ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই দাপুটে নেতারা এখন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০১৫
  • ৩৫৩ বার

মহাজোট সরকারের আমলে ক্ষমতার শীর্ষে থাকা অনেক নেতাই এখন আর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় নেই। নেই তাদের সেই দাপট। এতদিন যারা ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়েছেন এখন তারা নিজেদের ব্যক্তিজীবন ও ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। চলে গেছেন আলোচনার বাইরে। কেউ কেউ রাজনীতি থেকে দূরে সরে একান্ত নিরিবিলিতে সময় কাটাচ্ছেন। কয়েকজনকে ঘুরতে হচ্ছে দুদকের দ্বারে দ্বারে। একজন আছেন কারাগারে। কেউ কেউ মন্ত্রিত্ব না পেয়ে দলের কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করেছেন। কিন্তু দলেও কমে গেছে তাদের গুরুত্ব। কেউ কেউ কোনো কিছুতেই নেই। বই পড়ে, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে খুনসুটি করে কাটাচ্ছেন সময়। অতিকথন এবং নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে মন্ত্রিসভা থেকে বাদপড়া নেতাদের বর্তমান দিনকালের খোঁজখবর করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেয়েছিলেন বিতর্কিত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। কিন্তু পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্তি করে মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়েন ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করা লতিফ সিদ্দিকী। নিউইয়র্কে মন্তব্য করে দেশে না ফিরে কিছু দিন পালিয়ে বেড়িয়েছিলেন ভারতে। পরে ফেরামাত্র গ্রেফতার হন। তিনি এখন কারাগারে। শুধু মন্ত্রিত্ব নয়, হারিয়েছেন দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্যপদ। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য থাকার অধিকারও হারিয়েছেন তিনি। কারাগারে অসুস্থ হলে তাকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। পাঁচ মাস ধরে এখানেই বন্দী অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়া লতিফ সিদ্দিকীর নামে থাকা ডজনখানেক মামলায় মঙ্গলবার সকালে জামিন পেয়েছেন। হাসপাতালে তার সেবার দায়িত্বে থাকা একজন কর্মচারী জানান, তার দম্ভ এখনো কমেনি। কয়েক লাখ টাকা চিকিৎসা বিল বাকি পড়েছে। কিন্তু বিল চাইলে ধমকান। বলেন, ‘চেন আমি কে, আমি আবার মন্ত্রী হব’। মহাজোট মন্ত্রিসভার আরেক শীর্ষ মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭ মার্চের ভাষণের ভুল তথ্যসংবলিত বই লিখে সমালোচিত হয়েছেন। অবশ্য তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রিত্বের শেষ দিকে। ফলে তিনি গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাননি, দলও তার বিষয়ে আর আগ্রহ দেখায়নি। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক এই মন্ত্রী গুরুতর কোনো রোগে আক্রান্ত না হলেও শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন। প্রায়ই স্মৃতিভ্রম হচ্ছে তার। আগের চেয়ে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছেন। ঘর থেকে খুব একটা বের হতে চান না। উত্তরার নিজস্ব বাসভবনে স্ত্রী ফরিদা খন্দকারকে নিয়ে একান্তে দিন কাটাচ্ছেন। ছেলে-মেয়ে সবাই বিদেশে। বেশির ভাগ সময় বাড়িতে বই পড়েন। টিভি দেখেন না, পত্রিকাও পড়েন না। শুধু স্কাইপের মাধ্যমে বিদেশে থাকা নাতি-নাতনিদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন। স্ত্রী তাকে নিয়ে মাঝেমধ্যে বাসার আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়ান। তবে নামেন না গাড়ি থেকে।

রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত হয়েছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ ঘটনার পর নানা সমালোচনায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এখন সময় কাটে ছোটখাটো বিভিন্ন কর্মসূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে। এখন ব্যস্ত সংসদ, নিজের নির্বাচনী এলাকা নিয়ে। মাঝেমধ্যে শুক্রবারে ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মহাজোট সরকারের মধ্যসময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এবার আর কোনো দায়িত্ব পাননি। যদিও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে চাঁদপুরের একটি আসন থেকে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ‘বিএনপির লোকজন রানা প্লাজা ঝাঁকিয়ে ধসিয়ে ফেলেছে’ মন্তব্য করা সাবেক এই মন্ত্রী এখন ব্যস্ত নিজের ব্যবসা নিয়ে। চাঁদপুরেও খুব একটা সময় দেন না। ঢাকার বনানীর বাসভবনে থেকে নিজের নতুন মালিকানাধীন বেসরকারি ফার্মার্স ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে ব্যস্ত আছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে। তবে দলটির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কার্যালয়ে তিনি খুব বেশি যান না। মহাজোট সরকারের সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া এখন নিজ দলের সাংগঠনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। যদিও তাকে এখন আর সভা-সেমিনারে খুব একটা দেখা যায় না। এর বাইরে তিনি এখন বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন। যোগাযোগ করা হলে দিলীপ বড়–য়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখন আমি পার্টির কাজে ব্যস্ত আছি’। এ ছাড়া কার্ল মার্কস, মাও সে তুংয়ের বই; সমসাময়িক ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রের কলাম লেখকদের আর্টিক্যাল পড়ে সাবেক এই মন্ত্রীর অবসর কাটছে। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন এবং রাজধানীর মালিবাগের ভাড়া বাসায় স্ত্রী নিয়ে থাকছেন।আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদের আরেক সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজ ব্যবসাতেই এখন সময় দিচ্ছেন একসময়ের দাপুটে এই মন্ত্রী। এলাকার বিভিন্ন কর্মসূচিতেও সময় দেন তিনি। পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। এখন দল থেকেও দূরে আছেন। গেল নির্বাচনে তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের কোনো পদেও তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কিছু দিন আগে তিনি ‘আমি ও জবাবদিহিতা’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সেখানে পদ্মা সেতুসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে নিজেকে মুক্ত করার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ ছাড়া নিজ এলাকা মাদারীপুরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে তিনি সময় দিচ্ছেন।সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক তার মেয়াদ শেষে নিজ ও পরিবারের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন। বর্তমানে রাজধানীর শ্যামলীর ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড অর্থোপেডিক হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন। কিছু দিন আগে দুদক থেকে সার্টিফিকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন তিনি। একইভাবে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান সর্বশেষ নির্বাচনে হেরেছেন। সেই সঙ্গে হারিয়েছেন দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব। একসময় দাপট দেখালেও এখন তাকে সস্ত্রীক কারাগারে যাওয়ার প্রহর গুনতে হচ্ছে। স্ত্রী সৈয়দা হাসিনা সুলতানাসহ তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলার চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মহাজোট সরকারের সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বেশির ভাগ সময়ই দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই সাবেক মন্ত্রী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সেই দাপুটে নেতারা এখন

আপডেট টাইম : ০৪:৪১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০১৫

মহাজোট সরকারের আমলে ক্ষমতার শীর্ষে থাকা অনেক নেতাই এখন আর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় নেই। নেই তাদের সেই দাপট। এতদিন যারা ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়েছেন এখন তারা নিজেদের ব্যক্তিজীবন ও ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। চলে গেছেন আলোচনার বাইরে। কেউ কেউ রাজনীতি থেকে দূরে সরে একান্ত নিরিবিলিতে সময় কাটাচ্ছেন। কয়েকজনকে ঘুরতে হচ্ছে দুদকের দ্বারে দ্বারে। একজন আছেন কারাগারে। কেউ কেউ মন্ত্রিত্ব না পেয়ে দলের কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করেছেন। কিন্তু দলেও কমে গেছে তাদের গুরুত্ব। কেউ কেউ কোনো কিছুতেই নেই। বই পড়ে, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে খুনসুটি করে কাটাচ্ছেন সময়। অতিকথন এবং নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে মন্ত্রিসভা থেকে বাদপড়া নেতাদের বর্তমান দিনকালের খোঁজখবর করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেয়েছিলেন বিতর্কিত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। কিন্তু পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্তি করে মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়েন ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করা লতিফ সিদ্দিকী। নিউইয়র্কে মন্তব্য করে দেশে না ফিরে কিছু দিন পালিয়ে বেড়িয়েছিলেন ভারতে। পরে ফেরামাত্র গ্রেফতার হন। তিনি এখন কারাগারে। শুধু মন্ত্রিত্ব নয়, হারিয়েছেন দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্যপদ। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য থাকার অধিকারও হারিয়েছেন তিনি। কারাগারে অসুস্থ হলে তাকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। পাঁচ মাস ধরে এখানেই বন্দী অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়া লতিফ সিদ্দিকীর নামে থাকা ডজনখানেক মামলায় মঙ্গলবার সকালে জামিন পেয়েছেন। হাসপাতালে তার সেবার দায়িত্বে থাকা একজন কর্মচারী জানান, তার দম্ভ এখনো কমেনি। কয়েক লাখ টাকা চিকিৎসা বিল বাকি পড়েছে। কিন্তু বিল চাইলে ধমকান। বলেন, ‘চেন আমি কে, আমি আবার মন্ত্রী হব’। মহাজোট মন্ত্রিসভার আরেক শীর্ষ মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭ মার্চের ভাষণের ভুল তথ্যসংবলিত বই লিখে সমালোচিত হয়েছেন। অবশ্য তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রিত্বের শেষ দিকে। ফলে তিনি গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাননি, দলও তার বিষয়ে আর আগ্রহ দেখায়নি। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক এই মন্ত্রী গুরুতর কোনো রোগে আক্রান্ত না হলেও শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন। প্রায়ই স্মৃতিভ্রম হচ্ছে তার। আগের চেয়ে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছেন। ঘর থেকে খুব একটা বের হতে চান না। উত্তরার নিজস্ব বাসভবনে স্ত্রী ফরিদা খন্দকারকে নিয়ে একান্তে দিন কাটাচ্ছেন। ছেলে-মেয়ে সবাই বিদেশে। বেশির ভাগ সময় বাড়িতে বই পড়েন। টিভি দেখেন না, পত্রিকাও পড়েন না। শুধু স্কাইপের মাধ্যমে বিদেশে থাকা নাতি-নাতনিদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন। স্ত্রী তাকে নিয়ে মাঝেমধ্যে বাসার আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়ান। তবে নামেন না গাড়ি থেকে।

রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত হয়েছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ ঘটনার পর নানা সমালোচনায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এখন সময় কাটে ছোটখাটো বিভিন্ন কর্মসূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে। এখন ব্যস্ত সংসদ, নিজের নির্বাচনী এলাকা নিয়ে। মাঝেমধ্যে শুক্রবারে ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মহাজোট সরকারের মধ্যসময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এবার আর কোনো দায়িত্ব পাননি। যদিও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে চাঁদপুরের একটি আসন থেকে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ‘বিএনপির লোকজন রানা প্লাজা ঝাঁকিয়ে ধসিয়ে ফেলেছে’ মন্তব্য করা সাবেক এই মন্ত্রী এখন ব্যস্ত নিজের ব্যবসা নিয়ে। চাঁদপুরেও খুব একটা সময় দেন না। ঢাকার বনানীর বাসভবনে থেকে নিজের নতুন মালিকানাধীন বেসরকারি ফার্মার্স ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে ব্যস্ত আছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে। তবে দলটির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কার্যালয়ে তিনি খুব বেশি যান না। মহাজোট সরকারের সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া এখন নিজ দলের সাংগঠনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। যদিও তাকে এখন আর সভা-সেমিনারে খুব একটা দেখা যায় না। এর বাইরে তিনি এখন বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন। যোগাযোগ করা হলে দিলীপ বড়–য়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখন আমি পার্টির কাজে ব্যস্ত আছি’। এ ছাড়া কার্ল মার্কস, মাও সে তুংয়ের বই; সমসাময়িক ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রের কলাম লেখকদের আর্টিক্যাল পড়ে সাবেক এই মন্ত্রীর অবসর কাটছে। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন এবং রাজধানীর মালিবাগের ভাড়া বাসায় স্ত্রী নিয়ে থাকছেন।আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদের আরেক সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজ ব্যবসাতেই এখন সময় দিচ্ছেন একসময়ের দাপুটে এই মন্ত্রী। এলাকার বিভিন্ন কর্মসূচিতেও সময় দেন তিনি। পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। এখন দল থেকেও দূরে আছেন। গেল নির্বাচনে তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের কোনো পদেও তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কিছু দিন আগে তিনি ‘আমি ও জবাবদিহিতা’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সেখানে পদ্মা সেতুসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে নিজেকে মুক্ত করার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ ছাড়া নিজ এলাকা মাদারীপুরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে তিনি সময় দিচ্ছেন।সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক তার মেয়াদ শেষে নিজ ও পরিবারের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন। বর্তমানে রাজধানীর শ্যামলীর ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড অর্থোপেডিক হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন। কিছু দিন আগে দুদক থেকে সার্টিফিকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন তিনি। একইভাবে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান সর্বশেষ নির্বাচনে হেরেছেন। সেই সঙ্গে হারিয়েছেন দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব। একসময় দাপট দেখালেও এখন তাকে সস্ত্রীক কারাগারে যাওয়ার প্রহর গুনতে হচ্ছে। স্ত্রী সৈয়দা হাসিনা সুলতানাসহ তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলার চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মহাজোট সরকারের সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বেশির ভাগ সময়ই দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই সাবেক মন্ত্রী।