ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ দুর্গাপুরে মুক্ত দিবস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৭:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • ১৬৪ বার
বিজয় দাস নেত্রকোনা: আজ ৬ ডিসেম্বর , ঐতিহাসিক দুর্গাপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী এক   লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করে।

পাক হানাদার বাহিনীর মেজর সুলতানের নেতৃত্বে দুর্গাপুরের মিশনারীজ এলাকা বিরিশিরিতে একটি শক্তিশালী পাকসেনা ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল ।

এখানে বসেই পাকসেনারা বাংলার কুখ্যাত দালাল, আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রন করত দুর্গাপুর সদর সহ কলমাকান্দার সীমান্ত এলাকা লেংগুড়া,নাজিরপুর এবং দুর্গাপুরের বিজয়পুর। সেইসাথে রাতের আধাঁরে বিরিশিরির বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো মুক্তিকামী মানুষদের।

যাদের সর্বপ্রথম হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে রয়েছেন, দুর্গাপুর কৃষাণ কলেজের অধ্যক্ষ আরজ আলী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ সান্যাল, এম,কে,সি,এম পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়াল, দুর্গাপুরের তদানিন্তন এম,এন,এ পুরাকান্দুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা, কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলী হোসেন ও আশুতোষ সান্যাল উল্লেখযোগ্য।

দুর্গাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব রুহুল আমীন চুন্নু জানান ,১৯৭১ সালের  ৪ মে ২ জন পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে নারী ধর্ষনের চেষ্টা চালালে ছোট্রুনীর নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা তাদের ধরে কুপিয়ে হত্যা করে। এরই জের ধরে ৫ মে বিরিশিরি ক্যান্টনমেন্ট থেকে এক ঝাঁক পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষ সহ ১৯ জন গ্রামবাসীকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে গুলি করে ও পুড়িয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এ ছাড়া সুসং ডিগ্রী কলেজের ছাত্র দিলদার হোসেন ,কৃষক ইমাম হোসেন ,বিল্লাল হোসেনসহ নাম না জানা আরো অনেককেই হত্যা করা হয়েছিল।

বিজয়পুর সংলগ্ন স্থানে আমাদের সোনার ছেলেরা মুক্তিবাহিনীর একটি ব্রাস ফায়ারে ১০জন পাক সেনাকে হত্যা করে আনন্দ উল্লাসে জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারন করে এগিয়ে আসতে থাকলে ওৎ পেতে থাকা পাক হায়েনাদের গুলি এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সন্তোষ বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করলে  তিনি মারা যান।  তারই নামানুসারে দুর্গাপুর সদরে নির্মিত হয় শহীদ সন্তোষ পার্ক। দুর্গাপুরে মুক্তিযুদ্ধে আরো ২জন শহীদ হয়েছিল  হলেন- সুধীর হাজং ও আব্দুল জব্বার।

দিবসটিকে সামনে রেখে আজ উপজেলা প্রশাসন ,মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট ,দুর্গাপুর প্রেসক্লাব,স্থানীয় সূধীজন ও স্কুল ,কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের শুভ সূচনা র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ দুর্গাপুরে মুক্ত দিবস

আপডেট টাইম : ০৯:৫৭:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
বিজয় দাস নেত্রকোনা: আজ ৬ ডিসেম্বর , ঐতিহাসিক দুর্গাপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী এক   লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করে।

পাক হানাদার বাহিনীর মেজর সুলতানের নেতৃত্বে দুর্গাপুরের মিশনারীজ এলাকা বিরিশিরিতে একটি শক্তিশালী পাকসেনা ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল ।

এখানে বসেই পাকসেনারা বাংলার কুখ্যাত দালাল, আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রন করত দুর্গাপুর সদর সহ কলমাকান্দার সীমান্ত এলাকা লেংগুড়া,নাজিরপুর এবং দুর্গাপুরের বিজয়পুর। সেইসাথে রাতের আধাঁরে বিরিশিরির বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো মুক্তিকামী মানুষদের।

যাদের সর্বপ্রথম হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে রয়েছেন, দুর্গাপুর কৃষাণ কলেজের অধ্যক্ষ আরজ আলী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ সান্যাল, এম,কে,সি,এম পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়াল, দুর্গাপুরের তদানিন্তন এম,এন,এ পুরাকান্দুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা, কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলী হোসেন ও আশুতোষ সান্যাল উল্লেখযোগ্য।

দুর্গাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব রুহুল আমীন চুন্নু জানান ,১৯৭১ সালের  ৪ মে ২ জন পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে নারী ধর্ষনের চেষ্টা চালালে ছোট্রুনীর নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা তাদের ধরে কুপিয়ে হত্যা করে। এরই জের ধরে ৫ মে বিরিশিরি ক্যান্টনমেন্ট থেকে এক ঝাঁক পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষ সহ ১৯ জন গ্রামবাসীকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে গুলি করে ও পুড়িয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এ ছাড়া সুসং ডিগ্রী কলেজের ছাত্র দিলদার হোসেন ,কৃষক ইমাম হোসেন ,বিল্লাল হোসেনসহ নাম না জানা আরো অনেককেই হত্যা করা হয়েছিল।

বিজয়পুর সংলগ্ন স্থানে আমাদের সোনার ছেলেরা মুক্তিবাহিনীর একটি ব্রাস ফায়ারে ১০জন পাক সেনাকে হত্যা করে আনন্দ উল্লাসে জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারন করে এগিয়ে আসতে থাকলে ওৎ পেতে থাকা পাক হায়েনাদের গুলি এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সন্তোষ বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করলে  তিনি মারা যান।  তারই নামানুসারে দুর্গাপুর সদরে নির্মিত হয় শহীদ সন্তোষ পার্ক। দুর্গাপুরে মুক্তিযুদ্ধে আরো ২জন শহীদ হয়েছিল  হলেন- সুধীর হাজং ও আব্দুল জব্বার।

দিবসটিকে সামনে রেখে আজ উপজেলা প্রশাসন ,মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট ,দুর্গাপুর প্রেসক্লাব,স্থানীয় সূধীজন ও স্কুল ,কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের শুভ সূচনা র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।