ঢাকা ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছর জুড়েই বিষমুক্ত লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছে কিশোরগঞ্জের কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৩:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০
  • ২২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লাউ শীতকালিন সবজি হলেও বছর জুড়েই লাউ চাষ করছেন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা।  বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অনেক কৃষক। সরজমিনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দাওরাইট, আঙিয়াদী ও খামা গ্রামের কয়েকটি লাউ ক্ষেতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় দুলছে সবুজ ও লম্বাকৃতির শত শত লাউ। ডগায় ডগায় লাউ ধরেছে। ডগায় লাউয়ের কুঁড়ি ধরে আছে । কৃষকরা তাদের লাউ ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। কেউবা আবার লাউ কাটছেন বিক্রির জন্য। অল্প খরচে বিষমুক্ত ও নিরাপদ লাউ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় লাউ চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে।খামা গ্রামের কৃষক ইন্নছ আলী বলেন, ১০শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ছয় হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও কয়েক হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।দাওরাইট গ্রামের কৃষক রাকিবুল ইসলাম জানান, কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমেন ট্র্যাপ ও ইয়েলো ট্র্যাপ ব্যবহার করে বিষমুক্ত লাউ চাষ করেছেন। তাছাড়া কেঁচো সার ব্যবহার করায় লাউয়ের ভালো ফলন হয়েছে। দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় আশপাশের লোকজন জমি থেকেই লাউ কিনে নিচ্ছেন। প্রতিটি লাউ ২০ থেকে ৩৫টাকা দরে বিক্রি করছেন। লাউ বিক্রি করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলেও জানান।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাতেই কম-বেশি লাউয়ের চাষ হয়ে থাকে। তবে জাঙ্গালিয়া, চরফরাদী, সুখিয়া, এগারসিন্দুর ও বুরুদিয়া ইউনিয়নে লাউ চাষের আবাদটা একটু বেশি হয়ে থাকে। এবছর প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমেন ট্র্যাপ ও ইয়েলো কালার ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ ও বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন কৃষকরা। তাছাড়া রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার ব্যবহার করে জৈব উপায়ে সুস্থ ও ভালো আকৃতির সুস্বাদু লাউয়ের আবাদ হচ্ছে। এতে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি পাচ্ছেন ক্রেতারা।উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ জানান, অল্প খরচে লাউ চাষ করে বাড়তি আয় করছেন চাষিরা। এতে তারা বেশ লাভবান হচ্ছেন। লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ছাইফুল আলম জানান, রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার ব্যবহার করে জৈব উপায়ে সুস্থ ও ভালো আকৃতির সুস্বাদু লাউয়ের আবাদ হওয়ায় লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। যার দরুন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা লাউ চাষে ঝুঁকছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিরলস প্রচেষ্টা বর্তমান কৃষিকে একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ অবস্থানে নিয়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বছর জুড়েই বিষমুক্ত লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছে কিশোরগঞ্জের কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১০:০৩:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লাউ শীতকালিন সবজি হলেও বছর জুড়েই লাউ চাষ করছেন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা।  বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অনেক কৃষক। সরজমিনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দাওরাইট, আঙিয়াদী ও খামা গ্রামের কয়েকটি লাউ ক্ষেতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় দুলছে সবুজ ও লম্বাকৃতির শত শত লাউ। ডগায় ডগায় লাউ ধরেছে। ডগায় লাউয়ের কুঁড়ি ধরে আছে । কৃষকরা তাদের লাউ ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। কেউবা আবার লাউ কাটছেন বিক্রির জন্য। অল্প খরচে বিষমুক্ত ও নিরাপদ লাউ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় লাউ চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে।খামা গ্রামের কৃষক ইন্নছ আলী বলেন, ১০শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ছয় হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও কয়েক হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।দাওরাইট গ্রামের কৃষক রাকিবুল ইসলাম জানান, কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমেন ট্র্যাপ ও ইয়েলো ট্র্যাপ ব্যবহার করে বিষমুক্ত লাউ চাষ করেছেন। তাছাড়া কেঁচো সার ব্যবহার করায় লাউয়ের ভালো ফলন হয়েছে। দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় আশপাশের লোকজন জমি থেকেই লাউ কিনে নিচ্ছেন। প্রতিটি লাউ ২০ থেকে ৩৫টাকা দরে বিক্রি করছেন। লাউ বিক্রি করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলেও জানান।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাতেই কম-বেশি লাউয়ের চাষ হয়ে থাকে। তবে জাঙ্গালিয়া, চরফরাদী, সুখিয়া, এগারসিন্দুর ও বুরুদিয়া ইউনিয়নে লাউ চাষের আবাদটা একটু বেশি হয়ে থাকে। এবছর প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমেন ট্র্যাপ ও ইয়েলো কালার ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ ও বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন কৃষকরা। তাছাড়া রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার ব্যবহার করে জৈব উপায়ে সুস্থ ও ভালো আকৃতির সুস্বাদু লাউয়ের আবাদ হচ্ছে। এতে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি পাচ্ছেন ক্রেতারা।উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ জানান, অল্প খরচে লাউ চাষ করে বাড়তি আয় করছেন চাষিরা। এতে তারা বেশ লাভবান হচ্ছেন। লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ছাইফুল আলম জানান, রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার ব্যবহার করে জৈব উপায়ে সুস্থ ও ভালো আকৃতির সুস্বাদু লাউয়ের আবাদ হওয়ায় লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। যার দরুন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা লাউ চাষে ঝুঁকছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিরলস প্রচেষ্টা বর্তমান কৃষিকে একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ অবস্থানে নিয়ে যাবে।