ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০
  • ১৭০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কার্তিকের চাঁদ ছিল হুমায়ূন আহমেদের ভীষণ প্রিয়। চাঁদের অনাঘ্রাত সৌন্দর্য উপভোগ করতে মাঝেমধ্যেই তিনি ছুটে যেতেন নুহাশপল্লীতে। বসতেন লিচুগাছতলায়। পাশেই বেশ কয়েকটি জাম, জলপাই আর তেঁতুলগাছ। বৃক্ষরাজির মাঝখানে একচিলতে ফাঁকা জায়গা সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত। দক্ষিণে শেফালি, কামিনী ফুলসহ আরো কত গাছ। তিনটি লিচুগাছের গোড়া বাঁধানো। সাহিত্যের রাজপুত্র আজ নেই। জন্মদিনে আজ তিনি আছেন তাঁর সেই প্রিয় লিচুগাছতলায়। সেখানে শ্যামল ছায়ায় আজও গাছপালা-লতাপাতা চুইয়ে ঝরে পড়ে শিশিরকণা। আজও পাখিরা গান গায়, ফুল ফোটে। কার্তিকের মেঠো চাঁদ, তাঁর প্রিয় গাছগাছালি, মাটির গন্ধ তাঁকে আজ জানাচ্ছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।

শুভ জন্মদিন বাংলা সাহিত্যের রাজপুত্র হুমায়ূন আহমেদ। জন্মদিনের আড়ম্বরতা পছন্দ ছিল না তাঁর। তবু রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, সুহূদদের নিয়ে কাটতেন কেক। রাত গড়িয়ে সকাল হলে ভক্তরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাত প্রিয় লেখককে। এ ছাড়া দিনভর নানা আয়োজন তো থাকতই। বছর ঘুরে আজ এসেছে সেই শুভক্ষণ। আজ ১৩ নভেম্বর বাংলা সাহিত্যের এই জননন্দিত লেখক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকারের জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে তিনি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামে নানাবাড়িতে জন্ম নেন।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে এতটাই নন্দিত হয়েছিল যে এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মানার আগে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক- প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন তিনি।

রসবোধ আর অলৌকিকতার মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর সৃষ্টি হিমু, মিছির আলী, বাকের ভাই চরিত্রগুলো পেয়েছে ‘অমরত্ব’। তাঁর লেখা গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরো মনোযোগ দেন হুমায়ূন আহমেদ।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি৷ এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক।

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) এক আয়োজনে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ‘বাকের ভাই’খ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, হুমায়ূনকে আমরা শুধুই একভাবে দেখার চেষ্টা করি। তিনি ‘বাকের ভাই’ লিখেছেন, জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। কিন্তু এখানেই শেষ কথা না। তাকে নিয়ে সত্যিকার অর্থে বিচার বিশ্লেষণ এখনও হয়নি। তাকে জনপ্রিয় লেখক বলা হয়। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করা উচিৎ। তার মূল্যায়ন যথাযথভাবে এখনও হয়নি। যদিও আমাদের দেশে সবকিছু অনেক দেরিতে হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কার্তিকের চাঁদ ছিল হুমায়ূন আহমেদের ভীষণ প্রিয়। চাঁদের অনাঘ্রাত সৌন্দর্য উপভোগ করতে মাঝেমধ্যেই তিনি ছুটে যেতেন নুহাশপল্লীতে। বসতেন লিচুগাছতলায়। পাশেই বেশ কয়েকটি জাম, জলপাই আর তেঁতুলগাছ। বৃক্ষরাজির মাঝখানে একচিলতে ফাঁকা জায়গা সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত। দক্ষিণে শেফালি, কামিনী ফুলসহ আরো কত গাছ। তিনটি লিচুগাছের গোড়া বাঁধানো। সাহিত্যের রাজপুত্র আজ নেই। জন্মদিনে আজ তিনি আছেন তাঁর সেই প্রিয় লিচুগাছতলায়। সেখানে শ্যামল ছায়ায় আজও গাছপালা-লতাপাতা চুইয়ে ঝরে পড়ে শিশিরকণা। আজও পাখিরা গান গায়, ফুল ফোটে। কার্তিকের মেঠো চাঁদ, তাঁর প্রিয় গাছগাছালি, মাটির গন্ধ তাঁকে আজ জানাচ্ছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।

শুভ জন্মদিন বাংলা সাহিত্যের রাজপুত্র হুমায়ূন আহমেদ। জন্মদিনের আড়ম্বরতা পছন্দ ছিল না তাঁর। তবু রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, সুহূদদের নিয়ে কাটতেন কেক। রাত গড়িয়ে সকাল হলে ভক্তরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাত প্রিয় লেখককে। এ ছাড়া দিনভর নানা আয়োজন তো থাকতই। বছর ঘুরে আজ এসেছে সেই শুভক্ষণ। আজ ১৩ নভেম্বর বাংলা সাহিত্যের এই জননন্দিত লেখক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকারের জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে তিনি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামে নানাবাড়িতে জন্ম নেন।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে এতটাই নন্দিত হয়েছিল যে এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মানার আগে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক- প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন তিনি।

রসবোধ আর অলৌকিকতার মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর সৃষ্টি হিমু, মিছির আলী, বাকের ভাই চরিত্রগুলো পেয়েছে ‘অমরত্ব’। তাঁর লেখা গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরো মনোযোগ দেন হুমায়ূন আহমেদ।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি৷ এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক।

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) এক আয়োজনে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ‘বাকের ভাই’খ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, হুমায়ূনকে আমরা শুধুই একভাবে দেখার চেষ্টা করি। তিনি ‘বাকের ভাই’ লিখেছেন, জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। কিন্তু এখানেই শেষ কথা না। তাকে নিয়ে সত্যিকার অর্থে বিচার বিশ্লেষণ এখনও হয়নি। তাকে জনপ্রিয় লেখক বলা হয়। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করা উচিৎ। তার মূল্যায়ন যথাযথভাবে এখনও হয়নি। যদিও আমাদের দেশে সবকিছু অনেক দেরিতে হয়।