ঢাকা ১২:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনগণকে কতটুকু দিয়েছি, তার হিসেবের সময় এখন: রাষ্ট্রপতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ২৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থের কথা আগে ভাবেন দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, জনগণের জন্য রাজনৈতিক নেতারা কী করেছে, তার হিসেব করার সময় এখন।

সোমবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বরিশাল রাডার ইউনিট এবং হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধু তার সমাপনী ভাষণে মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন,‍ ‌‌‌‌‌‌‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‍‍‌‌‍‌‌‌‍‌‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘যারা তোমায় মাহিনা দেয়, তোমার সংসার চালায়, ট্যাক্স দেয়, তার কাছে তুমি আবার পয়সা খাও! মেন্টালিটি চেঞ্জ করতে হবে। সরকারি কর্মচারী, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট-আমরা জনগণের সেবক, আমরা জনগণের মাস্টার নই। এই মেন্টালিটি আমাদের চেঞ্জ করতে হবে। আর যাদের পয়সায় আমাদের সংসার চলে, যাদের পয়সায় আমাদের রাষ্ট্র চলে, যাদের পয়সার আমরা গাড়ি চড়ি, আমরা কার্পেট ব্যবহার করি, তাদের জন্য কী করলাম- সেটাই আজ বড় জিনিস’।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আবদুল হামিদ বলেন, দেশের জনগণ আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, সর্বোপরি দেশের যে কোনো প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন সময় এসেছে আমরা তাদের জন্য কতটুকু করেছি বা করছি, তা হিসেব করার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ আমরা বলি, আমরা কী পেলাম। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সবসময়ই দেখেছি, তিনি নিজে যা বিশ্বাস করতেন, তাই বলতেন। নিজের বা পরিবারের কথা না ভেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণই ছিল তার সকল চিন্তা-চেতনায়।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, মনে রাখবেন, আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হলেও এদেশেরই সন্তান। দেশের জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই আপনারাও দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার। তাই পেশাদারিত্বের নিপুণতা বজায় রাখার পাশাপাশি জনগণের প্রয়োজনে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। এবছর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এটাই হোক সকলের চাওয়া পাওয়া।

বরিশালে রাডার ইউনিটের গুরুত্ব তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থান, বিশাল সমুদ্রসীমার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরাপত্তা বিধান, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত ও সহজতর করতে এবং এই অঞ্চলের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বরিশাল রাডার ইউনিট স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আশা করি, নতুন অন্তর্ভুক্ত রাডার বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রাঞ্চল তথা সমগ্র মহীসোপান এলাকায় টহলরত বিমানসমূহকে সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদান করতে এবং তাদের চলাচল ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফলক উন্মোচন করেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জনগণকে কতটুকু দিয়েছি, তার হিসেবের সময় এখন: রাষ্ট্রপতি

আপডেট টাইম : ০৮:২২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থের কথা আগে ভাবেন দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, জনগণের জন্য রাজনৈতিক নেতারা কী করেছে, তার হিসেব করার সময় এখন।

সোমবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বরিশাল রাডার ইউনিট এবং হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধু তার সমাপনী ভাষণে মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন,‍ ‌‌‌‌‌‌‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‍‍‌‌‍‌‌‌‍‌‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘যারা তোমায় মাহিনা দেয়, তোমার সংসার চালায়, ট্যাক্স দেয়, তার কাছে তুমি আবার পয়সা খাও! মেন্টালিটি চেঞ্জ করতে হবে। সরকারি কর্মচারী, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট-আমরা জনগণের সেবক, আমরা জনগণের মাস্টার নই। এই মেন্টালিটি আমাদের চেঞ্জ করতে হবে। আর যাদের পয়সায় আমাদের সংসার চলে, যাদের পয়সায় আমাদের রাষ্ট্র চলে, যাদের পয়সার আমরা গাড়ি চড়ি, আমরা কার্পেট ব্যবহার করি, তাদের জন্য কী করলাম- সেটাই আজ বড় জিনিস’।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আবদুল হামিদ বলেন, দেশের জনগণ আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, সর্বোপরি দেশের যে কোনো প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন সময় এসেছে আমরা তাদের জন্য কতটুকু করেছি বা করছি, তা হিসেব করার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ আমরা বলি, আমরা কী পেলাম। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সবসময়ই দেখেছি, তিনি নিজে যা বিশ্বাস করতেন, তাই বলতেন। নিজের বা পরিবারের কথা না ভেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণই ছিল তার সকল চিন্তা-চেতনায়।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, মনে রাখবেন, আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হলেও এদেশেরই সন্তান। দেশের জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই আপনারাও দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার। তাই পেশাদারিত্বের নিপুণতা বজায় রাখার পাশাপাশি জনগণের প্রয়োজনে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। এবছর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এটাই হোক সকলের চাওয়া পাওয়া।

বরিশালে রাডার ইউনিটের গুরুত্ব তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থান, বিশাল সমুদ্রসীমার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরাপত্তা বিধান, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত ও সহজতর করতে এবং এই অঞ্চলের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বরিশাল রাডার ইউনিট স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আশা করি, নতুন অন্তর্ভুক্ত রাডার বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রাঞ্চল তথা সমগ্র মহীসোপান এলাকায় টহলরত বিমানসমূহকে সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদান করতে এবং তাদের চলাচল ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফলক উন্মোচন করেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত।