হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এখানে চিকিৎসকের ২১টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র আটজন।
গাইনি, সার্জারি, ডেন্টাল সার্জন, অর্থপেডিক্স, মেডিসিন, এনেসথেসিয়াসহ ১১টি গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নাসিরনগরসহ পাশের কয়েকটি উপজেলা থেকে আসা সাধারণ মানুষ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিনের মত চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে লম্বা লাইন। কথা হয় কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে।
তারা জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ৫০০ রোগী এ হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়ে থাকে। এত মানুষকে সেবা দিতে আমাদের কিছুটা সমস্যা হয়। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সেবা দিতে।
গাইনি চিকিৎসক না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন হবিগঞ্জের লাখাই থেকে আসা আমেনা বেগম (৩৩)।
তিনি বলেন, আমার নিজের শারীরিক সমস্যার জন্য একজন গাইনি চিকিৎসক দেখাতে আসছিলাম; কিন্তু এখানে কোনো গাইনি ডাক্তার নেই, তাই ফিরে যাচ্ছি।
হাসপাতালের বারান্দায় বসেছিলেন ফারুক মিয়া। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসক বলেছেন, নরমাল ডেলিভারি না হলে সিজার করাতে হবে।
এ হাসপাতালে সিজার হয় না। আমাকে অন্য কোনো বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হবে। এতে অনেক টাকা দরকার। আমি একজন সামান্য আয়ের মানুষ। এত টাকা কীভাবে যোগাড় করব তাই বসে চিন্তা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার এনেসথেসিয়া পদটি দীর্ঘকাল ধরে শূন্য রয়েছে। অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিস্ট) না থাকায় এখানে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার হয় না। গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে জটিল রোগে আক্রান্ত নারীদের বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ায় পর হাসপাতালের সেবার মান উন্নত করেছি। এ ব্যাপারে আমাকে স্থানীয় এমপিসহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনেক সহযোগিতা করেছে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদ খালি থাকায় চিকিৎসা দিতে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এনেসথেসিয়ার অভাবে কোনো ধরনের অপারেশন করতে পারছি না।
ব্রাহ্মণাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, জনবল শূন্যতার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসক শূন্যতা কাটিয়ে দেবেন।