ঢাকা ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষিতে বদলে যাওয়া বরেন্দ্র অর্থনীতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২০
  • ১৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা সঙ্কটে ঝিমিয়ে পড়া কৃষি প্রধান রাজশাহী অঞ্চলের অর্থনীতি ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে বেড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে গ্রামে আটকে থাকা মানুষ এখন ফিরছে নিজ কর্মে। আর কর্মকান্ড সচল হওয়ায় সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকা। চাঙ্গা হচ্ছে নগর অর্থনীতিও।

করোনার ঝুঁকিকে মাথায় রেখে কৃষি প্রধান বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সচল রয়েছে। ধান, পাট, শাক সবজির আবাদ ভাল হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যা উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চলে খুব একটা হানা দিতে পারেনি। বিশেষ করে আম, আলু, গম, পেয়াজ, পাট, পেয়ারা, বোরো ধানসহ শাক সবজির আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ইসলাম। লকডাউনের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় আমসহ শাক সবজি পরিবহনে বিঘ্ন ঘটে। তবে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ায় কৃষিপণ্য চলাচল করায় উৎপাদকদের লোকসান দিতে হয়নি। চারিদিকে লকডাউন অবস্থার মধ্যেও মাঠে কৃষক ছিল তৎপর। করোনা আতঙ্ক তাদের ঘরে আটকে রাখতে পারেনি।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, অন্য আবাদের সাথে এবার এ অঞ্চলে পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এখন চলছে কাটা আঁশ ছাড়ানোর কাজ। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশী জমির পাট কাটা হয়ে গেছে। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় খাল বিলে পানি থাকায় পাট জাগ দেয়া নিয়ে কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। পাটের গুনগত মানও ভাল শুরুতে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার হতে আঠারোশত টাকার মধ্যে। তাছাড়া পাট খড়িতে লাভ মন্দ নয়। পাট চাষিরা বলছেন গত দু’বছরে পাটের দাম ভাল পেয়েছেন বলে আবাদ ক্রমশ বেড়েছে। তবে এবার সরকারি পাটকল বন্ধ থাকায় প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। তাদের শঙ্কা বেসরকারী পাটকল গুলোর সিন্ডিকেট নিয়ে।
সোনালী অর্থনীতির পাশপাশি রুপালী অর্থনীতিতে (মাছ) বিপ্লব ঘটে গেছে। বেশ ক’বছর ধরে মাছ চাষে রাজশাহী এগিয়েছে। রাজশাহীতে মাছ চাষে প্রায় তিনলাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন দেড়শো ট্রাক তাজা মাছ পাঠানো হচ্ছে। যার মূল্য দু’কোটি টাকার বেশী। দেশের ভোক্তারা ফরমালিনমুক্ত তাজা মাছ সহজেই পাচ্ছেন। শুরুটা রাজশাহী থেকে হলেও এখন তা নাটোরসহ আশেপাশের জেলায় ছড়িয়ে গেছে। মাছে যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে তেমনি বছরে লেনদেন হচ্ছে হাজার কোটি টাকার।
রাজশাহী বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, রাজশাহী বিভাগ মাছ চাষের আগে থেকেই উপযুক্ত স্থান। কয়েক বছরে মাছ চাষে বিপ্লব ঘটে গেছে। নতুন নতুন দিঘী খামার তৈরী হচ্ছে। তাছাড়া মাছ চাষে বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে এখন ৮৪ হাজার মে.টন মাছ উৎপাদন করে চাহিদা মেটাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মেটানোর পর তা পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। লকডাউনের কারনে দেশজুড়ে একটা অচলাবস্থা ভাব থাকায় মাছ বাজারজাত নিয়ে সমস্যা থাকলে এখন সবদিকে সচল হওয়ায় সমস্যা কেটে যাচ্ছে। এখন তারা প্রত্যাশিত দামও পাবেন। এমনটাই জানান পবার মৎস্য ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম। এদিকে কোরবানী ঈদেও পশু বেচাকেনা নিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভাল প্রভাব ফেলেছে। বাড়িতে ও খামারে লালন করা পশুর বিক্রি মন্দ হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কৃষিতে বদলে যাওয়া বরেন্দ্র অর্থনীতি

আপডেট টাইম : ০৯:৩৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা সঙ্কটে ঝিমিয়ে পড়া কৃষি প্রধান রাজশাহী অঞ্চলের অর্থনীতি ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে বেড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে গ্রামে আটকে থাকা মানুষ এখন ফিরছে নিজ কর্মে। আর কর্মকান্ড সচল হওয়ায় সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকা। চাঙ্গা হচ্ছে নগর অর্থনীতিও।

করোনার ঝুঁকিকে মাথায় রেখে কৃষি প্রধান বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সচল রয়েছে। ধান, পাট, শাক সবজির আবাদ ভাল হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যা উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চলে খুব একটা হানা দিতে পারেনি। বিশেষ করে আম, আলু, গম, পেয়াজ, পাট, পেয়ারা, বোরো ধানসহ শাক সবজির আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ইসলাম। লকডাউনের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় আমসহ শাক সবজি পরিবহনে বিঘ্ন ঘটে। তবে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ায় কৃষিপণ্য চলাচল করায় উৎপাদকদের লোকসান দিতে হয়নি। চারিদিকে লকডাউন অবস্থার মধ্যেও মাঠে কৃষক ছিল তৎপর। করোনা আতঙ্ক তাদের ঘরে আটকে রাখতে পারেনি।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, অন্য আবাদের সাথে এবার এ অঞ্চলে পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এখন চলছে কাটা আঁশ ছাড়ানোর কাজ। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশী জমির পাট কাটা হয়ে গেছে। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় খাল বিলে পানি থাকায় পাট জাগ দেয়া নিয়ে কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। পাটের গুনগত মানও ভাল শুরুতে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার হতে আঠারোশত টাকার মধ্যে। তাছাড়া পাট খড়িতে লাভ মন্দ নয়। পাট চাষিরা বলছেন গত দু’বছরে পাটের দাম ভাল পেয়েছেন বলে আবাদ ক্রমশ বেড়েছে। তবে এবার সরকারি পাটকল বন্ধ থাকায় প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। তাদের শঙ্কা বেসরকারী পাটকল গুলোর সিন্ডিকেট নিয়ে।
সোনালী অর্থনীতির পাশপাশি রুপালী অর্থনীতিতে (মাছ) বিপ্লব ঘটে গেছে। বেশ ক’বছর ধরে মাছ চাষে রাজশাহী এগিয়েছে। রাজশাহীতে মাছ চাষে প্রায় তিনলাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন দেড়শো ট্রাক তাজা মাছ পাঠানো হচ্ছে। যার মূল্য দু’কোটি টাকার বেশী। দেশের ভোক্তারা ফরমালিনমুক্ত তাজা মাছ সহজেই পাচ্ছেন। শুরুটা রাজশাহী থেকে হলেও এখন তা নাটোরসহ আশেপাশের জেলায় ছড়িয়ে গেছে। মাছে যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে তেমনি বছরে লেনদেন হচ্ছে হাজার কোটি টাকার।
রাজশাহী বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, রাজশাহী বিভাগ মাছ চাষের আগে থেকেই উপযুক্ত স্থান। কয়েক বছরে মাছ চাষে বিপ্লব ঘটে গেছে। নতুন নতুন দিঘী খামার তৈরী হচ্ছে। তাছাড়া মাছ চাষে বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে এখন ৮৪ হাজার মে.টন মাছ উৎপাদন করে চাহিদা মেটাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মেটানোর পর তা পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। লকডাউনের কারনে দেশজুড়ে একটা অচলাবস্থা ভাব থাকায় মাছ বাজারজাত নিয়ে সমস্যা থাকলে এখন সবদিকে সচল হওয়ায় সমস্যা কেটে যাচ্ছে। এখন তারা প্রত্যাশিত দামও পাবেন। এমনটাই জানান পবার মৎস্য ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম। এদিকে কোরবানী ঈদেও পশু বেচাকেনা নিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভাল প্রভাব ফেলেছে। বাড়িতে ও খামারে লালন করা পশুর বিক্রি মন্দ হয়নি।