খরচ হয়েছে তাতে কীভাবে কী হবে বুঝতে পারছেন না তারা। করোনার মাঝে এই ধান নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা।উজিরপুরে ৬'শ হেক্টর জমির ধান নষ্টের উপক্রম | Amar Sangbad  কৃষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গরম বাতাসে ধান নষ্ট হয়ে চিটা হওয়ার মতো ঘটনা এর আগে ঘটেনি। কয়েকদিন আগ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। জমিতে সবুজ ধান দেখে মন ভরে গিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে জমিতে গিয়ে ধানের অবস্থা দেখে তো মাথায় হাত। মনে হচ্ছে জমির ধানের বাইল পুড়ে কালো হয়ে গেছে। তারপর চিটা হয়ে যাচ্ছে ধানগুলো।কৃষিতবে আশার কথা জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। কৃষি কর্মকর্তা এ এম মাসুম বিল্লাহ জানান, মুলত ৩৫ ডিগ্রির বেশি তাপামাত্রার বাতাসের কারণে এমন পরিস্থিতি। তবে জমিতে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ পানি জমিয়ে রাখা ও পরিমাণ মতো পটাশ সার স্প্রে করলে উপকার পাবেন কৃষকরা। এতে করে যেসব জমির ধানে চিটা মনে করছেন কৃষকরা, সেই জমির ধান শতকরা ৮০ ভাগ পুনরুদ্ধার হবে আশা করি।হিটশকে চিটা হয়ে যাচ্ছে ধান: শঙ্কায় কৃষকএ বছর চাটমোহর উপজেলায় ৮ হাজার ২ শ হেক্টর জমিতে আবাদের বিপরীতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিকটন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর