ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পার্চিং পদ্ধতি: কমেছে কীটনাশক খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে পাখি ও দেশি মাছ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৬৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির মাধ্যমে পোকা দমনের পদ্ধতির নাম পার্চিং। গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি জমিতে পুঁতে রাখলে বিভিন্ন ধরনের পাখি উড়ে এসে এসব ডাল বা কঞ্চিতে বসে পোকাগুলো ধরে খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষতিকর পোকাগুলো বিস্তার লাভ করতে পারে না। অপরদিকে কীটনাশকের খরচ কমে যায়। ফলে পাখি ও জমিতে থাকা দেশি মাছগুলো রক্ষা পাচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা বগুড়ার আদমদীঘিতে রোপা-আমন ধান ক্ষেত পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, এ বছর আদমদীঘির শতভাগ জমি পার্চিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।

উপজেলার সান্তাহারে কৃষকদের এ পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে সর্বাক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কামরুল আহসান কাঞ্চন। তিনি জানান, প্রতিবিঘা ধানক্ষেতের মাঝে ৮-১০ টি গাছের ডাল বা কঞ্চি পুতে রাখলে পাখিগুলো উড়ে এসে ডালগুলোতে বসে সহজেই পোকাগুলো ধরে খেতে পারে। ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক ১টি মাজরা পোকা ২০০ ডিম পাড়ে। ফলে পাখি যদি একটি মাজরা পোকা খায় তাহলে প্রায় ২০০ পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ১১৫হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবছর এক হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এবার শতভাগ জমি পার্চিং পদ্ধতির আওতায় রয়েছে। এ পদ্ধতির ফলে জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার তিন ভাগের দুই ভাগ কমে গেছে। কীটনাশকের ব্যবহার কম হওয়ায় ইদানীং পাখির সংখ্যাও বেড়েছে। এতে কৃষকের খরচও কমেছে।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব হওয়ায় ক্ষতিকারক কীটনাশকের হাত থেকে জীববৈচিত্রও রক্ষা পাচ্ছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে গোটা উপজেলা পার্চিং পদ্ধতির আওয়তায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পার্চিং পদ্ধতি: কমেছে কীটনাশক খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে পাখি ও দেশি মাছ

আপডেট টাইম : ০২:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির মাধ্যমে পোকা দমনের পদ্ধতির নাম পার্চিং। গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি জমিতে পুঁতে রাখলে বিভিন্ন ধরনের পাখি উড়ে এসে এসব ডাল বা কঞ্চিতে বসে পোকাগুলো ধরে খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষতিকর পোকাগুলো বিস্তার লাভ করতে পারে না। অপরদিকে কীটনাশকের খরচ কমে যায়। ফলে পাখি ও জমিতে থাকা দেশি মাছগুলো রক্ষা পাচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা বগুড়ার আদমদীঘিতে রোপা-আমন ধান ক্ষেত পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, এ বছর আদমদীঘির শতভাগ জমি পার্চিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।

উপজেলার সান্তাহারে কৃষকদের এ পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে সর্বাক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কামরুল আহসান কাঞ্চন। তিনি জানান, প্রতিবিঘা ধানক্ষেতের মাঝে ৮-১০ টি গাছের ডাল বা কঞ্চি পুতে রাখলে পাখিগুলো উড়ে এসে ডালগুলোতে বসে সহজেই পোকাগুলো ধরে খেতে পারে। ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক ১টি মাজরা পোকা ২০০ ডিম পাড়ে। ফলে পাখি যদি একটি মাজরা পোকা খায় তাহলে প্রায় ২০০ পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ১১৫হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবছর এক হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এবার শতভাগ জমি পার্চিং পদ্ধতির আওতায় রয়েছে। এ পদ্ধতির ফলে জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার তিন ভাগের দুই ভাগ কমে গেছে। কীটনাশকের ব্যবহার কম হওয়ায় ইদানীং পাখির সংখ্যাও বেড়েছে। এতে কৃষকের খরচও কমেছে।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব হওয়ায় ক্ষতিকারক কীটনাশকের হাত থেকে জীববৈচিত্রও রক্ষা পাচ্ছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে গোটা উপজেলা পার্চিং পদ্ধতির আওয়তায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।