ঢাকা ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে, আজ বসন্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
  • ৬৩৪ বার

শীতের হাওয়ার নাচন থামতে না থামতে ঋতুরাজ এসে হানা দেয় ঘরে-মনে, অশান্ত মনকে জানান দেয়, বেঁচে আছো এখনও প্রেমে আর গানে। আজ শনিবার, ১৪২২ বঙ্গাব্দের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিন। আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুচক্র এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না ঠিকই, কিন্তু বসন্ত তার আগমনী জানান দেয় ইট-কাঠ পাথরের ঢাকায় কোকিলের ডাক না শোনা গেলেও-এর বাতাসে, এর আকাশে।

সকালের দিকে তীব্র কুয়াশা আর একটু বেলা যেতে ঝকঝকে রোদ। বসন্তের এই আবহে চাদরমোড়া শীতকে বিদায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গত কয়েকদিনে। ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিনে ভালবাসা দিবস সেই উৎসবকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। পরপর দু’দিনের তারুণ্যে মেলা যেন নতুন প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

বাঙালির জীবনে বসন্তের উপস্থিতি সেই অনাদিকাল থেকেই। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই করে নিয়েছে স্বমহিমায়। আর শহুরে বসন্তেও যেন সেই আত্মীয়তা থাকে। কানে কানে বলে যায়, আজ ভুলিয়ো আপন পর ভুলিয়ো। ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই প্রাণচঞ্চলতা। কচিপাতায় আলোর নাচন। বাঙালি জীবনে বসন্ত আর আন্দোলন যেন মিলেমিশে একাকার। বসন্তের আগমন বার্তা ১৯৫২ সালের সেই ফাল্গুন মনে করিয়ে দেয় যেদিন পিচঢালা রাজপথে লাল ফুল হয়ে ভাষা শহীদেরা নিহত হয়েছিলেন শাসকের গুলিতে। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পথে নেমেছিল। বসন্ত মনে করিয়ে দিয়ে যায় এ প্রজন্ম ২০১৩ সালে জেগে উঠেছিল ফাগুনে গণজাগরণে। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়,বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে বারবার।

গত দুই বসন্ত ছিলো এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়। বসন্ত মানেই যেখানে নতুন প্রাণের কলরব, সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা অনেকটায় ম্লান করে দিয়েছিল। এবার অন্যরকম বসন্ত উদযাপনের অপেক্ষায় আছে বাঙালি মন। ছুটির দিনে বর্ণিল পোশাক আর ফুলের বর্ণচ্ছটা গায়ে মাখিয়ে তরুণ-তরুণীরা বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, চারুকলার বকুলতলা মাতিয়ে রাখবে।

আজ এই বসন্তবরণকে নিয়ে রাজধানী নানা রঙে সেজেছে। দিনটির শুরু চারুকলার বকুলতলায় প্রথম প্রভাতে বরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। দিনভর চলবে নানা উৎসব। দিনটি উপলক্ষে এবার রমনা পার্কের মাধবী চত্বরে মাধবী উৎসবের আয়োজন করেছে প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন তরুপল্লব। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে এ উৎসব। উৎসবে উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা, কথাশিল্পী বিপ্রদাশ বড়ুয়া,পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক এবং নিসর্গী মোকারম হোসেনসহ তরুপল্লবের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীদের মাধবীসহ বসন্তের ফুল ও গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা।-বাংলা ট্রিবিউন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে, আজ বসন্ত

আপডেট টাইম : ০৮:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

শীতের হাওয়ার নাচন থামতে না থামতে ঋতুরাজ এসে হানা দেয় ঘরে-মনে, অশান্ত মনকে জানান দেয়, বেঁচে আছো এখনও প্রেমে আর গানে। আজ শনিবার, ১৪২২ বঙ্গাব্দের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিন। আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুচক্র এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না ঠিকই, কিন্তু বসন্ত তার আগমনী জানান দেয় ইট-কাঠ পাথরের ঢাকায় কোকিলের ডাক না শোনা গেলেও-এর বাতাসে, এর আকাশে।

সকালের দিকে তীব্র কুয়াশা আর একটু বেলা যেতে ঝকঝকে রোদ। বসন্তের এই আবহে চাদরমোড়া শীতকে বিদায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গত কয়েকদিনে। ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিনে ভালবাসা দিবস সেই উৎসবকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। পরপর দু’দিনের তারুণ্যে মেলা যেন নতুন প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

বাঙালির জীবনে বসন্তের উপস্থিতি সেই অনাদিকাল থেকেই। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই করে নিয়েছে স্বমহিমায়। আর শহুরে বসন্তেও যেন সেই আত্মীয়তা থাকে। কানে কানে বলে যায়, আজ ভুলিয়ো আপন পর ভুলিয়ো। ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই প্রাণচঞ্চলতা। কচিপাতায় আলোর নাচন। বাঙালি জীবনে বসন্ত আর আন্দোলন যেন মিলেমিশে একাকার। বসন্তের আগমন বার্তা ১৯৫২ সালের সেই ফাল্গুন মনে করিয়ে দেয় যেদিন পিচঢালা রাজপথে লাল ফুল হয়ে ভাষা শহীদেরা নিহত হয়েছিলেন শাসকের গুলিতে। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পথে নেমেছিল। বসন্ত মনে করিয়ে দিয়ে যায় এ প্রজন্ম ২০১৩ সালে জেগে উঠেছিল ফাগুনে গণজাগরণে। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়,বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে বারবার।

গত দুই বসন্ত ছিলো এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়। বসন্ত মানেই যেখানে নতুন প্রাণের কলরব, সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা অনেকটায় ম্লান করে দিয়েছিল। এবার অন্যরকম বসন্ত উদযাপনের অপেক্ষায় আছে বাঙালি মন। ছুটির দিনে বর্ণিল পোশাক আর ফুলের বর্ণচ্ছটা গায়ে মাখিয়ে তরুণ-তরুণীরা বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, চারুকলার বকুলতলা মাতিয়ে রাখবে।

আজ এই বসন্তবরণকে নিয়ে রাজধানী নানা রঙে সেজেছে। দিনটির শুরু চারুকলার বকুলতলায় প্রথম প্রভাতে বরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। দিনভর চলবে নানা উৎসব। দিনটি উপলক্ষে এবার রমনা পার্কের মাধবী চত্বরে মাধবী উৎসবের আয়োজন করেছে প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন তরুপল্লব। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে এ উৎসব। উৎসবে উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা, কথাশিল্পী বিপ্রদাশ বড়ুয়া,পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক এবং নিসর্গী মোকারম হোসেনসহ তরুপল্লবের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীদের মাধবীসহ বসন্তের ফুল ও গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা।-বাংলা ট্রিবিউন