ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লামায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০২০
  • ১৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪ দরিদ্র পরিবার পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বিনামূল্যের বিশেষ ডিজাইনের সেমি পাকা ঘর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। প্রতি ঘরে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৩৮ টাকা হারে এতে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা। বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এরই ধারাবাহিকতায় লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ২৩টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রতিটি ঘরে থাকছে ৩টি কক্ষ ও বারান্দাসহ রান্না ঘর।

আরও জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক সুপারিশকৃত উপকারভোগীদের তালিকা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণের স্থান নির্বাচন ও জমি পরিদর্শনের কাজ শেষে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২০টি ঘরের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও বর্ষা মৌসুমের কারণে বাকি ৪টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।

ঘরপ্রাপ্তরা হলেন- আজিজনগর ইউনিয়নের তেলুনিয়া পাড়ার মমংশে মার্মা, চিউনী কাঠতলি পাড়ার গুনা চরণ ত্রিপুরা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা, ক্যয়াজুপাড়ার চন্দ্রজন ত্রিপুরা, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী নয়াপাড়ার আছিংমে মার্মা, বৈদ্য ভিটা পাড়ার আলুংমে মার্মা, চামং উ মার্মা, ফাইতং ইউনিয়নের রোয়াজাপাড়ার উশৈইমং মার্মা, মংচিন্তা মেম্বার পাড়ার মাছিং মার্মা, হেডম্যান পাড়ার মং নুচিং মার্মা, পৌরসভা এলাকার শীলেরতুয়া পাড়ার মং চাচিং মার্মা ও বড় নুনারবিল পাড়ার থোয়াই চাহ্লা মার্মা।

এছাড়াও গজালিয়া ইউনিয়নের আকিরাম পাড়ার বিশাইরুং ত্রিপুরা, হেডম্যান পাড়ার উস্রাচিং মার্মা, গাইন্ধা পাড়ার এসাইনু মার্মা, চিন্তাবর পাড়ার তংইয়া মুরুং, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা পাড়ার হ্লাঅং প্রু মার্মা, মাএনু মার্মা, উস্রাচিং মার্মা, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বড় পাড়ার উমে মার্মানী, ক্যচিং পাড়ার ইয়াসানু মার্মা, রাজা পাড়ার চ্যংপাত স্রে, কাঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়ার চন্ডি চরণ ত্রিপুরাও ঘর পেলেন।

এ সময় উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের আছিংমে মার্মা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা জানান, অভাবের সংসার । ভালো ঘর নেই । প্রধানমন্ত্রীর কারণে নতুন করে সেমি পাকা ঘর পাচ্ছি। বাচ্চাদের নিয়ে একটু ভালো করে থাকতে পারব।

রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা ও গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানান, গৃহহীন পরিবারগুলো ঘরে পেয়ে খুশি।

আরো যারা হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কথা বিবেচনা করে আরো বরাদ্দ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লামা উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, বিশেষ ডিজাইনের ২০টি ঘরের কাজ ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও বর্ষা মৌসুমের কারণে বাকি ৪টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। কয়েক দিনের মধ্যে ঝিরি ও নদীর পানি কমে গেলে কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন উপজেলা কমিটির সভাপতি রেজা রশীদ বলেন, যারা ঘর পাচ্ছেন তারা একেবারেই হতদরিদ্র। তারা এক সময় বেড়ার ঘরে জরাজীর্ণ জীবনযাপন করতেন। আশা করি আগামী দু এক মাসের মধ্যেই উপকার ভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে উঠতে পারবেন। ঘর পাওয়ার পর অনেকটাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

লামায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী

আপডেট টাইম : ১০:৪৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪ দরিদ্র পরিবার পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বিনামূল্যের বিশেষ ডিজাইনের সেমি পাকা ঘর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। প্রতি ঘরে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৩৮ টাকা হারে এতে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা। বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এরই ধারাবাহিকতায় লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ২৩টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রতিটি ঘরে থাকছে ৩টি কক্ষ ও বারান্দাসহ রান্না ঘর।

আরও জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক সুপারিশকৃত উপকারভোগীদের তালিকা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণের স্থান নির্বাচন ও জমি পরিদর্শনের কাজ শেষে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২০টি ঘরের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও বর্ষা মৌসুমের কারণে বাকি ৪টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।

ঘরপ্রাপ্তরা হলেন- আজিজনগর ইউনিয়নের তেলুনিয়া পাড়ার মমংশে মার্মা, চিউনী কাঠতলি পাড়ার গুনা চরণ ত্রিপুরা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা, ক্যয়াজুপাড়ার চন্দ্রজন ত্রিপুরা, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী নয়াপাড়ার আছিংমে মার্মা, বৈদ্য ভিটা পাড়ার আলুংমে মার্মা, চামং উ মার্মা, ফাইতং ইউনিয়নের রোয়াজাপাড়ার উশৈইমং মার্মা, মংচিন্তা মেম্বার পাড়ার মাছিং মার্মা, হেডম্যান পাড়ার মং নুচিং মার্মা, পৌরসভা এলাকার শীলেরতুয়া পাড়ার মং চাচিং মার্মা ও বড় নুনারবিল পাড়ার থোয়াই চাহ্লা মার্মা।

এছাড়াও গজালিয়া ইউনিয়নের আকিরাম পাড়ার বিশাইরুং ত্রিপুরা, হেডম্যান পাড়ার উস্রাচিং মার্মা, গাইন্ধা পাড়ার এসাইনু মার্মা, চিন্তাবর পাড়ার তংইয়া মুরুং, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা পাড়ার হ্লাঅং প্রু মার্মা, মাএনু মার্মা, উস্রাচিং মার্মা, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বড় পাড়ার উমে মার্মানী, ক্যচিং পাড়ার ইয়াসানু মার্মা, রাজা পাড়ার চ্যংপাত স্রে, কাঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়ার চন্ডি চরণ ত্রিপুরাও ঘর পেলেন।

এ সময় উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের আছিংমে মার্মা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা জানান, অভাবের সংসার । ভালো ঘর নেই । প্রধানমন্ত্রীর কারণে নতুন করে সেমি পাকা ঘর পাচ্ছি। বাচ্চাদের নিয়ে একটু ভালো করে থাকতে পারব।

রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা ও গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানান, গৃহহীন পরিবারগুলো ঘরে পেয়ে খুশি।

আরো যারা হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কথা বিবেচনা করে আরো বরাদ্দ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লামা উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, বিশেষ ডিজাইনের ২০টি ঘরের কাজ ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও বর্ষা মৌসুমের কারণে বাকি ৪টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। কয়েক দিনের মধ্যে ঝিরি ও নদীর পানি কমে গেলে কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন উপজেলা কমিটির সভাপতি রেজা রশীদ বলেন, যারা ঘর পাচ্ছেন তারা একেবারেই হতদরিদ্র। তারা এক সময় বেড়ার ঘরে জরাজীর্ণ জীবনযাপন করতেন। আশা করি আগামী দু এক মাসের মধ্যেই উপকার ভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে উঠতে পারবেন। ঘর পাওয়ার পর অনেকটাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন তারা।