দেশের শেয়ারবাজারে সূচকের পতন, এটা পুরোনো খবর। সরকারের নানান উদ্যোগেও ঘুরে দাঁড়ায়নি ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর এ বাজার। পতনের বৃত্তেই ছিল দেশের উভয় শেয়ারবাজার। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের দুই মন্ত্রী ও এক উপদেষ্টার বক্তব্যে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। বক্তব্যের পরের কার্যদিবসগুলোতে বাজারমুখী হতে দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের।
উল্লেখ্য, বুধবার ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ-সংক্রান্ত জটিলতা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
এর পরের দিন বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে। দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি আইটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে। এজন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জরুরি আধুনিকায়ন এবং দেশের বর্তমান টেলিযোগাযোগ নীতিমালা সংশোধন করা হবে।’
বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের পালেও হাওয়া লেগেছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৬০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। যা চলতি বছরে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ডিএসইতে সর্বোচ্চ ৫৬৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। অপরদিকে ১৯ মার্চ সর্বনিম্ন ১৬৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
এর আগের দিন রোববার লেনদেন হয়েছিল ৫২০ কোটি টাকা। ৭৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বেড়ে সোমবার তা হয়েছে ৫৯৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেয়ারবাজার নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সূচক। বাজারমুখী হচ্ছেন সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সোমবার ঢাকার শেয়ারবাজারে চলতি বছরের টাকার অঙ্কে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। বেড়েছে সব ধরনের সূচক ও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর।
আবার কেউ কেউ মনে করছেন, রোববার অর্থমন্ত্রীর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর ঘোষণায় বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এখন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার প্রায় ২ শতাংশ কমিয়ে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এত দিন এ সঞ্চয়পত্র কিনলে সরকার সুদ দিত ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। এসব ইতিবাচক বক্তব্য আর পদক্ষেপের কারণে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার।
এসব বিষয়ে কথা হয় মডার্ন সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী বিউটি বেগমের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ইতিবাচক কথায় আমরা (বিনিয়োগকারীরা) আশান্বিত হচ্ছি। তাদের কথা অনুযায়ী কাজ হলে শেয়াবারবাজার স্থায়ীভাবে স্থিতিশীল হবে।’