ঢাকা ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাঁক-ডাক দিয়ে চলছে ইলিশ বিক্রি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১০:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০
  • ১৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখ থেকে নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ প্রজনন মৌসুম ঘোষণা করেছে সরকার।

তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর বিভিন্ন জায়গায় অবাধে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। দিনরাত সমান তালে ইলিশ শিকার করে গ্রামগঞ্জের পাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে হাঁক-ডাক দিয়ে  বিক্রিও করছেন তারা।
 উপেজলায় ইলিশ শিকার রোধে অভিযান পরিচালিত হলেও  জেল জরিমানার হার কম হওয়ায় জেলেদের মধ্যে তেমন সচেতনতা বাড়েনি বলে দাবি স্থানীয়দের।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সরেজমিনে পদ্মা নদীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, জেলেরা জাল,নৌকা নিয়ে নদীতে ইলিশ ধরছেন। অনেকে নৌকায় রাতে মাছ ধরে নদীর তীরবর্তী চরে নোঙ্গর করে রেখেছেন। এসব ইলিশ সুতালড়ী, আজিমনগর ও লেজরাগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পাড়া মহল্লায় এসব ইলিশ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ছোট আকারের ইলিশ দুই থেকে তিনশ আর বড় সাইজের মা ইলিশ ছয় থেকে সাতশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলায় ২৫ অভিযান পরিচালনা করে ২২৭টি মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও  ৩ লাখ ২১ হাজার দুইশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ২১ লাখ ৬৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস এবং জব্দ করা ১০৫ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানা,গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

 শিবালয় উপজেলায় ২৭ অভিযান পরিচালনা করে ১৮১টি মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন ১৫১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৫৬ হাজার ছয়শো টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া, ২৩ লাখ ৮০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস ও জব্দ করা ১২০ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

তবে হরিরামপুর উপজেলায় ২১টি অভিযান পরিচালনা হলেও মামলা হয়েছে মাত্র ৯টি।  এদের মধ্যে ৮ জনকে কারাদণ্ড  ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ৫ লাখ ৭৭ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হলেও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
সুতালড়ী এলাকার রোজিনা বেগম জানান,এ সময়ে অল্প দামে ইলিশ পাওয়ায় তিনি কয়েক কেজি কিনেছেন। বছরের অন্য সময়ে এ এলাকায় ঝাঁকায় করে ইলিশ বেচা হয়না। খাবারে ছেলে-মেয়েদের একটু বাড়তি স্বাদ দিতে ইলিশ কিনেছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, ‘আমার নামে সুবিধাভোগী কার্ড হয়নি। এতে সরকার থেকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। বাধ্য হয়ে ইলিশ শিকার করে তা ফেরি করে বিক্রি করছি। প্রতিদিন যা বেচা হয় তা দিয়ে সংসারে সদাই পাতি কিনতে হয়। না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, উপজেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের গাফলতি, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে পদ্মা নদীতে অভিযান সফল হচ্ছে না।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোনায়ার হোসেন জানান, প্রতিদিন কয়েকটি টিম পদ্মা নদীতে অভিযান চালাচ্ছে। অন্যান্য উপজেলায় ইলিশ শিকার করায় জেল জরিমানা দেওয়া হচ্ছে। তবে এ এলাকায় জেলেরা ইলিশ শিকারে না নামায় জেল জরিমানা কম হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাঁক-ডাক দিয়ে চলছে ইলিশ বিক্রি

আপডেট টাইম : ১২:১০:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখ থেকে নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ প্রজনন মৌসুম ঘোষণা করেছে সরকার।

তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর বিভিন্ন জায়গায় অবাধে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। দিনরাত সমান তালে ইলিশ শিকার করে গ্রামগঞ্জের পাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে হাঁক-ডাক দিয়ে  বিক্রিও করছেন তারা।
 উপেজলায় ইলিশ শিকার রোধে অভিযান পরিচালিত হলেও  জেল জরিমানার হার কম হওয়ায় জেলেদের মধ্যে তেমন সচেতনতা বাড়েনি বলে দাবি স্থানীয়দের।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সরেজমিনে পদ্মা নদীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, জেলেরা জাল,নৌকা নিয়ে নদীতে ইলিশ ধরছেন। অনেকে নৌকায় রাতে মাছ ধরে নদীর তীরবর্তী চরে নোঙ্গর করে রেখেছেন। এসব ইলিশ সুতালড়ী, আজিমনগর ও লেজরাগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পাড়া মহল্লায় এসব ইলিশ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ছোট আকারের ইলিশ দুই থেকে তিনশ আর বড় সাইজের মা ইলিশ ছয় থেকে সাতশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলায় ২৫ অভিযান পরিচালনা করে ২২৭টি মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও  ৩ লাখ ২১ হাজার দুইশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ২১ লাখ ৬৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস এবং জব্দ করা ১০৫ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানা,গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

 শিবালয় উপজেলায় ২৭ অভিযান পরিচালনা করে ১৮১টি মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন ১৫১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৫৬ হাজার ছয়শো টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া, ২৩ লাখ ৮০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস ও জব্দ করা ১২০ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

তবে হরিরামপুর উপজেলায় ২১টি অভিযান পরিচালনা হলেও মামলা হয়েছে মাত্র ৯টি।  এদের মধ্যে ৮ জনকে কারাদণ্ড  ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ৫ লাখ ৭৭ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হলেও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
সুতালড়ী এলাকার রোজিনা বেগম জানান,এ সময়ে অল্প দামে ইলিশ পাওয়ায় তিনি কয়েক কেজি কিনেছেন। বছরের অন্য সময়ে এ এলাকায় ঝাঁকায় করে ইলিশ বেচা হয়না। খাবারে ছেলে-মেয়েদের একটু বাড়তি স্বাদ দিতে ইলিশ কিনেছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, ‘আমার নামে সুবিধাভোগী কার্ড হয়নি। এতে সরকার থেকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। বাধ্য হয়ে ইলিশ শিকার করে তা ফেরি করে বিক্রি করছি। প্রতিদিন যা বেচা হয় তা দিয়ে সংসারে সদাই পাতি কিনতে হয়। না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, উপজেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের গাফলতি, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে পদ্মা নদীতে অভিযান সফল হচ্ছে না।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোনায়ার হোসেন জানান, প্রতিদিন কয়েকটি টিম পদ্মা নদীতে অভিযান চালাচ্ছে। অন্যান্য উপজেলায় ইলিশ শিকার করায় জেল জরিমানা দেওয়া হচ্ছে। তবে এ এলাকায় জেলেরা ইলিশ শিকারে না নামায় জেল জরিমানা কম হচ্ছে।