ঢাকা ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ রঙের সৌন্দর্যে মুখর ‘আলকুসুম’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০
  • ২১২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মধ্যলয়ে উড়ে যাওয়া পতঙ্গদের বলে প্রজাপতি। চলার পথে হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে যায় তাদের সঙ্গে।

আপন মনে আমাদের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া তাদের প্রাকৃতিক নিয়ম। আর এভাবেই ছড়ায় সৌন্দর্য।  জানান দেয় প্রকৃতিক শুদ্ধতার দিকটিও। তবে ধূসর এক রঙ্গা প্রজাপতির চেয়ে বর্ণিল রূপের প্রজাপতিগুলো দারুণভাবে মুগ্ধ করে প্রকৃতিপ্রেমীদের।

প্রজাপতি আলোকচিত্রী এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুশফিক আবীর উপন্যাস বাংলানিউজকে বলেন, এ বিপন্ন প্রজাপতিটির প্রচলিত বাংলা নাম ‘আলকুসুম’। এর ইংরেজি নাম Yellow Orange Tip এবং বৈজ্ঞানিক নাম Ixias pyrene। এ প্রজাপতির ছবি আমি আমার মোবাইলে তুলেছি। পিয়েরিডি পরিবারের এর ডানার প্রসারতার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ মিলিমিটার। বাংলাদেশে Ixias গণের অন্তর্ভুক্ত আরও একটি প্রজাপতি পাওয়া যায়। সেটা হলো Ixias marianne। এই প্রজাপতিগুলোর ডানার নিচের অংশ আলাদা এবং ওপরের অংশের রং আলাদা।

এ প্রজাপতির শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রজাপতির পিঠের ওপরের অংশ বাসন্তী-হলুদ রঙের। ডানার ফোর-উইং অংশে কালো রঙের মধ্যে কমলা চওড়া রঙের পটি দেখা যায়। ডানার হাইন্ড-উইং পুরোটাজুড়েই হলুদ রং থাকলেও চারপাশে ঘিরে কালো সরু মার্জিনের মতো দেখা যায়। এরা মাঝারি আকারের প্রজাপতি।

‘আলকুসুম’ প্রজাপতির নারী এবং পুরুষ উভয়ের ডানার নিচের অংশ এক ধরনের হলেও, এদের ডানার ওপরের অংশের রং আলাদা। পুরুষরা নারীদের তুলনায় উজ্জ্বল হয় আর নারীরা অনুজ্জ্বল। পুরুষদের ডানার ওপরে অংশ উজ্জ্বল কমলা এবং বাসন্তী-হলুদ রংয়ের চারপাশে কালো রং দেখা যায় এবং নারীদের ডানার ওপরের অংশে অনুজ্জ্বল হলুদ এবং চারপাশ ঘিরে থাকে কালো মার্জিন।

প্রাপ্তিস্থানের কথা করে মুশফিক বলেন, এই প্রজাপতিটি বাংলাদেশের খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায়। তবে চট্টগ্রাম জেলায়, সিলেট জেলায়, ঢাকা জেলায়, নওগাঁ জেলায়, রাজশাহী জেলায় এবং জয়পুরহাট জেলাতে এই বিপন্ন প্রজাপতির দেখা মিলেছে এখন অব্দি। বাংলাদেশ ছাড়াও এই গণের প্রজাপতিগুলো শ্রীলংকা, ইন্ডিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে পাওয়া যায়।

এর বেঁচে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রজপাতি সকালে সবচেয়ে বেশি অ্যাকটিভ (সচল) থাকে এবং মাটির খুব কাছাকাছি উড়ে। এরা সব প্রজাপাতির মতোই ফুল থেকে তরল আহরণ করে। পুরুষ প্রজাপতিগুলোর মাঝেমধ্যে ভেজা মাটি ও পশুর বিষ্ঠাতে প্যাডলিং করে খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করে। এই খনিজ পদার্থগুলো পুরুষ প্রজাপতির উর্বরতা বাড়ায়।

জীববৈচিত্র্য গবেষণা ও সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার আইইউসিএন ‘লাল তালিকা ২০১৫ সালে এই প্রজাপতিকে বাংলাদেশ বিপন্ন (EN) বলে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান মুশফিক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

৩ রঙের সৌন্দর্যে মুখর ‘আলকুসুম’

আপডেট টাইম : ১১:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মধ্যলয়ে উড়ে যাওয়া পতঙ্গদের বলে প্রজাপতি। চলার পথে হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে যায় তাদের সঙ্গে।

আপন মনে আমাদের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া তাদের প্রাকৃতিক নিয়ম। আর এভাবেই ছড়ায় সৌন্দর্য।  জানান দেয় প্রকৃতিক শুদ্ধতার দিকটিও। তবে ধূসর এক রঙ্গা প্রজাপতির চেয়ে বর্ণিল রূপের প্রজাপতিগুলো দারুণভাবে মুগ্ধ করে প্রকৃতিপ্রেমীদের।

প্রজাপতি আলোকচিত্রী এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুশফিক আবীর উপন্যাস বাংলানিউজকে বলেন, এ বিপন্ন প্রজাপতিটির প্রচলিত বাংলা নাম ‘আলকুসুম’। এর ইংরেজি নাম Yellow Orange Tip এবং বৈজ্ঞানিক নাম Ixias pyrene। এ প্রজাপতির ছবি আমি আমার মোবাইলে তুলেছি। পিয়েরিডি পরিবারের এর ডানার প্রসারতার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ মিলিমিটার। বাংলাদেশে Ixias গণের অন্তর্ভুক্ত আরও একটি প্রজাপতি পাওয়া যায়। সেটা হলো Ixias marianne। এই প্রজাপতিগুলোর ডানার নিচের অংশ আলাদা এবং ওপরের অংশের রং আলাদা।

এ প্রজাপতির শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রজাপতির পিঠের ওপরের অংশ বাসন্তী-হলুদ রঙের। ডানার ফোর-উইং অংশে কালো রঙের মধ্যে কমলা চওড়া রঙের পটি দেখা যায়। ডানার হাইন্ড-উইং পুরোটাজুড়েই হলুদ রং থাকলেও চারপাশে ঘিরে কালো সরু মার্জিনের মতো দেখা যায়। এরা মাঝারি আকারের প্রজাপতি।

‘আলকুসুম’ প্রজাপতির নারী এবং পুরুষ উভয়ের ডানার নিচের অংশ এক ধরনের হলেও, এদের ডানার ওপরের অংশের রং আলাদা। পুরুষরা নারীদের তুলনায় উজ্জ্বল হয় আর নারীরা অনুজ্জ্বল। পুরুষদের ডানার ওপরে অংশ উজ্জ্বল কমলা এবং বাসন্তী-হলুদ রংয়ের চারপাশে কালো রং দেখা যায় এবং নারীদের ডানার ওপরের অংশে অনুজ্জ্বল হলুদ এবং চারপাশ ঘিরে থাকে কালো মার্জিন।

প্রাপ্তিস্থানের কথা করে মুশফিক বলেন, এই প্রজাপতিটি বাংলাদেশের খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায়। তবে চট্টগ্রাম জেলায়, সিলেট জেলায়, ঢাকা জেলায়, নওগাঁ জেলায়, রাজশাহী জেলায় এবং জয়পুরহাট জেলাতে এই বিপন্ন প্রজাপতির দেখা মিলেছে এখন অব্দি। বাংলাদেশ ছাড়াও এই গণের প্রজাপতিগুলো শ্রীলংকা, ইন্ডিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে পাওয়া যায়।

এর বেঁচে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রজপাতি সকালে সবচেয়ে বেশি অ্যাকটিভ (সচল) থাকে এবং মাটির খুব কাছাকাছি উড়ে। এরা সব প্রজাপাতির মতোই ফুল থেকে তরল আহরণ করে। পুরুষ প্রজাপতিগুলোর মাঝেমধ্যে ভেজা মাটি ও পশুর বিষ্ঠাতে প্যাডলিং করে খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করে। এই খনিজ পদার্থগুলো পুরুষ প্রজাপতির উর্বরতা বাড়ায়।

জীববৈচিত্র্য গবেষণা ও সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার আইইউসিএন ‘লাল তালিকা ২০১৫ সালে এই প্রজাপতিকে বাংলাদেশ বিপন্ন (EN) বলে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান মুশফিক।