পিলখানা হত্যাদিবস: নিহতদের স্মরণে দুই দিনের কর্মসূচি

পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ৭ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন নিহত হন। বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের এ দিনটিকে সরকারীভাবে ‘পিলখানা হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে বিজিবি।

বিডিআর বিদ্রোহের রক্তাক্ত ওই ঘটনার পর বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) নাম পাল্টে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিডিআর)। বদলে ফেলা হয় বাহিনীর পোশাক।

পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ৭ম বর্ষপূতিতে এ ঘটনায় নিহতদের স্মরণে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র কোরআন খতম করার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করবে বিজিবি। বাহিনীর সকল রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর পবিত্র কোরআন শরীফ খতমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একই কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়াও শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর পিলখানায় বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ৭ম বর্ষপূর্তিতে নিহতদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করবে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলথাসা ট্রাজেডির শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল নিহত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের কবরে শ্রদ্ধা জানাবে বিএনপি।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বিডিআরদের বার্ষিক দরবার অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় (সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে) দরবার হলে অতর্কিতভাবে ঢুকে পড়ে একদল বিদ্রোহী জওয়ান। দরবার হলের ভেতরেই তারা সে সময়কার বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদকে গুলি করে হত্যা করে। পরে তারা বিডিআরের উচ্চপদে আসীন সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে। তাদের হাতে নিহত হন সেনাবাহিনীর ৫৭ কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার সেনা কর্মকর্তাদের বেশির ভাগেরই দাফন হয়েছে বনানীর সামরিক কবরস্থানে। কয়েকজনকে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর