রোপা-আমন ধানে হাসি ফিরবে কৃষকের মুখে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ শস্য ভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলসহ সিরাজগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে ফসলের মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। দফায় দফায় ৫ বারের দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষি বিভাগ মনে করছে, জেলায় রোপা-আমন মৌসুমে যে পরিমাণ আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, তাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা।

ধান গণহত্যার সুবিচার প্রার্থনা

ইতিমধ্যে রোপা-আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি চলনবিলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষেরা দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে মাঠে মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গত ১৫ দিনে ১০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।  শ্রমিক সংকট না হলে আগামী মাসের মাঝামাঝি জেলার কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছে কৃষি অধিদপ্তর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৫ বারের বন্যায় জেলার প্রায় ৩ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগস্ত হয়। জেলার ৯টি উপজেলায় রোপা-আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬৯ হাজার ২৫০ হেক্টর ধরা হয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হয়।  শেষ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে রোপা-আমনের চাষাবাদ হয়। বন্যার কারণে জেলার উপজেলাগুলোতে ৮৪৪ হেক্টর জমিতে আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে।

সুনামগঞ্জে আমনের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি

উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামের কৃষক রায়হান আলী বলেন, আমাদের এখনও রোপা-আমন কাটা শুরু হয়নি। এক সপ্তাহ পড়ে কাটা শুরু হবে। এবারের বন্যা হলেও ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।

রায়গঞ্জ উপজেলার বহ্মগাছা গ্রামের বর্গাচাষি আব্দুল মালেক বলেন, করতোয়া নদীর পাড়ে পতিত এক বিঘা জমিতে রোপা-আমন লাগানো হয়েছিলো। ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে এবার ধানের দাম গতবারের চেয়ে বেশি।

যে কোনোভাবে বোরো ধান সংগ্রহে লক্ষ্য অর্জন করতে চায় সরকার

তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাাম ইউনিয়নের বলদীপাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান আলী বলেন, এবার আমার প্রায় ১৫ বিঘা জমির বপনকৃত রোপা-আমন ধান শুরুতেই হলুদ হয়ে নষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে নানা ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করেছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, এবার রোপা-আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ৫ দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষক।

আমনের বাম্পার ফলনেও কৃষকের মুখে হাসি নেই

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা বলেন, চলতি মৌসুমে পাঁচবার বন্যায় জলাবদ্ধতার কারণে ১৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া প্রায় ২০/২৫ বিঘা জমিতে দীর্ঘসময় পানি থাকার কারণে রোপা-আপন ধান হলুদ হয়ে যায়। পরে অনেক চেষ্টা করেও ওই পরিমাণ ধানের আবাদ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে পাঁচবারের বন্যার পরও তুলনামূলকভাবে ফলন ভাল হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) আবু হানিফ বলেন, এবার পাঁচবারের বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রার কিছুটা কম আবাদ হয়েছে। এরপরও বন্যা ছাড়া ধানের রোগব্যাধি ও অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর