ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৫৪ টাকায় প্রতি ডোজ করোনার ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০
  • ১৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) টিকা উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকা যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স—এ দুটির কোনো একটি সফল হলেই টিকার ডোজ পাবে বাংলাদেশ। বিশ্বের নিম্ন ও নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে টিকার ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি) বাংলাদেশসহ ৯২টি দেশের জন্য সুখবর দিয়েছে। গত শুক্রবার রাতে গ্যাভি এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২১ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য সম্ভাব্য নিরাপদ ও কার্যকর টিকার ১০ কোটি ডোজ উৎপাদন ও বিতরণ ত্বরান্বিত করতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই), গ্যাভি ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস একটি চুক্তি করেছে।

চুক্তির আওতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও নোভাভ্যাক্সের করোনা ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পর ১০ কোটি ডোজ তৈরি করে বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হবে। আর এই সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এ জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডলার তহবিল দেবে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ‘কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট (এএমসি)’ কাঠামোর আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী,  প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম পড়বে সর্বোচ্চ তিন ডলার (প্রায় ২৫৪ টাকা)।

উল্লেখ্য, করোনার টিকা উদ্ভাবনে যেসব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আছে তাদের সঙ্গে আগাম ক্রয় চুক্তি করে সম্ভাব্য টিকা পাওয়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। টিকার কার্যকারিতা প্রমাণ হলে ওই দেশ দুটির শুরুতেই টিকা পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য টিকা উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকা অন্তত চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সবার জন্য ন্যায্যভাবে টিকা পাওয়ার কথা বললেও তা কার্যকরে এত দিন দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা ছিল না। গত শুক্রবার টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ও সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার উদ্যোগের ফলে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছেও টিকা পৌঁছার সুযোগ সৃষ্টি হলো।

গ্যাভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সেথ বার্কেল বলেন, ‘অনেকবার আমরা দেখেছি, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো নতুন চিকিৎসা, রোগ পরীক্ষা ও নতুন টিকা পাওয়ার দৌড়ে পেছনে পড়ে থাকে। করোনার টিকার ক্ষেত্রে আমরা এমনটি চাই না।’

তিনি বলেন, ‘যদি ধনী দেশগুলোই শুধু সুরক্ষিত হয় তাহলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, শিল্প ও সমাজ মহামারিতে বিপর্যস্ত হতে থাকবে। এমনটি যাতে না ঘটে সে জন্য আমাদের এই নতুন সহযোগিতা চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু কয়েকটি ধনী দেশ নয়, সব দেশের জন্য টিকা উৎপাদনের জন্য সামর্থ্য তৈরির উদ্যোগ। আমরা চাই সিরামের অন্যান্য ভ্যাকসিন উৎপাদকরাও এভাবে এগিয়ে আসবে।

গত সপ্তাহে গ্যাভির পরিচালনা বোর্ড এএমসির আওতায় সহযোগিতা দেওয়া হবে এমন ৯২টি দেশের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কার্যকরী প্রমাণ হলে গ্যাভির সহযোগিতার লাভের তালিকায় থাকা ৫৭টি দেশ তা পাবে। আর যদি নোভাভ্যাক্সের টিকা তৈরির উদ্যোগ সফল হয় তাহলে এএমসির আওতায় থাকা ৯২টি (গ্যাভির তালিকায় থাকা ৫৭ দেশসহ) দেশই তা পাবে। বাংলাদেশ গ্যাভির সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য ৫৭টি দেশের তালিকায় আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

২৫৪ টাকায় প্রতি ডোজ করোনার ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ১০:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) টিকা উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকা যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স—এ দুটির কোনো একটি সফল হলেই টিকার ডোজ পাবে বাংলাদেশ। বিশ্বের নিম্ন ও নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে টিকার ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি) বাংলাদেশসহ ৯২টি দেশের জন্য সুখবর দিয়েছে। গত শুক্রবার রাতে গ্যাভি এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২১ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য সম্ভাব্য নিরাপদ ও কার্যকর টিকার ১০ কোটি ডোজ উৎপাদন ও বিতরণ ত্বরান্বিত করতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই), গ্যাভি ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস একটি চুক্তি করেছে।

চুক্তির আওতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও নোভাভ্যাক্সের করোনা ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পর ১০ কোটি ডোজ তৈরি করে বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হবে। আর এই সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এ জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডলার তহবিল দেবে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ‘কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট (এএমসি)’ কাঠামোর আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী,  প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম পড়বে সর্বোচ্চ তিন ডলার (প্রায় ২৫৪ টাকা)।

উল্লেখ্য, করোনার টিকা উদ্ভাবনে যেসব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আছে তাদের সঙ্গে আগাম ক্রয় চুক্তি করে সম্ভাব্য টিকা পাওয়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। টিকার কার্যকারিতা প্রমাণ হলে ওই দেশ দুটির শুরুতেই টিকা পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য টিকা উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকা অন্তত চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সবার জন্য ন্যায্যভাবে টিকা পাওয়ার কথা বললেও তা কার্যকরে এত দিন দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা ছিল না। গত শুক্রবার টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ও সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার উদ্যোগের ফলে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছেও টিকা পৌঁছার সুযোগ সৃষ্টি হলো।

গ্যাভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সেথ বার্কেল বলেন, ‘অনেকবার আমরা দেখেছি, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো নতুন চিকিৎসা, রোগ পরীক্ষা ও নতুন টিকা পাওয়ার দৌড়ে পেছনে পড়ে থাকে। করোনার টিকার ক্ষেত্রে আমরা এমনটি চাই না।’

তিনি বলেন, ‘যদি ধনী দেশগুলোই শুধু সুরক্ষিত হয় তাহলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, শিল্প ও সমাজ মহামারিতে বিপর্যস্ত হতে থাকবে। এমনটি যাতে না ঘটে সে জন্য আমাদের এই নতুন সহযোগিতা চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু কয়েকটি ধনী দেশ নয়, সব দেশের জন্য টিকা উৎপাদনের জন্য সামর্থ্য তৈরির উদ্যোগ। আমরা চাই সিরামের অন্যান্য ভ্যাকসিন উৎপাদকরাও এভাবে এগিয়ে আসবে।

গত সপ্তাহে গ্যাভির পরিচালনা বোর্ড এএমসির আওতায় সহযোগিতা দেওয়া হবে এমন ৯২টি দেশের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কার্যকরী প্রমাণ হলে গ্যাভির সহযোগিতার লাভের তালিকায় থাকা ৫৭টি দেশ তা পাবে। আর যদি নোভাভ্যাক্সের টিকা তৈরির উদ্যোগ সফল হয় তাহলে এএমসির আওতায় থাকা ৯২টি (গ্যাভির তালিকায় থাকা ৫৭ দেশসহ) দেশই তা পাবে। বাংলাদেশ গ্যাভির সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য ৫৭টি দেশের তালিকায় আছে।