বাংলাদেশে আরেকটি বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে বুধবার। হোক না এটা ছোটদের বিশ্বকাপ। তবুও এর ভার নেহাত কম নয়। ১৬ জাতির এই টুর্নামেন্ট অনেক ক্ষেত্রে বড় বিশ্বকাপের চেয়েও এগিয়ে। কারণ, বড় বিশ্বকাপ খেলে অনেক তারকাই হারিয়ে যান, আর এই বিশ্বকাপ খেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে নিজেদের চলাচলটা শুরু করে তরুণ ক্রিকেটাররা। যে কারণে, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ যেকোনো অর্থেই কিংবা কোনোভাবেই কম যায় না বড় বিশ্বকাপের চেয়ে। সেই বিশ্বকাপটারই ১১তম আসরের পর্দা উঠতে যাচ্ছে আগামীকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
টুর্নামেন্টটা শুরুর আগে স্থানীয় আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জন্য ছিল বিশাল একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, নিরাপত্তা ইস্যু। এই ইস্যুটা খুব বেশি বড় করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। নিরাপত্তার অজুহাত তুলে ক্রিকেটের মোড়ল দেশটি কোনো দলই পাঠায়নি বাংলাদেশে। ফলে, তাদের পরিবর্তে এই টুর্নামেন্টে খেলছে আইসিসির সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ড। যদিও অস্ট্রেলিয়া না আসার কারণে, এই টুর্নামেন্টের গ্ল্যামার একটুও কমেনি। তবে, বিসিবির জন্য চ্যালেঞ্জটা হলো, অস্ট্রেলিয়ার এই শঙ্কা কাটিয়ে টুর্নামেন্টটা সফলভাবে আয়োজন করা।
গত আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে মেহেদী হাসান মিরাজরা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল ৯টায় যখন ম্যাচটি মাঠে গড়াবে, তখন চট্টগ্রামের আরেক ভেন্যু এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে ফিজি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। বাংলাদেশের ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে বিটিভি ও গাজী টেলিভিশন।
”
১৯ দিনের টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে ৪৮টি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারের মোট আটটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের খেলা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল। এছাড়াও বাকি ভেন্যুগুলো হচ্ছে, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ও এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, সিলেটের বিভাগীয় ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম এবং কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও অ্যাকাডেমি মাঠ।
নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ। মেহেদী হাসান মিরাজদের তাই স্বপ্নটা অনেক বড়। বাংলাদেশ দলের নিবিড় অনুশীলন এবং দীর্ঘদিন ধরে নেয়া প্রস্তুতির বাস্তবায়ন করার মঞ্চ এবার প্রস্তুত। উদ্বোধনী ম্যাচেই জয় দিয়ে সেই অসাধ্যটা সাধন করতে চায় বাংলাদেশের যুবারা। দক্ষিণ আফ্রিকাকেই নিজেদের মাঠে এবং তাদের ঘরের মাঠে গিয়ে বেশ কয়েকবার হারিয়ে আসার অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। সে লক্ষ্য সামনে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামছে মেহেদী হাসান মিরাজরা।
যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০০৬ সালে পঞ্চম হওয়া। সেবার যুবদলের অধিনায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত আসরে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে উঠেছিল বাংলাদেশ। যদিও পঞ্চম স্থানে থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। যদিও এবার মেহেদী হাসান মিরাজরা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, আরো বড় কিছুর। গত দুই বছরে এই দলটি একসঙ্গে খেলছে। ফলে একটা দল হয়ে খেলার অভ্যাসও গড়ে উঠেছে তাদের মধ্যে। এ ছাড়া গত যুব বিশ্বকাপে খেলা পাঁচজন খেলোয়াড়ও আছেন এই দলে। ফলে মিরাজদের আত্মবিশ্বাসে টগবগ হওয়ার কারণও একটাই।
”
যুব বিশ্বকাপের ১১তম আসরে অংশ নিচ্ছে ১৬টি দেশ। গ্রুপ ‘এ’তে আছে নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক বাংলাদেশ। ‘বি’গ্রুপে রয়েছে আফগানিস্তান, কানাডা, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ‘সি’গ্রুপে ইংল্যান্ড, ফিজি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে। ‘ডি’গ্রুপে আছে ভারত, আয়ারল্যান্ড, নেপাল ও নিউজিল্যান্ড।