ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবুজের সমারোহে দুলছে অনাবিল আনন্দ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রোপা আমনক্ষেত সবুজের সমারোহ হয়ে আছে। যে দিকে চোখ যায় শুধু রোপা আমনের ক্ষেতে সবুজ আর সবুজ চোখে পড়ছে। মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে চলতি মৌসুমের আমন ধান গাছ। সে সঙ্গে কৃষকের মনে দোলা দিচ্ছে অনাবিল আনন্দও। স্থানীয় কৃষকরা চলতি মৌসুমের রোপা আমন ধানকে ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনছেন।
গত বোরো মৌসুমে শিলাবৃষ্টি ঝড় ও বন্যায় অনেক কৃষকের স্বপ্ন পানিতে ভেসে যায়। কিন্তু এবার আমনে সেই ক্ষতি পুষাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এখন পযর্ন্ত জমির যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে স্থানীয় কৃষকরা বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউপিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জমির পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসূমে ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

সরেজমিনে দেখা যায় পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, খরমপুর, দুর্গাপুরসহ উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ, ধরখার এলাকায় মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আমনক্ষেতে সবুজে সমারোহ হয়ে আছে। যে দিকে চোখ যায় মাঠে শুধু ধানক্ষেত চোখে পড়ে। এরইমধ্যে কোনো কোনো জমিতে ধানের শীষ বের হতে শুরু হয়েছে। সঠিক সময়ে চারা রোপণ, নিবিড় পরিচর্যা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথা সময়ে সেচ ও সার দেয়া সবই করেছে স্থানীয় কৃষকরা। সেই সঙ্গে ফলন ভালো করতে নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তারা তদারকিও করছেন। রোগ বালায়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে ধান জমিতে কঞ্চি ও গাছের ডাল পুঁতে পাখি দিয়ে পোকা মাকড় দমনে তারা উৎসাহিত করছেন। এ উপজেলায় বি-আর ২৮, বি-আর ২৯, হীরা জাগরনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ করা হয়।

পৌর এলাকার তারাগনের কৃষক মো. আলম খা বলেন, এ মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেন তিনি। কিন্তু আমন রোপন করার পর পর কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় জমি নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বৃষ্টি বন্ধ ও জমি থেকে পানি চলে যাওয়ায় মাঠে ফিরে আসে প্রাণ। সঠিকভাবে জমির পরিচর্যা করায় এখন ধান গাছের থোকায় থোকায় শীষ ধরেছে। জমির যে অবস্থা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে গত মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।

মোগড়া ইউনিয়নের কৃষক আবেদ আলী জানান, গত মৌসুমের ক্ষতিতে ধার দেনা করে ৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়। বর্তমানে ধান জমির অবস্থা খুবই ভালো।

কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, রোধ বৃষ্টি ভিজে দিন রাত পরিশ্রম করে ৮ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়। বর্তমানে ধান জমিতে শীষ বের হচ্ছে। জমির দিকে তাকালে মন জুড়িয়ে যায়। আশা করছি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, প্রথম দিকে টানা বৃষ্টিপাত হলে ও সময় মতো পানি চলে যাওয়ায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা যায়। তাছাড়া ফলন ভালো করতে সার্বিকভাবে স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সবুজের সমারোহে দুলছে অনাবিল আনন্দ

আপডেট টাইম : ০৭:০৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রোপা আমনক্ষেত সবুজের সমারোহ হয়ে আছে। যে দিকে চোখ যায় শুধু রোপা আমনের ক্ষেতে সবুজ আর সবুজ চোখে পড়ছে। মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে চলতি মৌসুমের আমন ধান গাছ। সে সঙ্গে কৃষকের মনে দোলা দিচ্ছে অনাবিল আনন্দও। স্থানীয় কৃষকরা চলতি মৌসুমের রোপা আমন ধানকে ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনছেন।
গত বোরো মৌসুমে শিলাবৃষ্টি ঝড় ও বন্যায় অনেক কৃষকের স্বপ্ন পানিতে ভেসে যায়। কিন্তু এবার আমনে সেই ক্ষতি পুষাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এখন পযর্ন্ত জমির যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে স্থানীয় কৃষকরা বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউপিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জমির পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসূমে ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

সরেজমিনে দেখা যায় পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, খরমপুর, দুর্গাপুরসহ উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ, ধরখার এলাকায় মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আমনক্ষেতে সবুজে সমারোহ হয়ে আছে। যে দিকে চোখ যায় মাঠে শুধু ধানক্ষেত চোখে পড়ে। এরইমধ্যে কোনো কোনো জমিতে ধানের শীষ বের হতে শুরু হয়েছে। সঠিক সময়ে চারা রোপণ, নিবিড় পরিচর্যা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথা সময়ে সেচ ও সার দেয়া সবই করেছে স্থানীয় কৃষকরা। সেই সঙ্গে ফলন ভালো করতে নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তারা তদারকিও করছেন। রোগ বালায়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে ধান জমিতে কঞ্চি ও গাছের ডাল পুঁতে পাখি দিয়ে পোকা মাকড় দমনে তারা উৎসাহিত করছেন। এ উপজেলায় বি-আর ২৮, বি-আর ২৯, হীরা জাগরনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ করা হয়।

পৌর এলাকার তারাগনের কৃষক মো. আলম খা বলেন, এ মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেন তিনি। কিন্তু আমন রোপন করার পর পর কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় জমি নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বৃষ্টি বন্ধ ও জমি থেকে পানি চলে যাওয়ায় মাঠে ফিরে আসে প্রাণ। সঠিকভাবে জমির পরিচর্যা করায় এখন ধান গাছের থোকায় থোকায় শীষ ধরেছে। জমির যে অবস্থা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে গত মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।

মোগড়া ইউনিয়নের কৃষক আবেদ আলী জানান, গত মৌসুমের ক্ষতিতে ধার দেনা করে ৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়। বর্তমানে ধান জমির অবস্থা খুবই ভালো।

কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, রোধ বৃষ্টি ভিজে দিন রাত পরিশ্রম করে ৮ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়। বর্তমানে ধান জমিতে শীষ বের হচ্ছে। জমির দিকে তাকালে মন জুড়িয়ে যায়। আশা করছি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, প্রথম দিকে টানা বৃষ্টিপাত হলে ও সময় মতো পানি চলে যাওয়ায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা যায়। তাছাড়া ফলন ভালো করতে সার্বিকভাবে স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।