প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন (বিএলসিএফ) নামে বাংলায় দুটো স্কুল পরিচালিত হয় সিঙ্গাপুরে। প্রবাসী বাঙালি পরিবারের প্রায় ছয় শ’ শিশু এখানে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।
মহান ভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ৮ টায় বাংলা স্কুলের প্রধান শাখা জাংদি প্রাইমারি স্কুল এবং বেলা ১১ টায় জুইং প্রাইমারি স্কুলের প্রায় ছয় শ’ শিশু নিজেদের অভিভাবকসহ জমায়েত হয়। এরপর প্রভাতফেরির মাধ্যমে স্কুলের ছেলেমেয়ে, শিক্ষক এবং অভিভাবকরা হাতে গড়া শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে জীবন দেয়া বাহান্নোর বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
এরপর স্কুলের নিজেদের অংশগ্রহণে আয়োজন হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে স্কুলের শিশুরাই বাংলায় গান পরিবেশন, কবিতাপাঠ ও ছড়া আবৃত্তি করে। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যেও দেশের গান পরিবেশন করেন বেশ কয়েকজন।
স্কুলের অধ্যক্ষ মিলিয়া ইসলাম সাবেদ, একাধারে খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী, মহানভাষা দিবসের এ আয়োজনে প্রবাসী শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অভিভূত হয়ে জানান, শিশুরা প্রবল আগ্রহে অংশ নিয়েছে ভাষাদিবস উদযাপনের এ অনুষ্ঠানে। আমরা হাতে হাতে একটা শহীদ মিনার বানিয়েছি। ছোট্ট শিশুরা প্রায় সকলেই কাগজের ওপর তাদের প্রিয় শহীদ মিনারের ছবি এঁকে স্কুলে এনেছে। নিজেরাই ফুল এনেছে। ফুলের তোড়া বানিয়েছে। কচিকন্ঠে প্রভাতফেরির গান গাইতে গাইতে শহীদের বেদীর সামনে সেই ফুল রেখেছে।
বিএলসিএফ বাংলা স্কুলটি সিঙ্গাপুরের প্রবাসী বাঙালি সমাজে সবচেয়ে বড় স্কুল। বিদেশে থাকলেও যাতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে আমাদের শিশুরা, নতুন প্রজন্ম যাতে জানার সুযোগ পায় আমাদের গৌরবের ইতিহাস- এ কারণে সারা বছর এ ধরনের নানাবিধ আয়োজন করা হয় এখানে।
প্রবাসের বুকে বাঁচিয়ে রাখে বিশ্বাসের মতো সজীব এক টুকরো বাংলাদেশ।