ঢাকা ১১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুটি অনভিপ্রেত ঘটনা আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে হবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ২০১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটে দুটি বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বরিশালের ঘটনার সূত্রপাত রূপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায়।

সেখানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের স্টাফরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত এবং এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

ঘটনার একপর্যায়ে শ্রমিকরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থীকে আহত করে। এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৬টা থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশালের সঙ্গে অন্যান্য জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগও করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে বিকালে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। ওদিকে সিলেটে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা নিয়ে পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ২০টি গাড়ি। আগামী সোমবারের মধ্যে স্ট্যান্ডের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘট পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, সিসিকের উন্নয়ন কাজে বাধা দিতেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে পরিবহণ শ্রমিকরা। ওদিকে শ্রমিকদের দাবি-বিকল্প স্থান না দিয়েই সিসিক তাদের উচ্ছেদ করতে গেলে তারা বাধা দিয়েছে।

বরিশাল ও সিলেটে সংঘর্ষের ঘটনা দুটি শুধু দুঃখজনক নয়, অনভিপ্রেতও বটে। লক্ষ করা যাচ্ছে, উভয় ঘটনায় পরিবহণ শ্রমিকরা ছিল একটি পক্ষ। সংঘর্ষের সূত্রপাতও করেছে তারা। বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত এবং এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত না করা হলে ঘটনা এতদূর গড়াত না।

অন্যদিকে সিলেটে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে গেলে পরিবহণ শ্রমিকরা যদি তাতে আক্রমণাত্মকভাবে বাধা না দিত, তাহলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটা সিদ্ধান্তে আসা যেত। পরিবহণ শ্রমিকরা একটি সংঘবদ্ধ শক্তি আর এই শক্তির জোরেই বিভিন্ন সময়ে তাদের সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা যায়।

কথায় কথায় তারা পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং তা পালনও করে। পরিবহণ শ্রমিকদের এ সংস্কৃতি কখনো কখনো রক্তপাত ঘটায়, কখনো বা সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ। আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং কোনো সংঘবদ্ধ অপশক্তির কাছে নতি স্বীকার করবে না।

বরিশালের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দ্বারা বেআইনি কোনো কাজ সংঘটিত হয়ে থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। সবশেষ কথা, সমাজের সব পক্ষকেই উন্মত্ত আচরণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দুটি অনভিপ্রেত ঘটনা আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে হবে

আপডেট টাইম : ১০:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটে দুটি বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বরিশালের ঘটনার সূত্রপাত রূপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায়।

সেখানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের স্টাফরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত এবং এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

ঘটনার একপর্যায়ে শ্রমিকরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থীকে আহত করে। এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৬টা থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশালের সঙ্গে অন্যান্য জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগও করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে বিকালে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। ওদিকে সিলেটে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা নিয়ে পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ২০টি গাড়ি। আগামী সোমবারের মধ্যে স্ট্যান্ডের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘট পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, সিসিকের উন্নয়ন কাজে বাধা দিতেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে পরিবহণ শ্রমিকরা। ওদিকে শ্রমিকদের দাবি-বিকল্প স্থান না দিয়েই সিসিক তাদের উচ্ছেদ করতে গেলে তারা বাধা দিয়েছে।

বরিশাল ও সিলেটে সংঘর্ষের ঘটনা দুটি শুধু দুঃখজনক নয়, অনভিপ্রেতও বটে। লক্ষ করা যাচ্ছে, উভয় ঘটনায় পরিবহণ শ্রমিকরা ছিল একটি পক্ষ। সংঘর্ষের সূত্রপাতও করেছে তারা। বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত এবং এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত না করা হলে ঘটনা এতদূর গড়াত না।

অন্যদিকে সিলেটে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে গেলে পরিবহণ শ্রমিকরা যদি তাতে আক্রমণাত্মকভাবে বাধা না দিত, তাহলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটা সিদ্ধান্তে আসা যেত। পরিবহণ শ্রমিকরা একটি সংঘবদ্ধ শক্তি আর এই শক্তির জোরেই বিভিন্ন সময়ে তাদের সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা যায়।

কথায় কথায় তারা পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং তা পালনও করে। পরিবহণ শ্রমিকদের এ সংস্কৃতি কখনো কখনো রক্তপাত ঘটায়, কখনো বা সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ। আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং কোনো সংঘবদ্ধ অপশক্তির কাছে নতি স্বীকার করবে না।

বরিশালের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দ্বারা বেআইনি কোনো কাজ সংঘটিত হয়ে থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। সবশেষ কথা, সমাজের সব পক্ষকেই উন্মত্ত আচরণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।