ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতি সচল রেখেছে : প্রধানমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০২০
  • ১৬৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সহায়তা করছে। আমরা শিল্প ও অন্যান্য খাতে প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি কৃষি খাতে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সব খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ গতকাল মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত টাকা আছে, কী আছে না আছে, সেটা চিন্তা করিনি। বরং একটাই চিন্তা করেছিলাম, এই দুঃসময়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাটা যদি গতিশীল রাখতে হয়, তাহলে অবশ্যই মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে হবে। যদি টাকা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনটা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। কাজেই তাদের সাহায্যে নগদ অর্থ এবং বিভিন্ন সেক্টরে আমরা সরাসরি যে টাকা পাঠিয়েছি সেটা কিন্তু কাজে লেগেছে। গ্রামে মানুষের কিছু একটা করে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সর্বাগ্রে আমি কৃষির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বলেছি, কৃষিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং খাদ্য উত্পাদনটা বাড়াতে হবে। মানুষের যেন খাবারের কষ্ট না হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। শুধু বড়লোক বা বিত্তশালী নয়, সব ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাই প্রণোদনাটা পেয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাড়ানোর নির্দেশ

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি গবেষণামূলক কর্মসূচি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল একনেক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি গবেষণা পরিচালনা ও গবেষণা প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা নির্দিষ্ট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই থাকে। এগুলো যেন হাটবাজারে পরিণত না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক গবেষণা হতে হবে। সেসব গবেষণা ল্যানসেট বা এরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রকাশনায় প্রকাশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য যত বরাদ্দ প্রয়োজন দেওয়া হবে।

শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সভায় তিনটি প্রকল্পের সংশোধনী ও একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পের বাড়তি বরাদ্দ এবং নতুন প্রকল্পের বরাদ্দ মিলিয়ে খরচ ধরা হয়েছে ১৬৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সভায় ৩৪৯ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৩৪৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। সভায় চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার পোল্ডার নম্বর ৬২ (পতেঙ্গা), পোল্ডার নম্বর ৬৩/১এ (আনোয়ারা), পোল্ডার নম্বর ৬৩/১ বি (আনোয়ারা ও পটিয়া) পুনর্বাসন প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২৮০ কোটি ৩০ লাখ থেকে খরচ বেড়ে প্রথম সংশোধনীতে হয় ৩২০ কোটি ২৯ লাখ টাকা। গতকাল দ্বিতীয় সংশোধনের পর এই প্রকল্পে ২৫৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব পোল্ডার নির্মাণের কাজ বর্ষার আগেই শেষ করতে হবে।

সভায় ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টিসেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ১০৫৭ কোটি ৮৪ লাখ থেকে ব্যয় বেড়ে ১৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৯৩০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২১ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন হবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক ও কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সব মিলিয়ে ১৯৬৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আমরা সহায়তা করব, এর পাশাপাশি স্থানীয় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের বিষয়টিও দেখতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে তারাও যেন উপকৃত হয়, সে বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে।

এছাড়া একনেক সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘হাতে কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম সম্প্রসারণপূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচন (ফেজ-২)’ শিরোনামে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতি সচল রেখেছে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৯:৩৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সহায়তা করছে। আমরা শিল্প ও অন্যান্য খাতে প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি কৃষি খাতে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সব খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ গতকাল মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত টাকা আছে, কী আছে না আছে, সেটা চিন্তা করিনি। বরং একটাই চিন্তা করেছিলাম, এই দুঃসময়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাটা যদি গতিশীল রাখতে হয়, তাহলে অবশ্যই মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে হবে। যদি টাকা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনটা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। কাজেই তাদের সাহায্যে নগদ অর্থ এবং বিভিন্ন সেক্টরে আমরা সরাসরি যে টাকা পাঠিয়েছি সেটা কিন্তু কাজে লেগেছে। গ্রামে মানুষের কিছু একটা করে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সর্বাগ্রে আমি কৃষির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বলেছি, কৃষিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং খাদ্য উত্পাদনটা বাড়াতে হবে। মানুষের যেন খাবারের কষ্ট না হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। শুধু বড়লোক বা বিত্তশালী নয়, সব ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাই প্রণোদনাটা পেয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাড়ানোর নির্দেশ

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি গবেষণামূলক কর্মসূচি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল একনেক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি গবেষণা পরিচালনা ও গবেষণা প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা নির্দিষ্ট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই থাকে। এগুলো যেন হাটবাজারে পরিণত না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক গবেষণা হতে হবে। সেসব গবেষণা ল্যানসেট বা এরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রকাশনায় প্রকাশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য যত বরাদ্দ প্রয়োজন দেওয়া হবে।

শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সভায় তিনটি প্রকল্পের সংশোধনী ও একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পের বাড়তি বরাদ্দ এবং নতুন প্রকল্পের বরাদ্দ মিলিয়ে খরচ ধরা হয়েছে ১৬৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সভায় ৩৪৯ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৩৪৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। সভায় চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার পোল্ডার নম্বর ৬২ (পতেঙ্গা), পোল্ডার নম্বর ৬৩/১এ (আনোয়ারা), পোল্ডার নম্বর ৬৩/১ বি (আনোয়ারা ও পটিয়া) পুনর্বাসন প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২৮০ কোটি ৩০ লাখ থেকে খরচ বেড়ে প্রথম সংশোধনীতে হয় ৩২০ কোটি ২৯ লাখ টাকা। গতকাল দ্বিতীয় সংশোধনের পর এই প্রকল্পে ২৫৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব পোল্ডার নির্মাণের কাজ বর্ষার আগেই শেষ করতে হবে।

সভায় ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টিসেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ১০৫৭ কোটি ৮৪ লাখ থেকে ব্যয় বেড়ে ১৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৯৩০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২১ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন হবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক ও কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সব মিলিয়ে ১৯৬৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আমরা সহায়তা করব, এর পাশাপাশি স্থানীয় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের বিষয়টিও দেখতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে তারাও যেন উপকৃত হয়, সে বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে।

এছাড়া একনেক সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘হাতে কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম সম্প্রসারণপূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচন (ফেজ-২)’ শিরোনামে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।