জীবনের চাকা ঘুরছে সাধের লাউয়ে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার দিনমজুর শ্রমিক আনোয়ার হোসেনকে স্বাবলম্বী করেছে মাটি। তাকে সামনের দিকে এগিয়ে চলার পথ দেখিয়েছে মাটি। তিনি দিনমজুরির কাজ ছেড়ে শাক সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী।

দিনমজুরির পরিবর্তে মৌসুমভিত্তিক সবজি চাষ করেই নিয়মিত জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন। পরিবার চালাতে এখন আর আগের মত বেগ পেতে হচ্ছে না। বর্তমানে তার জমিতে তৈরি মাচাতে ঝুলছে ১২ মাসের আকর্ষণীয় বিভিন্ন প্রজাতির লাউ। মাচার দিকে চোখ রাখলে সাধের লাউ দেখে মন জুড়িয়ে যায়। প্রতিদিনই পাইকাররা এসে বিভিন্ন আকারের লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দীঘিনালা উপজেলার কবাখালীর উত্তর মিলনপুর গ্রামের সফল লাউ চাষি আনোয়ার হোসেন সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান, অভাব-অনটনের কারণে লেখাপড়া বেশি করতে পারেননি। বেকার জীবন ক্রমশ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। বেকারত্ব দূর করতে প্রথমে শুরু করেন দিন মজুরের কাজ।
তিনি বলেন, একদিকে পিছু ছাড়ছে না অভাব। অপরদিকে প্রতিদিন কাজ না থাকায় সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হতো। তাই দিন মজুরির পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য বিকল্প চিন্তা শুরু করেন। গত বছর থেকে যে কোন পরিত্যক্ত জমিতে শাক সবজি চাষ করার চিন্তা করেন। তার এক আত্মীয়ের নিকট থেকে দেড় একর জমি নিয়ে তাতে লাউ চাষ করেন। প্রথমবার লাউ চাষ করে তেমন লাভ হয়নি। তারপারও তিনি হাল ছাড়েননি। এবার লাউয়ের বাম্পার ফলন সাফল্য এনে দিয়েছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে বীজতলা তৈরি করে বীজ রোপন করে লাউ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে জমি থেকে লাউ বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি লাউ বিক্রি করেন। সবজি হিসেবে চাহিদা থাকায় প্রতিটি লাউ পাইকারি দরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা করে বিক্রি করতে পারছেন।

আনোয়ার হোসেনের কথা, এ পর্যন্ত লাউ চাষে বড় ধরনের পোকার আক্রমণ হয়নি। এবার পুরো রমজান মাসজুড়ে লাউ বিক্রি করতে পারবেন। এতে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি হতে পারে। লাউ উঠে গেলে একই জমিতে করলা চাষ করবেন। তিনি আরো জানান, সবজি চাষ করার পর থেকে এখন আর দিনমজুরের কাজ করা লাগে না। নিজের কাজ করেই সংসার চালাতে পারছেন।

দীঘিনালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুজন চাকমা ইনকিলাবকে জানান, লাউ চাষের জমি ঘুরে দেখেছেন। সেখানে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ দিয়েই পোকা দমন করা হচ্ছে। যেভাবে লাউ উৎপাদিত হচ্ছে তা ইতিবাচক। পুরো উপজেলার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর