হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় বরখাস্তকৃত কর্মচারী রবিউলকে ৬ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি ইউএনও অফিসে মালি পদে কাজ করতেন।
দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল এর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অপর দুই আসামি যুবলীগের আসাদুল ও নৈশপ্রহরী নাজিমউদ্দিন পলাশকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, সম্প্রতি আমরা রবিউল নামের একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি। তার বাড়ি বিরলের বিজরা গ্রামে। সে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বক্তব্য প্রদান করেছে। আর তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু আলামতও উদ্ধার করেছি। ব্যবহৃত অস্ত্র হাতুড়িটি একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করেছি। যে সিসিটিভি ফুটেজকে সংগ্রহ করে সেটির সঙ্গে আমরা মিলিয়ে দেখছি। আজকে তাকে আমরা বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করব এবং তার রিমান্ড চাইব। রিমান্ডে নিয়ে এসে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব। ঘটনার সঙ্গে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যেহেতু বিষয়টি এখনও চলমান রয়েছে, সেহেতু এই পর্যন্তই আমার বক্তব্য।
তিনি বলেন, ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে দিনাজপুর পুলিশ বিনিদ্র রজনী পার করছে। একটি দিনের ২৪ ঘণ্টার পুরোটাই তারা তদন্ত কাজে ব্যয় করছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে রংপুর ডিআইজি বলেন, আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই, আপনারা আমাদের এই তদন্ত কাজটি নির্বিঘ্নে করার সুযোগ দিয়েছেন। কারণ, অনেক সময় দেখা যায় যে, তদন্তে কী হচ্ছে না হচ্ছে সেটা জানার জন্য আপনাদের (সাংবাদিকদের) ব্যকুলতা আমাদের তদন্ত কাজকে বিঘ্নিত করে। কিন্তু আপনারা যে আচরণ করেছেন তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক খুশি।
যেহেতু আসাদুল স্বীকারুক্তি দিয়েছিল র্যাবের কাছে কিন্তু এখন আসাদুলকে স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দি ছাড়াই কেন কারাগারে পাঠানো হলো-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। র্যাবের যিনি কর্মকর্তা ছিলেন, তিনি অত্যন্ত মেধাবী ও চৌকষ হিসেবেই জানি। হয়তো এ ব্যাপারে কেউ মিসগাইড করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয়। ইউএনও ওয়াহিদা খানম ঢাকায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন।
আলোচিত ওই হামলার ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বড় ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে দিনাজপুর জেলা ডিবি তদন্ত করছে। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও র্যাব তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনার পর ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।