ঢাকা ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্মাণশৈলীতে অনন্য বিশ্বের ১০ মসজিদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫০:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১
  • ১৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানরা একত্র হয়ে প্রাত্যাহিক সালাত আদায় করেন তাই মসজিদ। মসজিদ শুধু ইবাদতের স্থান বা প্রার্থণালয় নয় মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র। ইসলামি শাসনামলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মকান্ড মসজিদ থেকে পরিচালিত হতো। ইসলামের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বে নির্মিত হয়েছে বহু মসজিদ। পৃথিবীর সেরা মসজিদগুলোর নির্মাণশৈলী ও ইতিহাস নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহের শেষ নেই। মুসলমানদের প্রধান উপাসনালয় মসজিদ হলেও প্রতিটি দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির ছাপ পড়েছে মসজিদের নির্মাণশৈলীতে।

নির্মাণশৈলীতে অনন্য বিশ্বের ১০টি মসজিদ নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন-

১.কাবা শরীফ

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ হিসেবে পরিচিত মসজিদুল হারাম। সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ৮৮.২একর জায়গার উপর পবিত্র স্থান কাবাকে ঘিরে এর অবস্থান। ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান কাবা শরীফ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই মসজিদে প্রায় ৯ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। হজের সময় মুসল্লিদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ লাখে। সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ ১৯৫৫ সালের পর মসজিদটির অনেক সংস্কার করেন। তারপর বাদশাহ ফাহাদ পবিত্র হারাম শরিফের বাইরের দিক সংস্কারের পরিকল্পনা করেন। সেই কাজ এখনো চলছে।

২.মসজিদে নববি

৬২২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর নিজ হাতে নির্মিত হয় মসজিদে নববি। নবির মসজিদ নামে খ্যাত এই মসজিদই ছিল রাসুল সাঃ এর বাসস্থান। মসজিদে নববি সৌদি আরবের মদিনা শহরে অবস্থিত। ছয় লাখ মুসল্লি একসঙ্গে মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারেন। হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর রওজা মোবারক সংলগ্ন হওয়ায় পবিত্র হজের সময় প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করার রেকর্ড রয়েছে মসজিদটিতে। মসজিদে ১০টি মিনার রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু মিনারটির উচ্চতা ১০৫ মিটার। হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর রওজা মোবারকের পাশাপাশি মসজিদের এক অংশে রয়েছে ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর রাঃ ও দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাঃ এর রওজা মোবারকও।

৩.হারামে ইমাম রেজা

হারামে ইমাম রেজা মসজিদটি ইমাম রেজা মসজিদ নামেই বেশি পরিচিত কারণ শিয়া সম্প্রদায়ের ১২ ইমামের মধ্যে অষ্টম ইমাম ইমাম রেজা মসজিদটি নির্মাণ করেন।এর অবস্থান ইরানের খোরাসান প্রদেশের রাজধানী মসনদে। ৮১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদটি প্রায় ৩১ হাজার ৫৭৮ বর্গকিলোমিটার জায়গার উপর অবস্থিত, যাতে একত্রে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির আটটি মিনারের মধ্যে সর্বোচ্চ মিনারের উচ্চতা ৪১ মিটার।

৪. ইসতিকলাল মসজিদ

দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ ইসতিকলাল মসজিদের অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ এটি। ১৯৪৯ সালে নেদারল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর তৎকালীন সরকার একটি জাতীয় মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেন। মসজিদটি ১৭ বছরের ব্যবধানে নির্মিত হয় যার নির্মাণ ব্যয় ১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার। মসজিদটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুহার্তো।১৯৭৮ সালের ২২ শে ফেব্রুয়ারি ইসতিকলাল মসজিদ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

৫.ফয়সাল মসজিদ

পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ মসজিদ ফয়সাল মসজিদ অবস্থিত পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। পাকিস্তানের জাতীয় মসজিদ হিসেবে খ্যাত ফয়সাল মসজিদটি দেখতে অনেকটা মরুভূমির বুকে বেদুইনদের তাবুর মতো। ১৯৮৬ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এর নির্মাণ ব্যয় বহন করেন সৌদি বাদশাহ ফয়সাল। তার নামানুসারে মসজিদের নামকরণ করা হয় ফয়সাল মসজিদ। ১২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যয়ে নির্মিত মসজিদের ভেতরে জায়গা রয়েছে ৫৪ হাজার স্কয়ার ফিট।৩০০ ফিট উচ্চতার সুন্দর চারটি মিনার মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

৬.মসজিদুল হাসান-আল শানী

স্থানীয়দের কাছে ক্যাসাবালাঙ্কা হাজ বা হাসান মসজিদ নামে পরিচিত মসজিদুল হাসান-আল শানী। মসজিদটির অবস্থান মরক্কোর সবচেয়ে বড় শহর ক্যাসাবালঙ্কায় আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে। অনেকটা মোগল স্থাপত্যের ছাপবিশিষ্ট মসজিদটি প্রায় ২১ হাজার বর্গকিলোমিটার জমির উপর অবস্থিত। এখানে একসঙ্গে ৪১ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

৭.তাজুল মসজিদ

ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ তাজুল মসজিদ নির্মাণ করেন মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর এর শাসনামলে নবাব শাহ জাহান বেগম। যদিও তিনি এর পুরো কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। পরবর্তীতে তার মেয়ে সুলতানা জাহান বেগম নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেন। ১৯৭১ সালে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন আল্লামা মুহাম্মদ ইমরান খান নদভী আজহারি ও মাওলানা সাইয়্যেদ হাসমত আলী। ১৯৮৫ সালে নির্মিত এই মসজিদে তিনটি গম্বুজ ও সুউচ্চ দুটি মিনার রয়েছে। মসজিদের বাইরে ও ভেতরে একসঙ্গে ৭৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

৮.বাদশাহী মসজিদ

১৬৭১-১৬৭৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের লাহোরে বাদশাহী মসজিদটি নির্মাণ করেন মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। সামনের বিস্তৃত চত্বরসহ মসজিদটির আয়তন প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার স্কয়ারফিট। যাতে তিনটি গম্বুজ ও ১৯৬ ফিট উচ্চতার সুদৃশ্য মিনার রয়েছে। মূল ফটকে পৌছাতে মুসল্লিদের পার হতে হয় সিঁড়ির ২২টি ধাপ।

৯.শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদ

বিশ্বের সেরা ১০ টি মসজিদের মধ্যে অন্যতম শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদ আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবস্থিত। মসজিদটির নির্মাণকাল ১৯৯৬-২০০৭। আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদটি ৩০ একর জায়গার উপর নির্মিত। প্রায় তিন হাজারের ও বেশি শ্রমিক মিলে তৈরি করা এই মসজিদে রয়েছে ২৭৯ ফিট উচ্চতার বিভিন্ন আকারের সাতটি গম্বুজ ও ৩৫১ ফিট উচ্চতার চারটি মিনার। মসজিদটিতে ৪১ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

১০.মসজিদ সালাহ মালাকা

মালাক্কা প্রণালী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মালয় উপদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপ্রণালী। মালাক্কার বিখ্যাত স্থাপনার নাম মসজিদ সালাহ মালাকা। মসজিদটি সমুদ্রপাড়ে অবস্থিত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, মসজিদটি যেন পানিতে ভাসছে। প্রাচীন স্থাপত্যের নকশার অনুকরণে মসজিদটি নির্মিত। ২০০৬ সালের ২৪ নভেম্বর মসজিদটি নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়। মসজিদ সংলগ্ন বিশাল উঁচু মিনার, সুপরিসর বাগান, পার্কিং ও সামনের খোলা জায়গাজুড়ে দেখা মেলে পযর্টকদের। সুসজ্জিত মসজিদে রয়েছে নারীদের আলাদা নামাজের জায়গা। মসজিদের বিশাল কাঠের মিম্বর ও বড় সাইজের সিলিং ফ্যান এই মসজিদের বিশেষত্ব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নির্মাণশৈলীতে অনন্য বিশ্বের ১০ মসজিদ

আপডেট টাইম : ১০:৫০:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানরা একত্র হয়ে প্রাত্যাহিক সালাত আদায় করেন তাই মসজিদ। মসজিদ শুধু ইবাদতের স্থান বা প্রার্থণালয় নয় মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র। ইসলামি শাসনামলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মকান্ড মসজিদ থেকে পরিচালিত হতো। ইসলামের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বে নির্মিত হয়েছে বহু মসজিদ। পৃথিবীর সেরা মসজিদগুলোর নির্মাণশৈলী ও ইতিহাস নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহের শেষ নেই। মুসলমানদের প্রধান উপাসনালয় মসজিদ হলেও প্রতিটি দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির ছাপ পড়েছে মসজিদের নির্মাণশৈলীতে।

নির্মাণশৈলীতে অনন্য বিশ্বের ১০টি মসজিদ নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন-

১.কাবা শরীফ

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ হিসেবে পরিচিত মসজিদুল হারাম। সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ৮৮.২একর জায়গার উপর পবিত্র স্থান কাবাকে ঘিরে এর অবস্থান। ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান কাবা শরীফ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই মসজিদে প্রায় ৯ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। হজের সময় মুসল্লিদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ লাখে। সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ ১৯৫৫ সালের পর মসজিদটির অনেক সংস্কার করেন। তারপর বাদশাহ ফাহাদ পবিত্র হারাম শরিফের বাইরের দিক সংস্কারের পরিকল্পনা করেন। সেই কাজ এখনো চলছে।

২.মসজিদে নববি

৬২২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর নিজ হাতে নির্মিত হয় মসজিদে নববি। নবির মসজিদ নামে খ্যাত এই মসজিদই ছিল রাসুল সাঃ এর বাসস্থান। মসজিদে নববি সৌদি আরবের মদিনা শহরে অবস্থিত। ছয় লাখ মুসল্লি একসঙ্গে মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারেন। হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর রওজা মোবারক সংলগ্ন হওয়ায় পবিত্র হজের সময় প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করার রেকর্ড রয়েছে মসজিদটিতে। মসজিদে ১০টি মিনার রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু মিনারটির উচ্চতা ১০৫ মিটার। হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর রওজা মোবারকের পাশাপাশি মসজিদের এক অংশে রয়েছে ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর রাঃ ও দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাঃ এর রওজা মোবারকও।

৩.হারামে ইমাম রেজা

হারামে ইমাম রেজা মসজিদটি ইমাম রেজা মসজিদ নামেই বেশি পরিচিত কারণ শিয়া সম্প্রদায়ের ১২ ইমামের মধ্যে অষ্টম ইমাম ইমাম রেজা মসজিদটি নির্মাণ করেন।এর অবস্থান ইরানের খোরাসান প্রদেশের রাজধানী মসনদে। ৮১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদটি প্রায় ৩১ হাজার ৫৭৮ বর্গকিলোমিটার জায়গার উপর অবস্থিত, যাতে একত্রে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির আটটি মিনারের মধ্যে সর্বোচ্চ মিনারের উচ্চতা ৪১ মিটার।

৪. ইসতিকলাল মসজিদ

দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ ইসতিকলাল মসজিদের অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ এটি। ১৯৪৯ সালে নেদারল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর তৎকালীন সরকার একটি জাতীয় মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেন। মসজিদটি ১৭ বছরের ব্যবধানে নির্মিত হয় যার নির্মাণ ব্যয় ১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার। মসজিদটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুহার্তো।১৯৭৮ সালের ২২ শে ফেব্রুয়ারি ইসতিকলাল মসজিদ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

৫.ফয়সাল মসজিদ

পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ মসজিদ ফয়সাল মসজিদ অবস্থিত পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। পাকিস্তানের জাতীয় মসজিদ হিসেবে খ্যাত ফয়সাল মসজিদটি দেখতে অনেকটা মরুভূমির বুকে বেদুইনদের তাবুর মতো। ১৯৮৬ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এর নির্মাণ ব্যয় বহন করেন সৌদি বাদশাহ ফয়সাল। তার নামানুসারে মসজিদের নামকরণ করা হয় ফয়সাল মসজিদ। ১২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যয়ে নির্মিত মসজিদের ভেতরে জায়গা রয়েছে ৫৪ হাজার স্কয়ার ফিট।৩০০ ফিট উচ্চতার সুন্দর চারটি মিনার মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

৬.মসজিদুল হাসান-আল শানী

স্থানীয়দের কাছে ক্যাসাবালাঙ্কা হাজ বা হাসান মসজিদ নামে পরিচিত মসজিদুল হাসান-আল শানী। মসজিদটির অবস্থান মরক্কোর সবচেয়ে বড় শহর ক্যাসাবালঙ্কায় আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে। অনেকটা মোগল স্থাপত্যের ছাপবিশিষ্ট মসজিদটি প্রায় ২১ হাজার বর্গকিলোমিটার জমির উপর অবস্থিত। এখানে একসঙ্গে ৪১ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

৭.তাজুল মসজিদ

ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ তাজুল মসজিদ নির্মাণ করেন মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর এর শাসনামলে নবাব শাহ জাহান বেগম। যদিও তিনি এর পুরো কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। পরবর্তীতে তার মেয়ে সুলতানা জাহান বেগম নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেন। ১৯৭১ সালে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন আল্লামা মুহাম্মদ ইমরান খান নদভী আজহারি ও মাওলানা সাইয়্যেদ হাসমত আলী। ১৯৮৫ সালে নির্মিত এই মসজিদে তিনটি গম্বুজ ও সুউচ্চ দুটি মিনার রয়েছে। মসজিদের বাইরে ও ভেতরে একসঙ্গে ৭৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

৮.বাদশাহী মসজিদ

১৬৭১-১৬৭৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের লাহোরে বাদশাহী মসজিদটি নির্মাণ করেন মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। সামনের বিস্তৃত চত্বরসহ মসজিদটির আয়তন প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার স্কয়ারফিট। যাতে তিনটি গম্বুজ ও ১৯৬ ফিট উচ্চতার সুদৃশ্য মিনার রয়েছে। মূল ফটকে পৌছাতে মুসল্লিদের পার হতে হয় সিঁড়ির ২২টি ধাপ।

৯.শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদ

বিশ্বের সেরা ১০ টি মসজিদের মধ্যে অন্যতম শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদ আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবস্থিত। মসজিদটির নির্মাণকাল ১৯৯৬-২০০৭। আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদটি ৩০ একর জায়গার উপর নির্মিত। প্রায় তিন হাজারের ও বেশি শ্রমিক মিলে তৈরি করা এই মসজিদে রয়েছে ২৭৯ ফিট উচ্চতার বিভিন্ন আকারের সাতটি গম্বুজ ও ৩৫১ ফিট উচ্চতার চারটি মিনার। মসজিদটিতে ৪১ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

১০.মসজিদ সালাহ মালাকা

মালাক্কা প্রণালী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মালয় উপদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপ্রণালী। মালাক্কার বিখ্যাত স্থাপনার নাম মসজিদ সালাহ মালাকা। মসজিদটি সমুদ্রপাড়ে অবস্থিত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, মসজিদটি যেন পানিতে ভাসছে। প্রাচীন স্থাপত্যের নকশার অনুকরণে মসজিদটি নির্মিত। ২০০৬ সালের ২৪ নভেম্বর মসজিদটি নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়। মসজিদ সংলগ্ন বিশাল উঁচু মিনার, সুপরিসর বাগান, পার্কিং ও সামনের খোলা জায়গাজুড়ে দেখা মেলে পযর্টকদের। সুসজ্জিত মসজিদে রয়েছে নারীদের আলাদা নামাজের জায়গা। মসজিদের বিশাল কাঠের মিম্বর ও বড় সাইজের সিলিং ফ্যান এই মসজিদের বিশেষত্ব।