হাওর বার্তা ডেস্কঃ খুলনার ডুমুরিয়া মৌসুমি ফসলের অন্যতম স্থান। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির জন্য অন্যতম এ উপজেলা। এবার করোনা মহামারির মাঝেও শসার বাম্পার ফলন হয়েছে এ উপজেলায়। করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছু থমকে গেলেও শসার ভালো দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
জেলার পাঁচ উপজেলায় সবজি ক্ষেত ও মৎস্য ঘেরের পাড়ে বিপুল পরিমাণ শসার চাষ হয়েছে। প্রতিদিন এ জেলা থেকে শতাধিক ট্রাকে শসা যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে। করোনা পরিস্থিতিতে নিজ বাড়ির সামনে বসে নায্যমূল্যে ব্যবসায়ীদের কাছে শসা বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষকরা।
ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের শসা চাষি আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, শসা একটি স্বল্প সময়ের সবজি। বিচি রোপণের ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফল আসে। ফল আসার পরে ৩৫ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত গাছ ফল দেয়। ভালোভাবে পরিচর্যা এবং প্রয়োজনীয় সার দিলে এক একর জমি থেকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৯ মণ পর্যন্ত শসা বিক্রি করা যায়।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হচ্ছে। এ বছর শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এর মধ্যে সব থেকে বেশি শসা উৎপাদন হয় ডুমুরিয়া উপজেলায়। এ উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে করে শসাসহ বিভিন্ন সবজি বিদেশ ও দেশের বড় বড় শহরে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, চলতি বছর হাজার টনের বেশি শসা উৎপাদন হবে খুলনা জেলায়। সরাসরি ব্যবসায়ীদের কাছে শসা বিক্রি করায় কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা গ্রামের মো. ফারুক সরদার জাগো নিউজকে বলেন, এক একর জমিতে শসার চাষ করেছি। গেল ১০ দিন থেকে বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত শসা বিক্রি করি। এবার ফলনও যেমন বেশি হয়েছে। দামও মোটামুটি ভালো পাচ্ছি।
শরাফপুর গ্রামের কৃষক মৃত্যুঞ্জয় জাগো নিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে একটু দেরিতে বিভিন্ন সবজির বীজ বপণ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার শসার ফলন খুব ভালো হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি অথবা ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মণ বিক্রি করছি। এ রকম দাম থাকলে এবার আমাদের মোটামুটি ভালোই লাভ হবে।
মির্জাপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মো. আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর ১০ একর জমিতে শসার চাষ করেছি। ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ১শ মণের উপরে শসা বিক্রি করছি। আমার কৃষি ক্ষেত ও মাছের ঘেরে নিয়মিত ৮ জন শ্রমিক কাজ করেন। সব খরচ দিয়ে এ বছর শসায় ১০ লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে বলে মনে করছি।
খুলনা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খুলনা জেলায় সবজি আবাদের ওপর অতিরিক্ত জোর দেয়া হয়েছে। সরকার সময়মতো বীজ, সার ও ঋণ প্রবাহ সচল রেখেছেন। এর ফলে এ বছর বিভিন্ন সবজি বিশেষ করে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ বছর খুলনার কয়েকটি উপজেলায় ৫০ হাজার টন শসার ফলন হবে। আমরাও কৃষকদের সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতা ও বাজারজাতকরণের পরামর্শ দিয়েছি। যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারে এজন্য সব ধরনের চেষ্টা রয়েছে।