দীর্ঘ নয় বছর অপেক্ষার প্রহর অবশেষে শেষ হচ্ছে। শুক্রবার বিকাল ৩টায় ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে জিম্বাবুয়ের। সিরিজটিতে কো স্পন্সর হিসেবে যুক্ত রয়েছে প্রাণ-আপ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত সিরিজটি ছিল টেস্ট ফরম্যাটের। তবে সামনে যেহেতু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপ (টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে)- এ কারণে বিসিবির সিদ্ধান্তেই টেস্টের পরিবর্তে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আয়োজন করা হয়। সুতরাং, এই সিরিজটাই হচ্ছে বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি।
এই প্রস্তুতিটাই কেমন হচ্ছে সেটা পরীক্ষা করা হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে। যেমনটা নিজে থেকে জানিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি এবং কোচ হাথুরুসিংহে। দু’জনই বললেন, ‘আমাদের সামনে পরীক্ষা-নীরিক্ষার দারুন একটা সুযোগ। এ সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।’
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ যতটা না অগ্রগতি অর্জণ করেছে, টি-টোয়েন্টিতে ততটা পিছিয়ে। সর্বশেষ এই জিম্বাবুয়ের কাছেই টি-টোয়েন্টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এ কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজটা বেশ ভালোই চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য।
ইতিমধ্যে ম্যাচটিকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাজানো গ্যালারি অপেক্ষা করছে দর্শক বরণ করে নিতে। দর্শকরাও মুখিয়ে মাশরাফি-সাকিব-মুস্তাফিজদের নতুন বছরের শুরটা জয় রাঙিয়ে নেয়ার দৃশ্য দেখতে।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামটি ২০০৪ সালে উদ্বোধন হয়। ওই বছরই আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই মাঠে। পরবর্তীতে স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার পর একই বছর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এ মাঠে ২টি ওয়ানডে খেলে কেনিয়া এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
এই মাঠেই বাংলাদেশ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হয় জিম্বাবুয়ের। একই স্টেডিয়ামে পুরনো সেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে আবারও টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে নামছেন টাইগাররা। বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ শুরুর আগে এ সিরিজ নিয়ে সাধারণ দর্শকদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনাও তাই তুঙ্গে।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামটি দেশের সপ্তম টেস্ট ভেন্যু। ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর খুলনার মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছিল। এরপর এ মাঠে আরও দুটি টেস্ট এবং দুটি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের। এর মাঝে মাত্র ৩ টেস্ট, চার ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের কীর্তিটা টাইগাররা গড়েছিলো এই ভেন্যুতেই ২০১২ সালে। এ মাঠে প্রথম এবং শেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছিলো ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
খুলনার মাটিতে অনুষ্ঠিত তিন ধরনের ক্রিকেটেই জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এ মাঠে দেখা গেছে বেশকিছু বিশ্বরেকর্ডও। তাই তো খুলনার এ স্টেডিয়ামকে ‘লাকি ভেন্যু’ও বলা হয়।
ভেন্যু ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার কচি সাংবাদিকদের জানান, ‘উইকেট, আউট ফিল্ড তৈরিসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দশ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এ স্টেডিয়াম এখন দর্শক বরণের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিদেশিদের পাশাপাশি আসরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনস্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন দুই হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।