ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে মাছ উৎপাদন বেড়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৭:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২০৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০১৯ সালে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। এতদিন স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও অতীতের রেকর্ড ভেঙে এখন দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশ।

 চাষের মাছে বরাবরের মতো পঞ্চম স্থানে থাকলেও বেড়েছে পতিত পুকুরে মাছের চাষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের অভয়াশ্রম তৈরি, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মৎস শিকার বন্ধ ও জলাশয়াদিতে মাছ অবমুক্তকরণে এ সফলতা এসেছে।

এছাড়া প্রদর্শনী আর প্রশিক্ষণ, ইনসেনটিভ দেওয়ার ফলে বেকারত্বের সংখ্যা যেমন কমে এসেছে, তেমনি পতিত পুকুর সংখ্যাও এখন শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক প্রতিবেদন ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার–২০২০’ এর মতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ১৮ কোটি টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। এসব মাছের অর্ধেকেরও বেশি অভ্যন্তরীণ উৎসের বা স্বাদু পানির মাছ। আর বাকি মাছ সামুদ্রিক।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। আর প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীন ও ভারত। চাষের মাছে বাংলাদেশের অবস্থানটি পঞ্চম।

চাষের মাছে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম। এর আগে ২০১৭ সালে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠেছিল। আর সামগ্রিকভাবে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বাড়ার হারেও বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে।

বর্তমানে মাছ বাড়ার হার ৯ শতাংশ। আর ১২ শতাংশ নিয়ে প্রথম অবস্থান দখল ইন্দোনেশিয়ার।

প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে মাছ চাষের হার বেড়েছে ৫২৭ শতাংশ আর মাছ খাওয়ার হার বেড়েছে ১২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ মৎস অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয় ছিল। অতীতের রেকর্ড ভেঙে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। এ সফলতা আসার বেশকিছু কারণ রয়েছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী, ইনসেনটিভ দেওয়াই মূল কারণ। এছাড়া মুক্ত জলাশয়, হাওর, বিলে মাছের পোনা অবমুক্ত করাতো আছেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মা ইলিশ রক্ষা, মুক্ত জলাশয়ে মাছ অবমুক্ত করা আর মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করাতে বড় সাফল্য এসেছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প হাতে নেওয়ায় আগামীতে আরও ভালো অবস্থানে আসবে দেশ।

এ বিষয়ে মৎস অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পরিকল্পনা ও জরিপ) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মা ইলিশ রক্ষা করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছি। যার ফল হিসেবে বড় ইলিশ বাজারে আসছে। মাছ প্রজনন মৌসুমে ৬৫ দিন শিকার বন্ধ রাখা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার মাধ্যমে মাছ রক্ষা করা হচ্ছে। জলাশয়ে ডালপালা দিয়ে মাছের আশ্রয় বানানো হচ্ছে। সেখানে মাছ ডিম দিচ্ছে, বর্ষায় তা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, এখন মাছ চাষ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আমাদের গবেষণায় বিলুপ্ত মাছ- টেংরা, পাবদা, গুলশা চাষে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করছি। এতে এক দিকে বেকারত্ব কমছে, অন্যদিকে বেড়েছে মাছ উৎপাদন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে মাছ উৎপাদন বেড়েছে

আপডেট টাইম : ১১:১৭:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০১৯ সালে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। এতদিন স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও অতীতের রেকর্ড ভেঙে এখন দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশ।

 চাষের মাছে বরাবরের মতো পঞ্চম স্থানে থাকলেও বেড়েছে পতিত পুকুরে মাছের চাষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের অভয়াশ্রম তৈরি, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মৎস শিকার বন্ধ ও জলাশয়াদিতে মাছ অবমুক্তকরণে এ সফলতা এসেছে।

এছাড়া প্রদর্শনী আর প্রশিক্ষণ, ইনসেনটিভ দেওয়ার ফলে বেকারত্বের সংখ্যা যেমন কমে এসেছে, তেমনি পতিত পুকুর সংখ্যাও এখন শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক প্রতিবেদন ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার–২০২০’ এর মতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ১৮ কোটি টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। এসব মাছের অর্ধেকেরও বেশি অভ্যন্তরীণ উৎসের বা স্বাদু পানির মাছ। আর বাকি মাছ সামুদ্রিক।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। আর প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীন ও ভারত। চাষের মাছে বাংলাদেশের অবস্থানটি পঞ্চম।

চাষের মাছে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম। এর আগে ২০১৭ সালে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠেছিল। আর সামগ্রিকভাবে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বাড়ার হারেও বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে।

বর্তমানে মাছ বাড়ার হার ৯ শতাংশ। আর ১২ শতাংশ নিয়ে প্রথম অবস্থান দখল ইন্দোনেশিয়ার।

প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে মাছ চাষের হার বেড়েছে ৫২৭ শতাংশ আর মাছ খাওয়ার হার বেড়েছে ১২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ মৎস অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয় ছিল। অতীতের রেকর্ড ভেঙে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। এ সফলতা আসার বেশকিছু কারণ রয়েছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী, ইনসেনটিভ দেওয়াই মূল কারণ। এছাড়া মুক্ত জলাশয়, হাওর, বিলে মাছের পোনা অবমুক্ত করাতো আছেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মা ইলিশ রক্ষা, মুক্ত জলাশয়ে মাছ অবমুক্ত করা আর মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করাতে বড় সাফল্য এসেছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প হাতে নেওয়ায় আগামীতে আরও ভালো অবস্থানে আসবে দেশ।

এ বিষয়ে মৎস অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পরিকল্পনা ও জরিপ) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মা ইলিশ রক্ষা করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছি। যার ফল হিসেবে বড় ইলিশ বাজারে আসছে। মাছ প্রজনন মৌসুমে ৬৫ দিন শিকার বন্ধ রাখা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার মাধ্যমে মাছ রক্ষা করা হচ্ছে। জলাশয়ে ডালপালা দিয়ে মাছের আশ্রয় বানানো হচ্ছে। সেখানে মাছ ডিম দিচ্ছে, বর্ষায় তা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, এখন মাছ চাষ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আমাদের গবেষণায় বিলুপ্ত মাছ- টেংরা, পাবদা, গুলশা চাষে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করছি। এতে এক দিকে বেকারত্ব কমছে, অন্যদিকে বেড়েছে মাছ উৎপাদন।