ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফাগুনের উৎসবে মজবে বাঙালি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
  • ৩৬৯ বার

ফাগুনের আগুন যে মনে ধরছে, তা গত কয়েক দিনের প্রকৃতির চিত্রপট থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। মৃদু মৃদু বাতাস শীতের রুক্ষতা দূর করে মনকে উদাস করে দিচ্ছিল। হালকা বৃষ্টিও হয়েছে দেশব্যাপী, যা কি না বলে শীত ‘তাড়ানো বৃষ্টি’।

বছর ঘুরে আবারো ফাল্গুনের দেখা। ষড় ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রং তুলির আঁচরে শেষ হয় না। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতিপ্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত থাকে না।

আজ ১লা ফাল্গুন। প্রকৃতি সাজবে তার নতুর রূপে। গাছে গাছে ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক, বসন্ত তার নিজস্ব রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে।

বাঙলির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও বটে। দিন-ক্ষণ গুণে গুণে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি। কালের পরিক্রমায় বসন্ত বরণ আজ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব।

আবাল-বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী বসন্ত উম্মাদনায় আজকে মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যাবে রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসবে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতা।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও।

তরুণীরা বাসন্তী রংয়ের শাড়ি পরে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সপে দিতে চাইবে। অপরদিকে বসন্তের উদাস হাওয়ায় তরুণেরা নিজেকে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির মন কাড়তে চাইবে। বসন্ত যেন মানব মন আর প্রকৃতির রূপ প্রকাশের লীলা-খেলা।

বসন্ত উৎসব বলি আর বরণই বলি, এটি মিশে আছে একেবারে আবহমান গ্রাম বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে। শ্যামলী বাংলার গাছ গাছালিতে পত্রপল্লবের নতুন কুড়ি যেন গ্রামীণ মানুষের অন্তরকে আরও শুভ্র করে, করে পবিত্রও।

তবে বসন্ত উৎসব আজ গ্রামীণ আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। শহুরে মানুষের কাছেও বসন্তের আবেদন ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে শহরের তরুণ-তরুণীরা বসন্ত বরণে দিরভর ব্যস্ত থাকে। ফুলে ফুলে ভরে যাবে তরুণীর চুলের খোপা। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বসবে খাবারের মেলা।

এদিন দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের পদচারণায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। বসন্তের আগমনে নব উদ্যমে জেগে উঠুক বাঙালির প্রাণ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফাগুনের উৎসবে মজবে বাঙালি

আপডেট টাইম : ১১:০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

ফাগুনের আগুন যে মনে ধরছে, তা গত কয়েক দিনের প্রকৃতির চিত্রপট থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। মৃদু মৃদু বাতাস শীতের রুক্ষতা দূর করে মনকে উদাস করে দিচ্ছিল। হালকা বৃষ্টিও হয়েছে দেশব্যাপী, যা কি না বলে শীত ‘তাড়ানো বৃষ্টি’।

বছর ঘুরে আবারো ফাল্গুনের দেখা। ষড় ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রং তুলির আঁচরে শেষ হয় না। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতিপ্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত থাকে না।

আজ ১লা ফাল্গুন। প্রকৃতি সাজবে তার নতুর রূপে। গাছে গাছে ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক, বসন্ত তার নিজস্ব রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে।

বাঙলির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও বটে। দিন-ক্ষণ গুণে গুণে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি। কালের পরিক্রমায় বসন্ত বরণ আজ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব।

আবাল-বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী বসন্ত উম্মাদনায় আজকে মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যাবে রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসবে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতা।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও।

তরুণীরা বাসন্তী রংয়ের শাড়ি পরে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সপে দিতে চাইবে। অপরদিকে বসন্তের উদাস হাওয়ায় তরুণেরা নিজেকে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির মন কাড়তে চাইবে। বসন্ত যেন মানব মন আর প্রকৃতির রূপ প্রকাশের লীলা-খেলা।

বসন্ত উৎসব বলি আর বরণই বলি, এটি মিশে আছে একেবারে আবহমান গ্রাম বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে। শ্যামলী বাংলার গাছ গাছালিতে পত্রপল্লবের নতুন কুড়ি যেন গ্রামীণ মানুষের অন্তরকে আরও শুভ্র করে, করে পবিত্রও।

তবে বসন্ত উৎসব আজ গ্রামীণ আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। শহুরে মানুষের কাছেও বসন্তের আবেদন ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে শহরের তরুণ-তরুণীরা বসন্ত বরণে দিরভর ব্যস্ত থাকে। ফুলে ফুলে ভরে যাবে তরুণীর চুলের খোপা। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বসবে খাবারের মেলা।

এদিন দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের পদচারণায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। বসন্তের আগমনে নব উদ্যমে জেগে উঠুক বাঙালির প্রাণ।