বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন করা। সেই উন্নয়নের লক্ষ্য সামনে নিয়ে আমরা অর্থনৈতিক নীতিমালা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৩১৬ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আমাদের দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। আমরা ১২৩ ভাগ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি করেছি। বাংলাদেশ আজ নিন্ম মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৬তম জাতীয় সমাবেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

একই সঙ্গে বর্তমান সরকারকে সামগ্রিক উন্নয়নবান্ধব সরকার বলেও অভিহিত করের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশের সর্বত্র সড়ক ও রেল যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। দেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু এবং প্রথমবারের মতো কর্ণফুলি নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ সামগ্রিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বাক্ষর বহন করে।

তিনি বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ ছাড়াও টঙ্গী-ভৈরব ও লাকসাম-চিংকিয়াস্তানার মধ্যে দ্বিতীয় রেললাইন স্থাপন যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেছে। শীঘ্রই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শেষ হবে।

এছাড়া একই রুটে এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আগামীতে ঢাকা-সিলেট মহসড়ক চার লেনে উন্নীত করব আমরা। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। রেলকে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। সমগ্র বাংলাদেশে রেল নেটওর্য়াক আমরা তৈরি করছি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংস্বম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। পাশাপাশি গত সাত বছরে ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এ বছরের ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। প্রাথমিক থেকে ডিগ্রী পর্যন্ত আমাদের প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। মানুষ বিনামূল্যে ৩২ ধরনের ‍ওষুধ পাচ্ছেন। ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ২০০ ধরনের ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। বাংলাদেশ কখনই নিচে থাকতে চায় না। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। অচিরেই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্রের হার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে দেড় কোটি মানুষের চাকরি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন (দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলার) ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের আর কারও কাছে হাত পেতে চলতে হবে না।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নাজিম উদ্দীন, পুলিশের আইজি মো. শহীদুল হক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারন অর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান। পরে তিনি খোলা জিপে চড়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ ও গ্যালারি ডিসপ্লে পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৭৯ জন আনসার-ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদক ও বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপি পদক বিতরণ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর