ঢাকা ০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্য খাতের উন্নতিই কাম্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অগাস্ট ২০২০
  • ১৮৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সমালোচনা যদি সত্য উদ্ঘাটনের জন্য হয় এবং এর তীর ভেদ করে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার লক্ষ্যমাত্রা, তাহলে সেই তীরের আঘাত যতই বেদনাদায়ক হোক, সেটা সহ্য করা উচিত। আমাদের স্বাস্থ্য খাত কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কারণে যে অবস্থায় পতিত হয়েছে, তা কারও কাম্য ছিল না। কিন্তু এটা ঘটেছে এবং ঝড় বয়ে গেছে সমালোচনার। তবে এই সমালোচনা যদি শুধুই সমালোচনার জন্য হয়, তবে সেটা স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন-অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করবে।

উল্লিখিত অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই। বিশেষ করে সময়মতো সচেতনতা তৈরিসহ প্রয়োজনানুযায়ী লকডাউন তথা বিধিনিষেধ আরোপের মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলোই এক্ষেত্রে বেশি কাজে দিয়েছে। একইভাবে সরকারের কঠোর ও শিথিল লকডাউন নীতির বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য।

বিশেষ করে কঠোর লকডাউনের সময় সরাসরি অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারটিতেও সরকার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে সঠিক ম্যানেজমেন্ট তথা চমৎকার সিলেকশনের মাধ্যমে।

শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের নির্ভয়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে কাজে নিবেদিত করার ব্যাপারটিও সরকার করেছে অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে। এ ব্যাপারে সরকার দ্রুত পাবলিক ও প্রাইভেটসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমে কাজটিকে এগিয়ে নিতে মাঠে নামে। এরই অংশ হিসেবে মধ্য এপ্রিলেই বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাবলিক ও প্রাইভেট চিকিৎসকদের ১০ হাজার পিপিই প্রদানসহ কর্মস্থলে ডাক্তারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সাফল্যের দিকগুলো তুলে ধরে অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগানের কাজটিও করে।

অস্বীকার করার উপায় নেই, বিগত দশ বছরে স্বাস্থ্য খাতের অনেক সাফল্য রয়েছে আমাদের। আগে দেশে হাসপাতাল ছিল হাতেগোনা। সেই অবস্থা থেকে বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় হাসপাতাল করা হয়েছে। ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে।

দেশে এরই মধ্যে গুণগত মানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল ইন্সটিটিউট করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৮ বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল করা হচ্ছে।

বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে নানা ধরনের দুর্নীতি কমবেশি ছিল, আছে। সেগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তবে তা বন্ধ করার একটা সুষ্ঠু প্রক্রিয়া আছে। মূলত স্বাস্থ্য অধিদফতরকে শক্তিশালী করতে হবে। হাসপাতালে কী কী সমস্যা তারা ভালো করেই বোঝেন, যা অন্যরা বুঝবে না।

আমাদের দেশে দেখা যায়, যদি লোক বেশি মারা যায় তাহলে কাফনের কাপড় নিয়েও দুর্নীতি হয়। আর এটা তো চিকিৎসা খাত, কোটি কোটি টাকার খাত এটা। বেসরকারি হাসপাতালে দুর্নীতি হলে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের লোক পাঠিয়ে বিষয়গুলো তদারকি করতে হবে। হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া কোনো সমাধান নয়। এতে বেসরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হতে পারে।

এখন সময় এসেছে যার যার নিজের জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করার, দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য কাজ করার। আসুন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মেনে স্বাস্থ্য খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশটাকে আরও সুন্দর করে তুলি।

সিকদার নজরুল ইসলাম : গণমাধ্যম সমন্বয়ক, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

স্বাস্থ্য খাতের উন্নতিই কাম্য

আপডেট টাইম : ০৯:১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সমালোচনা যদি সত্য উদ্ঘাটনের জন্য হয় এবং এর তীর ভেদ করে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার লক্ষ্যমাত্রা, তাহলে সেই তীরের আঘাত যতই বেদনাদায়ক হোক, সেটা সহ্য করা উচিত। আমাদের স্বাস্থ্য খাত কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কারণে যে অবস্থায় পতিত হয়েছে, তা কারও কাম্য ছিল না। কিন্তু এটা ঘটেছে এবং ঝড় বয়ে গেছে সমালোচনার। তবে এই সমালোচনা যদি শুধুই সমালোচনার জন্য হয়, তবে সেটা স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন-অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করবে।

উল্লিখিত অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই। বিশেষ করে সময়মতো সচেতনতা তৈরিসহ প্রয়োজনানুযায়ী লকডাউন তথা বিধিনিষেধ আরোপের মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলোই এক্ষেত্রে বেশি কাজে দিয়েছে। একইভাবে সরকারের কঠোর ও শিথিল লকডাউন নীতির বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য।

বিশেষ করে কঠোর লকডাউনের সময় সরাসরি অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারটিতেও সরকার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে সঠিক ম্যানেজমেন্ট তথা চমৎকার সিলেকশনের মাধ্যমে।

শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের নির্ভয়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে কাজে নিবেদিত করার ব্যাপারটিও সরকার করেছে অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে। এ ব্যাপারে সরকার দ্রুত পাবলিক ও প্রাইভেটসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমে কাজটিকে এগিয়ে নিতে মাঠে নামে। এরই অংশ হিসেবে মধ্য এপ্রিলেই বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাবলিক ও প্রাইভেট চিকিৎসকদের ১০ হাজার পিপিই প্রদানসহ কর্মস্থলে ডাক্তারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সাফল্যের দিকগুলো তুলে ধরে অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগানের কাজটিও করে।

অস্বীকার করার উপায় নেই, বিগত দশ বছরে স্বাস্থ্য খাতের অনেক সাফল্য রয়েছে আমাদের। আগে দেশে হাসপাতাল ছিল হাতেগোনা। সেই অবস্থা থেকে বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় হাসপাতাল করা হয়েছে। ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে।

দেশে এরই মধ্যে গুণগত মানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল ইন্সটিটিউট করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৮ বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল করা হচ্ছে।

বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে নানা ধরনের দুর্নীতি কমবেশি ছিল, আছে। সেগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তবে তা বন্ধ করার একটা সুষ্ঠু প্রক্রিয়া আছে। মূলত স্বাস্থ্য অধিদফতরকে শক্তিশালী করতে হবে। হাসপাতালে কী কী সমস্যা তারা ভালো করেই বোঝেন, যা অন্যরা বুঝবে না।

আমাদের দেশে দেখা যায়, যদি লোক বেশি মারা যায় তাহলে কাফনের কাপড় নিয়েও দুর্নীতি হয়। আর এটা তো চিকিৎসা খাত, কোটি কোটি টাকার খাত এটা। বেসরকারি হাসপাতালে দুর্নীতি হলে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের লোক পাঠিয়ে বিষয়গুলো তদারকি করতে হবে। হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া কোনো সমাধান নয়। এতে বেসরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হতে পারে।

এখন সময় এসেছে যার যার নিজের জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করার, দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য কাজ করার। আসুন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মেনে স্বাস্থ্য খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশটাকে আরও সুন্দর করে তুলি।

সিকদার নজরুল ইসলাম : গণমাধ্যম সমন্বয়ক, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন