বাংলাদেশে ‘বৃক্ষ মানব’ নামে পরিচিত অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত আবুল বাজানদারের রক্ত পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নমুনা পাঠানো হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় বাজানদারের রক্তের নমুনা আজ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। খবর বিবিসির।
আবুল বাজানদারের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য, বার্ন ইউনিটের উপদেষ্টা ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, এক্স-রে এবং রক্ত পরীক্ষাসহ বাজানদারের প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। কিন্তু কিছু পরীক্ষার সুবিধা বাংলাদেশে নেই। সেগুলোর জন্য তার রক্তের নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকায় এই মুহূর্তে মেডিকেল বোর্ড বাজানদারের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে ডায়াগনোসিসে যা বেরিয়ে আসবে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজানদারের একটি সার্জারির পরিকল্পনা মেডিকেল বোর্ডের রয়েছে বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন।
এর আগে বিরল এই বৃক্ষ মানব রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তির চিকিৎসা করেছেন এমন একজন চিকিৎসক ইতোমধ্যে বাজানদারের চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন বলে জানান ডা. সেন।
বিরল রোগের কারণে আবুল বাজানদারের হাত ও পা দেখতে গাছের শেকড়ের মতো হয়ে গেছে। সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মাত্র তিনজন। এদের একজন ইন্দোনেশিয়ায় এবং অপরজন রোমানিয়ার।
পেশায় দিনমজুর আবুল বাজানদারের বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলায়। হতদরিদ্র এই লোকটি গত ১০ বছর ধরে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছেন। ভাইরাসজনিত এক বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত তিনি। এ রোগের কারণে তার দুই হাত থেকে যেন গাছের শিকড় বের হয়ে ঝুলছে। ২০০৫ সালে ১৫ বছর বয়সে আবুল বাজানদারের দেহে প্রথম এ রোগ দেখা দেয়। সে বছর খুলনায় বৃষ্টিপাতে চারদিক ডুবে যায়। থই থই পানির মধ্যে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন আবুল বাজানদার। এক সময় তার হাতে ও পায়ে আঁচিলের মতো দেখা দেয়। সে আঁচিল ১০ বছরে ধীরে ধীরে ‘শিকড়ে’ রূপ নেয়। তার দুই পায়ের কিছু অংশেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। রোগাক্রান্ত শরীরেই আবুল বাজানদার ৫ বছর আগে বিয়ে করেন। তার তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।